Posts

Showing posts from August, 2023

আহাম্মকের খুদকুড়ো।। দুর্লভ সূত্রধর।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত দুর্লভ সূত্রধরের স্মৃতিগদ্য ' আহাম্মকের খুদকুড়ো ' পড়ে লিখছেন গৌরব বিশ্বাস। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি।  ....................... একজন ব্যক্তি, যে ধরনের আর্থ-সামাজিক পরিবেশে বেড়ে ওঠেন, তাঁর লিখিত স্মৃতিকথনেও স্পষ্টতই তার ছাপ রয়ে যায়। যেমন ধরুন, অভিজাত ধনবান কোনো বিজনেসম্যান যদি স্মৃতিকথন লিখতে বসেন, তাঁর স্মৃতিকথনে উঠে আসবে-তিনি কটা দামী গাড়ি চড়েছেন, ক'বার বিদেশ সফরে গেছেন, সেখানে কী কী এক্সটিক ডিশ চেখে দেখেছেন, কোন কোন বিজনেস ডিল ক্র্যাক করেছেন ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলোই তাঁর স্মৃতিকথনে উঠে আসা স্বাভাবিক। কিন্তু এধরনের স্মৃতিকথন সুখপাঠ্য যদিও বা হয়ে থাকে, এ তো আমাদের মধ্যবিত্ত জীবনের কাহিনী নয়। প্ৰকৃত মধ্যবিত্তের জীবনস্মৃতি লেখা সহজ ব্যাপার নয়। 'মধ্যবিত্ত' এই সামাজিক স্ট্যাটাসটার সংজ্ঞা বারবার বদলেছে। এ যুগে মধ্যবিত্তের স্বরূপ ধরতে পারা মুস্কিল। বরং মধ্যবিত্ত বলতে যে শিক্ষিত , সীমিত ক্রয়ক্ষমতার অধিকারী, জীবনের প্রায় সব ব্যাপারেই মধ্যম পন্থার অবলম্বনকারী, নির্দিষ্ট কিছু সামাজিক অনুশাসনের ধারক- এমন এক শ্রেণীর মানুষদের বোঝা

ধ্রুবচন্দ্রিমা।। সূর্যনাথ ভট্টাচার্য।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত সূর্যনাথ ভট্টাচার্য লিখিত ঐতিহাসিক আখ্যান 'ধ্রুবচন্দ্রিমা' পড়ে লিখেছেন গঙ্গোত্রী গুপ্ত। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি।  . . #পাঠ_অনুভুতি #ধ্রুবচন্দ্রিমা লেখক- সূর্যনাথ ভট্টাচার্য মহারাজ সমুদ্রগুপ্ত তাঁর শাসনকালে রাজ্যে এক অখন্ড শান্তি ও সমৃদ্ধি স্থাপন করতে পেরেছিলেন। কিন্তু তাঁর শাসনের শেষকালে রাজধানী উজ্জয়িনীর নিকটবর্তী জয়স্কন্ধাবারে শকদের সঙ্গে যুদ্ধের নিস্পত্তি দেখে যেতে পারেননি। যদিও যে শর্তে তাঁর নিস্পত্তি সমুদ্রগুপ্তের জ্যেষ্ঠপুত্র রামগুপ্ত করেছিলেন তা দেখলে হয়তো তিনি তৎক্ষণাৎ নিজের মৃত্যু কামনা করতেন। রামগুপ্ত ছিলেন মাত্রাতিরিক্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষী, উচ্ছৃঙ্খল, সুরাসক্ত এবং হঠকারী। শকদের সঙ্গে সন্ধি করেন চরম অপমানকর এক শর্তের বিনিময়ে। এ গল্পের শুরু সেখান থেকেই।  কাহিনীসূত্রে একে একে জুড়ে যায় অকম্পন, মউলি, রানি ধ্রুবাদেবী, মহামাত্য বিশঙ্কদেব, ছোটকুমার চন্দ্রগুপ্ত। সদ্যবিবাহিতা স্ত্রীকে পরদিনই ছেড়ে অকম্পন যখন রওনা হয় উড়ালির পথে তখনও সে জানেনা রাজনীতির কোন জটিলতম জালে সে জড়িয়ে পড়তে চলেছে। তাঁকে রওনা করে দেবার পর মহারানি জানতে পারেন অকম্প

