Posts

Showing posts from April, 2024

মগ্নপাষাণ।। সূর্যনাথ ভট্টাচার্য।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত সূর্যনাথ ভট্টাচার্যের উপন্যাস 'মগ্নপাষাণ' পড়ে লিখেছেন সৌভিক সামন্ত। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি। .............................................................................................................. #বুকরিভিউ বইয়ের নাম - মগ্নপাষাণ লেখক - সূর্যনাথ ভট্টাচার্য প্রকাশক - সুপ্রকাশ  মুদ্রিত মূল্য - ৩৯০ টাকা ( বইটি কলেজ স্ট্রিটে সুপ্রকাশের নিজস্ব বিপণী থেকে কিনেছিলাম, ২৫ পার্সেন্ট ছাড়ে) সম্প্রতি পড়ে শেষ করলাম, লেখক সূর্যনাথ ভট্টাচার্যের ইতিহাস আশ্রিত কাহিনী মগ্নপাষাণ ।  একশব্দে অসাধারণ। মগ্নপাষাণে মগ্ন ছিলাম এই তিনদিন। খ্রিস্ট জন্মের ২৭০ বছর আগে মগধের সিংহাসন অলংকৃত করেছিলেন মৌর্য বংশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট অশোক। পিতা বিন্দুসারের অগ্রমহিষীর পুত্র সুসীমকে অতিক্রম করে কিভাবে অশোক মগধ সম্রাট হয়েছিলেন, সেই ঘটনা আজ বিস্মৃতির অতলে। পাঠ্য পুস্তক গুলোতেও এর বিস্তৃত বর্ণনা সেরকম পাওয়া যায় না। বিন্দুসারের মৃত্যু এবং সম্রাট অশোকের মগধ এর সিংহাসনে অভিষেকের মাঝে চার বছর ব্যবধান ছিল। কি কি ঘটেছিলো এই সময়ে? কিভাবে কুমার সুসীম শিকার হয়েছিলেন

মরুনির্ঝর।। সূর্যনাথ ভট্টাচার্য।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত সূর্যনাথ ভট্টাচার্যের উপন্যাস 'মরুনির্ঝর' পড়ে লিখেছেন সায়ন কুমার দে। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি। ...................................................................... সূর্যনাথ ভট্টাচার্যের 'মরুনির্ঝর' ঐতিহাসিক উপন্যাস, তাঁর ঐতিহাসিক উপন্যাসত্রয়ের শেষতম বই। বইটি প্রকাশ পেয়েছে সুপ্রকাশ প্রকাশনী থেকে, অসামান্য এক ধ্রুপদী প্রচ্ছদ নির্মাণ করেছেন শিল্পী সৌজন্য চক্রবর্তী।  এই উপন্যাসটি বিশাখদত্ত রচিত  সংস্কৃত নাটক মুদ্রারাক্ষস আধারিত। আধারিত বা অনুপ্রাণিত হলেও এই উপন্যাস মুদ্রারাক্ষসের অনুবাদ বা নবনির্মাণের প্রয়াস নয়। নাটকের সময়কাল, কয়েকটি ঐতিহাসিক-অনৈতিহাসিক চরিত্র ও কিছু ঘটনাকে ব্যবহার করে 'মরুনির্ঝর' উপন্যাসটির কাহিনী নির্মাণ করেছেন লেখক। আধারে তাই অনুসরণ থাকলেও, আখ্যান ও চিত্রবিন্যাস লেখকের নিজের। মূলত মহারাজ নন্দ ও তাঁর মহামর্ত্য কাত্যায়ন বা রাক্ষসের অনাবিষ্কৃত পারিবারিক পরিসরে বর্তমান কাহিনীর সঞ্চরণ। কিন্তু আখ্যানের পরম্পরায় মূল নাটক মুদ্রারাক্ষসের কাহিনির বিরোধ সৃষ্টি হয় নি, দুটি আখ্যানধারা যেন পারস্পরিক অবলম্ব বি

