বাবার ইয়াশিকা ক্যামেরা। কল্লোল লাহিড়ী
মা দেখছি খুব, খুউব হাসছে। কেন? জানি না। আমি মায়ের পাশে কিশোর কবি সুকান্তের স্টাইলে। দাদা দেখছি তরুণ অপেরার ‘আমি সুভাষ বলছি’র শান্তিগোপালকে নকল করছে। বাবার মুখেও স্মিত হাসি। ছবিটা দেখতে বসে অবাক লাগছে। বাবা কীভাবে অত তাড়াতাড়ি এসে ঠিক পজিশানে বসে পড়েছিল টুক করে। ক্যামেরার ওপাশে কেউ কি ছিল? যার কথায় আমরা হেসে উঠেছিলাম? নাকি অনেক দিন পরে শীতের রাতে ইয়াশিকাকে ফ্রেম করে নিজের জায়গায় রেখে বাবাকে হুড়মুড় করে আসতে দেখে আমরাই হেসে উঠেছিলাম? বাবা নিজেও? জানি না। পেছনে যে চাদরটা টাঙানো হয়েছিল সেটা কি সেই বছরের পুজোর? বালী বাজারের জনতা স্টোর্স থেকে কেনা? হয়তো তাই। ভাঙা পলেস্তারা খসা স্যাঁতসেঁতে পুরনো দেওয়াল ঢাকা পড়তো চাদরে। কেমন যেন স্টুডিও হয়ে উঠতো ঘরটা। ছবি তোলার কোন উৎসব কোনো কালেই ঠিক ছিল না। একটা ইচ্ছে ছিল। মাঝে মাঝেই ইয়াশিকার মধ্যে ফিল্ম পোরা থাকতো। মন ভালো লাগলে। হঠাৎ অবসর এসে গেলে। কিম্বা বাড়িতে একটু পেঁয়াজকলি ভাজা আর নলেন গুড় দিয়ে গরম রুটি খেলে ফুর্তির কম পড়তো না। হরিণঘাটা দুধের মাসিক খাতায় ধার বাড়লেও, দুধ না আসলেও, একটা ব্ল্যাক এ্যান্ড হোয়াইট রিল চলে আসতো ধর্মতলার স্যাভয় থেকে। ইয়াশিকাও নিজের মনে বলে উঠতো “ক্লিক ক্লিক”। দাদা চিৎকার করে বলতো “ভাই ওই দ্যাখ ক্যামেরা বলছে ঠিক...ঠিক”।
বাবার ইয়াশিকা ক্যামেরা
কল্লোল লাহিড়ী
প্রচ্ছদ-পরিকল্পনা ও অলংকরণঃ মেখলা ভট্টাচার্য
প্রচ্ছদ-রূপায়ণঃ শোভন সরকার
মুদ্রিত মূল্যঃ ৩৩০ টাকা
#সুপ্রকাশ
Comments
Post a Comment