Posts

অনন্যবর্তী।। দুর্লভ সূত্রধর।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত দুর্লভ সূত্রধরের উপন্যাস 'অনন্যবর্তী' পড়ে নিজেদের ইউটিউব চ্যানেলে আলোচনা করেছেন Finding Book. রইলো সে আলোচনা।   https://www.youtube.com/watch?v=Ria_LKxoYBI 

অবিকল্প মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।। শতঞ্জীব রাহা।। সুপ্রকাশ।।

Image
'বর্ষার মাঝামাঝি।'—এই অসম্ভব কর্তিত-বাক্যটি দিয়ে পদ্মানদীর মাঝি-র সূচনা হয় একেবারে পদ্মানদীর মাঝ-গাঙে।—প্রথম অনুচ্ছেদেই সারা রাত জেগে থাকে পদ্মা। আর পদ্মার বুকে জেগে থাকে মাছমারাদের দল। তাদের মধ্যে উপন্যাসের প্রধান চরিত্র কুবেরের দেখাও পাওয়া যায়। পদ্মার জলপ্রবাহের মতো তাদের জীবনের নিরন্তর প্রবাহ সময়-পরিবর্তনের সঙ্গী হয়ে একটি-দুটি অনুচ্ছেদেই যেন সমগ্রতা পায়: দিন কেটে যায়। জীবন অতিবাহিত হয়। ঋতুচক্রে সময় পাক খায়। পদ্মার তীর ভাঙে, তীরের মাটি ধ্বসে। পদ্মা নিজের বুকের মাঝখানে চর গড়ে তোলে। আবার অর্ধ- শতাব্দীকাল পরে সেই চর পদ্মার নিজের জলেই বিলীন হয়ে যায়। পদ্মা তাই ভাঙা- গড়ার কারিগর। পুতুলনাচের ইতিকথার তুলনায় এই উপন্যাসের কাহিনী বলয়ে ঋতুকাল ঈষৎ সংকীর্ণ হলেও সময়ের গতিশীলতাকে বেশ বোঝা যায়—কখনও ঋতুর উল্লেখে, কখনও মানুষের যাপনের অনুষঙ্গে, কখনও উৎসব-পার্বণের সমাগমে বা অন্য-কোনো উপায়ে তা জ্ঞাপিত হয়। আশ্বিনের ঝড় বা কালবৈশাখী জেলেপাড়ার মানুষগুলিকে ধ্বংস করতে চায়, তাদের ঘর ভাঙে—গাছ চাপা পড়ে আমিনুদ্দির বউ ছেলে মারা যায়, কুবেরের মেয়ে গোপি আহত হয়। বর্ষার দিনে ঘরে জল ঢোকে, শীতের কনকনানি মানুষগুলোর

হাফ প্যাডেলের কাল।। অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামীর বই 'হাফ প্যাডেলের কাল' পড়ে লিখেছেন প্রদীপ রায়। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি।  ------------------------------------------------------------- হাফ প্যাডেলের কাল আমি সাইকেল চালাতে শিখেছিলাম ক্লাস টেনে উঠে। তখন সাইকেলে উঠে বসলে আমার পা মাটি ছোঁয়। কাজেই আমার কোনও হাফ প্যাডেলের কাল ছিল না। কিন্তু ওই বয়সটা তো আমারও ছিল একসময়ে। ছিমছাম এক গোছানো মফস্‌সল শহরে শৈশব-কৈশোর কাটানো মানুষ আমি, প্রথম থেকে শেষ অবধি একই স্কুলে পড়েছি, স্কুল-স্কুলান্তর করতে হয়নি, আমার অভিজ্ঞতায় গ্ৰামজীবনও প্রায় অনুপস্থিত। তাই আমার সমবয়সী ও সমসাময়িক এক গ্ৰাম্য বালকের বৈচিত্র্যপূর্ণ 'হাফ প্যাডেলের কাল' পড়ে উঠলাম এক গভীর মুগ্ধতায়। একটি বালকের ক্লাস ফাইভ থেকে ক্লাস টেন অবধি পাঁচ-ছ বছরের জীবনকালের একটানা কালানুক্রমিক স্মৃতি -- এবং সেটাও উত্তম পুরুষে লেখা নয়, প্রথম পুরুষে লেখা -- আমার চোখে ঝলমল করে উঠল তার সামগ্র্যের বিভা নিয়ে। স্মৃতিকথা নয়, যেন একটি ট্র্যাজিক উপন্যাস শেষ করে উঠলাম এইমাত্র, দশ মিনিট আগে।  মেহগনি কাঠের মতো গায়ের রঙ, বংশানুক্র