মল্লভূমের দশাবতার তাস।। রামামৃত সিংহ মহাপাত্র।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত রামামৃত সিংহ মহাপাত্রের 'মল্লভূমের দশাবতার তাস' পড়ে মতামত জানিয়েছেন মধুশ্রী মাহিন্দার। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি। .......................................................................... পাঠপ্রতিক্রিয়া বইয়ের নাম : মল্লভূমের দশাবতার তাস  লেখক : রামামৃত সিংহ মহাপাত্র  প্রকাশক : সুপ্রকাশ মুদ্রিত মূল্য : ২৮০/- আঞ্চলিক চর্চা বিষয়ক প্রকৃত তথ্যভিত্তিক বই পড়তে পছন্দ করি। দু-চার পাতা নাড়াচাড়া করার পর মনে হল বইটি একবার অন্তত পড়া দরকার। মল্লভূমের এই দশাবতার তাস সম্বন্ধে বিশেষ কিছুই জানা ছিল না। শেষভাগে আকর্ষণীয় সব তাসের ছবি আর আমায় রুখতে পারল না। "আগাডোম বাগাডোম  ঘোড়াডোম সাজে  ঢাক ঢোল ঘোঙর বাজে  বাজতে বাজতে চলল ঢুলি..." —সেইসময় মল্লরাজাদের যুদ্ধযাত্রার বর্ণনা মেলে প্রচলিত এই গ্রাম্য ছড়ায়। ইতিহাস বই পড়ে জানা যায় ৬৯৪ খ্রিস্টাব্দে (১০১ বঙ্গাব্দ) মল্লরাজাদের একাধিপত্য স্থাপিত হয়েছিল বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে। রাজা রঘুনাথ মল্ল প্রতিষ্ঠা করেন এই রাজবংশ। তখন থেকে নতুন সাল গণনার পদ্ধতি বা মল্লাব্দর সূচনা হয়। তাঁদের পদবী অনুযায়ী বিষ্ণুপুরের

মেস-হোস্টেল ঘটিত এ বাঙালি জীবন।। সম্পাদনা : সুজন বন্দ্যোপাধ্যায়।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত সুজন বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পাদিত 'মেস-হোস্টেল ঘটিত এ বাঙালি জীবন' পড়ে মতামত জানিয়েছেন বুবুন সাহা। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি। --------------------------------------------------------------------------------------------------------------- মেস-হোস্টেল ঘটিত এ বাঙালি জীবন  সম্পাদনা - সুজন বন্দ্যোপাধ্যায় সুপ্রকাশ  মুদ্রিত মূল্য : ৬২০/-  বাঙালির মেস-হোস্টেল সংক্রান্ত encyclopedia বলা চলে।  মেস-জীবনের দরকার আর উৎস। কখনো লেখাপড়া, কখনো চাকরি বা কাজের সন্ধানে, কখনো নীরব-নিভৃতে থাকার ইচ্ছে, আবার কখনো সংসারহীন মানুষের কাছে মেস-কাবাড়িরাই নিজের সংসার হিসেবে ভেবে তাদের সাথেই আজীবন মেসে থেকে যাওয়া।  মেস বা হোস্টেল কত ধরণের। কোন ক্লাস, কোন সাবজেক্ট, কোন চাকরি, কোথায় চাকরি, ধর্ম, জাত-পাত শুধু নয়, আবার জেলা বা নগরভিত্তিক মেস ও আছে।  মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য প্রথম হোস্টেলের কড়া শাসন, শান্তিনিকেতনের হোস্টেল তথা আচার-নিয়ম। শুধু কলকাতা বা শহরতলীর নয়, বিভিন্ন জেলা আর বাংলাদেশের কিছু মেস-হোস্টেল বাড়িরও বিস্তারে চর্চা রয়েছে।   আবাসিকদের কথা যদি বিচার করলে দেখা

অনন্যবর্তী।। দুর্লভ সূত্রধর।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত দুর্লভ সূত্রধরের উপন্যাস 'অনন্যবর্তী' পড়ে নিজেদের ইউটিউব চ্যানেলে আলোচনা করেছেন Finding Book. রইলো সে আলোচনা।   https://www.youtube.com/watch?v=Ria_LKxoYBI 

অবিকল্প মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।। শতঞ্জীব রাহা।। সুপ্রকাশ।।