ধর্মায়ুধ।। অভিজিৎ সেন।।

Image
মুষ্টিমেয়র ক্ষমতা রক্ষা ও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধির জন্য আগ্রাসী রাষ্ট্রক্ষমতার সঙ্গে ধর্মপ্রতিষ্ঠান ও প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের সম্পর্ক কাছাকাছি আমাদের দেশে সেই মধ্যযুগ থেকেই। শাসকের ভাষা, শাসকের ধর্ম, শাসকের অনুশাসন সমাজজীবনের সদরে–অন্দরে নিয়ামক শক্তি হয়ে দাঁড়াতে চেয়েছে মধ্যযুগ থেকে বার বার। ক্ষমতাকেন্দ্রের পরিবর্তনের ফলে সমাজের ধর্ম–অর্থ–কাম–মোক্ষ, সবই মুচড়ে বদলে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছো। কিছুটা সামাজিক অনুশীলনের দ্বারা আর বেশিরভাগটাই রাষ্ট্রীয় প্রভুদের বলপ্রয়োগের মাধ্যমে। এই মূলসূত্রেই অভিজিৎ সেনের উপন্যাস ‘ধর্মায়ুধ’। বাবা: রাজা গণেশ। ছেলে: জালালুদ্দিন মুহাম্মদ শাহ। এরকম অদ্ভুত ঘটনাই পাওয়া যায় ইতিহাসে। রাজা গণেশ ও তাঁর পুত্রদের মিলিত শাসনকাল পঞ্চদশ শতকের দ্বিতীয় দশক। উপন্যাস আবর্তিত হয়েছে রাজা গণেশের সিংহাসনে আরোহণ ও তদপরবর্তী ঘটনা পরম্পরায় তার ছেলে যদুর ধর্মান্তরকে কেন্দ্র করে। উপন্যাসের ভূগোল গৌড়কে কেন্দ্র করে ভাতুড়িয়া পর্যন্ত আবর্তিত। উপন্যাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র রাজা গণেশের মন্ত্রী—নাড়িয়াল। যিনি বৌদ্ধ-অবশেষ। সেই বৌদ্ধ ধর্ম, কয়েকশো বছরেই হিন্দুদের আক্রমণে যারা বিলুপ্তপ্রায় হয়েছে, আবার পর

শেষ মৃত পাখি।। শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত শাক্যজিৎ ভট্টাচার্যের উপন্যাস পড়ে লিখেছেন শাহলুল তানজিম। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি।। . . ‘পৃথিবীর সবথেকে বুদ্ধিমান এবং নিখুঁত খু*নি হিসেবে তুমি কাউকেই দাগিয়ে দিতে পারবে না। সহজ কারণ। যে খু*নটা নিখুঁত হবে, তার খু*নি হিসেবে তুমি কাউকে শনাক্ত করতে পারবে না। ভাববে আত্মহ*ত্যা, বা অ্যাক্সিডেন্ট। আর শনাক্ত করলে, সেটা নিখুঁত হবে না।’ এ কয়েকটা লাইনই যথেষ্ট একজন থ্রিলারপ্রেমীকে গল্পে আটকে ফেলতে। মানে পারফেক্ট মা*র্ডার নিয়ে এভাবে তো ভেবে দেখিনি। তাই এ লাইনগুলো আপনাকে আটকাতে পেরেছে কিনা জানিনা, আমাকে আটকে ফেলেছিলো। আর এই লাইনগুলো আছে শাক্যজিৎ ভট্টাচার্যের রহসোপন্যাস ‘শেষ মৃত পাখি’র একদম ১ম পৃষ্ঠায়। বেশ অনেকদিন বাদে বইয়ের রিভিউ লিখছি। বেশ অনেকদিন বাদে হবার জন্য অনেক কারণ আছে আর তাছাড়া ইদানিং রিভিউ লিখতেও আলসেমী লাগে। যাই হোক ধান ভানতে শিবের গীত গেয়ে কাজ নেই, স্রেফ এক লাইনে বলি। এত আলসেমী, ব্যস্ততা সত্ত্বেও ‘শেষ মৃত পাখি’র রিভিউ লিখতে বসার একটাই কারণ, সেটা হচ্ছে একজন পাঠক হিসেবে আরেকজন পাঠকের কাছে ভালো বইয়ের (অনন্ত আমার কাছে ভালো) খবর পৌঁছে দেয়ার দায়। গ