Image
'বর্ষার মাঝামাঝি।'—এই অসম্ভব কর্তিত-বাক্যটি দিয়ে পদ্মানদীর মাঝি-র সূচনা হয় একেবারে পদ্মানদীর মাঝ-গাঙে।—প্রথম অনুচ্ছেদেই সারা রাত জেগে থাকে পদ্মা। আর পদ্মার বুকে জেগে থাকে মাছমারাদের দল। তাদের মধ্যে উপন্যাসের প্রধান চরিত্র কুবেরের দেখাও পাওয়া যায়। পদ্মার জলপ্রবাহের মতো তাদের জীবনের নিরন্তর প্রবাহ সময়-পরিবর্তনের সঙ্গী হয়ে একটি-দুটি অনুচ্ছেদেই যেন সমগ্রতা পায়: দিন কেটে যায়। জীবন অতিবাহিত হয়। ঋতুচক্রে সময় পাক খায়। পদ্মার তীর ভাঙে, তীরের মাটি ধ্বসে। পদ্মা নিজের বুকের মাঝখানে চর গড়ে তোলে। আবার অর্ধ- শতাব্দীকাল পরে সেই চর পদ্মার নিজের জলেই বিলীন হয়ে যায়। পদ্মা তাই ভাঙা- গড়ার কারিগর। পুতুলনাচের ইতিকথার তুলনায় এই উপন্যাসের কাহিনী বলয়ে ঋতুকাল ঈষৎ সংকীর্ণ হলেও সময়ের গতিশীলতাকে বেশ বোঝা যায়—কখনও ঋতুর উল্লেখে, কখনও মানুষের যাপনের অনুষঙ্গে, কখনও উৎসব-পার্বণের সমাগমে বা অন্য-কোনো উপায়ে তা জ্ঞাপিত হয়। আশ্বিনের ঝড় বা কালবৈশাখী জেলেপাড়ার মানুষগুলিকে ধ্বংস করতে চায়, তাদের ঘর ভাঙে—গাছ চাপা পড়ে আমিনুদ্দির বউ ছেলে মারা যায়, কুবেরের মেয়ে গোপি আহত হয়। বর্ষার দিনে ঘরে জল ঢোকে, শীতের কনকনানি মানুষগুলোর

হাফ প্যাডেলের কাল।। অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামীর বই 'হাফ প্যাডেলের কাল' পড়ে লিখেছেন প্রদীপ রায়। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি।  ------------------------------------------------------------- হাফ প্যাডেলের কাল আমি সাইকেল চালাতে শিখেছিলাম ক্লাস টেনে উঠে। তখন সাইকেলে উঠে বসলে আমার পা মাটি ছোঁয়। কাজেই আমার কোনও হাফ প্যাডেলের কাল ছিল না। কিন্তু ওই বয়সটা তো আমারও ছিল একসময়ে। ছিমছাম এক গোছানো মফস্‌সল শহরে শৈশব-কৈশোর কাটানো মানুষ আমি, প্রথম থেকে শেষ অবধি একই স্কুলে পড়েছি, স্কুল-স্কুলান্তর করতে হয়নি, আমার অভিজ্ঞতায় গ্ৰামজীবনও প্রায় অনুপস্থিত। তাই আমার সমবয়সী ও সমসাময়িক এক গ্ৰাম্য বালকের বৈচিত্র্যপূর্ণ 'হাফ প্যাডেলের কাল' পড়ে উঠলাম এক গভীর মুগ্ধতায়। একটি বালকের ক্লাস ফাইভ থেকে ক্লাস টেন অবধি পাঁচ-ছ বছরের জীবনকালের একটানা কালানুক্রমিক স্মৃতি -- এবং সেটাও উত্তম পুরুষে লেখা নয়, প্রথম পুরুষে লেখা -- আমার চোখে ঝলমল করে উঠল তার সামগ্র্যের বিভা নিয়ে। স্মৃতিকথা নয়, যেন একটি ট্র্যাজিক উপন্যাস শেষ করে উঠলাম এইমাত্র, দশ মিনিট আগে।  মেহগনি কাঠের মতো গায়ের রঙ, বংশানুক্র