শেষ মৃত পাখি।। শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত শাক্যজিৎ ভট্টাচার্যের উপন্যাস পড়ে লিখেছেন স্বপ্না রায়। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি।। . . . 'শেষ মৃত পাখি' হাতে নিয়ে কাজকর্ম সব চুলোয় গেল। কেউ মাথার দিব্যি দেয় নি। দেওয়ার কথাও নয়। দুটো কথা না বলে পারলাম না যে। এমন মনোযোগ সহকারে হালফিলের কোন লেখা পড়েছি বলতে পারব না। প্রায় দু'দশকের ছোটো এই লেখকের লেখা আগেও পড়েছি 'আরেক রকম' পত্রিকায় কিংবা অন্যত্র। সর্বত্রই মেধা-মননের উপস্থিতি।  লেখার ধার অনুভব করেছি। ভালো লাগে নবীন লেখকদের এই সগৌরবে পদচারণা।  'শেষ মৃত পাখি' আমায় ভাবিয়েছে। দার্জিলিং এর প্রেক্ষাভূমিতে নির্মিত এ উপন্যাসের কারুকৃৎ মনকে ছুঁয়ে যায়। বৃষ্টিভেজা দার্জিলিংয়ের ভিন্ন সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে থাকা রহস্যের জট খুলতে খুলতে শরীর  ভেঙে পড়লেও মনের ছিলাকে টান টান করে রাখা তনয়া নামের সাংবাদিককে কুর্নিশ জানাবার সুযোগ করে দিলেন যে তরুণ লেখক শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য তাঁকে নতুন করে চিনলাম। তিনি যে একটি রহস্যোপন্যাস লিখবেন বলেই লিখলেন এমনটি আমার মনে হল না। অমিতাভ মিত্রের হত্যাকে কেন্দ্র  করে অরুণ চৌধুরীর সাক্ষাৎকার নিয়ে যে স্টোরি তৈ

অভিমানভূম।। শুভদীপ চক্রবর্ত্তী।।

Image
মানভূমের প্রকৃতি কোনো যুক্তিই খাড়া করতে দেয় না আবেগের উপরে। তাই পণ্ডিতরা যতই বলুন না কেন, মাঠের ধান ঘরে উঠলে কৃষি-নির্ভর পরিবারগুলোতে সমৃদ্ধির পরব 'টুসু' পালিত হয়, তবু এটা আসলে একদমই প্রান্তিক মেয়েদেরই উৎসব। তাই যেন তাদের টুসু গানে ধরা পড়ে যায় তাদের ভীষণ নিজস্ব সুখ-দুঃখের সাতকাহন। অনেকের মতে, টুসু আসলে মা লক্ষ্মীর লৌকিক রূপ, অর্থাৎ দেবী হলেও তিনি যেন একান্তই ঘরের মেয়ে, যার উপর রাগ করা যায়, চোখের কোল ঝাপসা করে অভিমান করা যায় মন ভরে। ঘরের মেয়ে, তাই তাঁর আরাধনায় আড়ম্বর নেই, বরং আন্তরিকতা আছে। আছে মেয়েদের গায়ে হলুদের সময় সখীদের খুনসুটিতে এ-ওর গায়ে ঢলে পড়ার মতো সোহাগ। সৃষ্টিধরবাবুর কথাতেই উঠে আসে অমোঘ উচ্চারণ একটা, ‘টুসুর কোনো জাত নেই, কোনো ধর্ম নেই, কোনো বর্ণ নেই, কোনো মন্ত্র নেই। সবাই টুসু মায়ের পুজো করতে পারে। টুসু গান গাইতে পারে। আর এই গানেই হলো টুসুর আসল মন্ত্র।' শুনতে শুনতে আশ্চর্য লাগে, একদিকে যখন এত হানাহানি কাটাকাটি কিংবা হেঁশেলে উঁকি দিয়ে দেখা কী ফুটছে উনুনে, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রান্তিক এই উৎসবগুলো ঠিক কতটা আধুনিক হয়েই শুরু করেছে সেই কোন প্রাচী

অনন্যবর্তী।। দুর্লভ সূত্রধর।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত দুর্লভ সূত্রধরের উপন্যাস 'অনন্যবর্তী' পড়ে লিখেছেন শ্রাবণী পাল। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি।। . . 📑🍁বইয়ের নাম - অনন্যবর্তী🍁📑  ✍🏻লেখক - দুর্লভ সূত্রধর  🖨️প্রকাশক - সুপ্রকাশ  📔প্রচ্ছদ - সৌজন্য চক্রবর্তী  📖পৃষ্ঠা সংখ্যা - ২৩৬ 💰মূল্য - ৩২০₹ 📑🍁সদ্য পড়ে শেষ করলাম সাহিত্যিক দুর্লভ সূত্রধরের লেখা ‘অনন্যবর্তী’ উপন্যাস টি। লেখকের লেখার সাথে প্রথম পরিচয় Experience বেশ ভালো, লেখক সহজ সরল ভাষায় খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন এই উপন্যাসকে। এই উপন্যাস সাধারণ মানুষের জীবনের গল্প বলে। বলে জীবনের ভাঙচুর পেরিয়ে এক স্বপ্নভুবনের কথা।  💫📃এবার আসি উপন্যাসের কথায় -  📑🍁প্রথমেই বলি এটি একটি সামাজিক উপন্যাস। এই উপন্যাসের শুরুতেই দেখা যায় কুন্তী নদীর ধারে অবস্থিত একটি গ্ৰাম। এবং গ্ৰামের বেশ কিছু ছেলেমেয়েদের স্কুল জীবন থেকে শুরু করে তাদের কিশোর থেকে যৌবনে পদার্পণ...... তাদের মধ্যে গড়ে ওঠা গভীর বন্ধুত্ব, ও প্রেম। তবে এ কাহিনী কেবল কিশোর প্রেমকাহিনী নয়। কয়েকটি পরিবার ও সেই মানুষদের ভিতর বাইরে চিরাচরিত ভাঙন, বিকার ও বিচ্ছিন্নতার মধ্যে দিয়ে

অভিমানভূম।। শুভদীপ চক্রবর্ত্তী।।

Image
দক্ষিণের পর্বতের থেকে না এলেও, মানভূমের পাহাড়ি ঝোড়াগুলোরও পাগলামি কম কী! আর সেসবের সামনে দাঁড়ালেই মনে হয়, নিয়ম কখনও শিকল হয়ে গেলেই, সেটা যতটা না ভয়ের, তার থেকেও বেশি একঘেয়ে। যেমন, উৎসবের এই এত এত আঙ্গিক, তার পিছনে চলমান ইতিহাস, সেসব সম্পূর্ণ ভুলে গিয়ে শুধুই কেমন একটা দেখনদারি নিয়ে থেকে গেল শহুরে উৎসবগুলো আমাদের। আনন্দগুলো আটকে গেল গ্লাসে আর চিৎকারে অকারণ। ভীষণ চাকচিক্য নিয়েও থেকে গেল কেমন মধ্যবিত্ত হয়েই। অথচ ভিন্নমতকে শোনার বা মেনে নেওয়ার জন্য যে ধৈর্য বা মনটা, সেটা যেন এসবের ভিড়ে হাত ছাড়িয়ে হারিয়ে গেল কোথায়। অসুরেরও যে পুজো হতে পারে, সেটা সামনে আনার চেষ্টা করতেই তাই একরাশ অনভিপ্রেত অশান্তি। এসব থেকে তাই আবার পালিয়ে যেতে ইচ্ছা করে গভীর রাতের হ্যাজাক এবং গ্যাস বাতির সাদা আলোর মধ্যে ধুলো ওড়া মাঠে। শুধুই ধর্মকথা বা বীরগাথা নয়, বরং সেই সব উদযাপনের কাছে, যারা তার বুকের ভিতর মিশিয়ে নিতে শিখে যায় জীবনের ছোট বা বড় আনন্দ দুঃখ আশা এবং নিরাশার আলো-ছায়াগুলোকেও। পার হয়ে যায় অক্টোবরও। পুরুলিয়াতে এসে নামি আবার ‘একদিন কার্তিকের নীল কুয়াশায় / যখন ঝরিছে ধান বাংলার ক্ষেতে-ক্ষ