হাফ প্যাডেলের কাল।। অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামীর স্মৃতিকথন 'হাফ প্যাডেলের কাল' পড়ে লিখেছেন তাপস ব্যানার্জী। আমরা নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি।  .............................................. পড়ার অভ্যেস আর তেমন নেই।খুব ভালো না লাগলে কোনো বই শেষ করতে পারি না।সেদিন হাতে এলো একটা বই ‘হাফ প্যাডেলের কাল’, লেখক অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী।বইটা পড়তে পড়তে ছোটবেলায় পৌঁছে গিয়েছিলাম।রুদ্ধশ্বাসে পড়েছি। শেষ করার পর মনে হল এই বইটার প্রসঙ্গে দু’একটি কথা বললে, আরো কিছু মানুষ হয়ত আমার তৃপ্তির ভাগীদার হতে পারবেন। এই বয়সে পুরনো জীবনের স্মৃতি ঘুরে ঘুরে আসে।আমরা মফস্বলে মানুষ, অথচ ওই গ্রামের হাফ প্যাডেলে সাইকেল চালানো ছেলেটির সঙ্গে আমার ছোটবেলার অনেক  কিছুই একেবারে মিলে গেল।বইএর নামটি সঠিক।ওইরকম হাফ প্যাডেলে সাইকেল চালাতে চালাতেই আমরাও বড় হয়েছি।আর ওই ছেলেটির মতই জীবনের ভালোমন্দ বুঝেছি, ধাক্কা খেয়েছি, আনন্দও  পেয়েছি।বইএর ঘটনাগুলো যেন পাতায় সাজানো আমাদের সকলের ছোটবেলা থেকে বড়বেলার দিকে এগিয়ে চলা জীবনের কথা।এমনকি চরিত্রগুলো এত স্পষ্ট ফুটেছে, যে আমি সবাইকে দেখতে এবং চিনতে পারছিলাম। দাদার পরিণতি যেমন কষ্ট

ছায়ার পাখি।। অভিজিৎ সেন।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত অভিজিৎ সেনের উপন্যাস 'ছায়ার পাখি' পড়ে লিখেছেন মণিপদ্ম দত্ত। আমরা নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি। বইটির প্রচ্ছদশিল্পী : সৌজন্য চক্রবর্তী। ................................................................................................... অভিজিৎ সেনের মহাকাব্য ছায়ার পাখি .......... ছায়ার পাখি মূলত একটি পাখিরই আখ্যান। এক অসহায়া সহজ স্বপ্নবিলাসী  মেয়েকে ঘিরে গড়ে ওঠা এক সময়ের উপাখ্যান। পুরনো স্বপ্নের মৃত্যু ও ক্রমবিবর্তন ঐ পাখিটিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয় এক জানা গল্প যার পরতে পরতে লুকিয়ে থাকে অনাবিষ্কৃত মনুষ্যত্বের খণ্ড খণ্ড চিত্র। ঐ গর্ভবতী পাখিটিকে অনন্ত যত্নে প্রতিপালনের জন্যেই যেন সমস্ত চরিত্রের সৃষ্টি। সে যে জন্ম দেবে নতুন প্রাণের। তার প্রতারক প্রেমিক এক আধুনিক ক্ষমতা বিস্তারি রাজনৈতিক  লুম্পেন । তাই  সকলের পক্ষ ছায়ায় রাজেশ্বরীর আশ্রয়। খানিকটা  সে কারণেই যেন লেখক এ কাহিনীর নামকরণ করেন ছায়ার পাখি। সে তো জন্ম দেবে আর একটি পক্ষী শাবকের। এবং তাই তাকেও ছায়া হয়ে উঠতে হবে, ছায়া দিতে হবে।  অসংখ্য চরিত্রের মধ্যে আমাদের জানা একটি চরিত্র পাই। গোপাল মজুমদার। অনেকটা কেন

বাংলায় স্মৃতির পেশা ও পেশাজীবীরা ১।। সম্পাদনা : সুজন বন্দ্যোপাধ্যায়।। সুপ্রকাশ।।

Image
রবীন্দ্রনাথের ‘ভুল স্বর্গ’ গল্পের সেই নেহাৎ বেকার লোকটির কথা মনে আছে? তার কোনো কাজ ছিল না—কাজ যে করবে তার সময়ই ছিল না মোটে। কেবল শখ ছিল নানারকমের—মাটির ওপর ছোটো ছোটো ঝিনুক সাজিয়ে সে এঁকে তুলতো ছবি। বাড়ির লোক ও পরিজন-প্রতিবেশের কাছে সে ছিল মূর্তিমান উৎপাত। সমস্ত জীবনটা তার অকাজে গেল। মৃত্যুর পর স্বর্গীয় দূতেরা মার্কা ভুল করে তাকে রেখে এল কেজো লোকের স্বর্গে। সেখানে সকলেই কাজ করে, সেখানে সবই আছে নেই শুধু অবকাশ। এ বেচারা কোথাও ফাঁক পায় না, খাপ খায় না। একদিন স্বর্গের উৎসতলায় ঘড়া-কাঁখে জল নিতে আসা মেয়েটির সঙ্গে তার দেখা হয়ে যায়। ভারি ব্যস্ত । মেয়েটির ঘড়াটি চেয়ে নিয়ে তার গায়ে সে চিত্র করে দেয়। সেই আলিম্পনে কত রঙের পাক কত রেখার ঘের। রাতে মেয়েটি বিছানা ছেড়ে দীপের আলোয় বার বার ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে চিত্রটা দেখতে লাগল—তার বয়সে সে এই প্রথম এমন কোনো কাজ দেখল যার কোনো মানে নেই। এর পরে সেই বেকার লোকটি মেয়েটিকে রঙিন সুতো বুনে বুনে বানিয়ে দিল বেণী বাঁধবার দড়ি। এখন উৎসতলায় এলে মেয়েটির ব্যস্ত পা-দুটি কোন অভাবিতপূর্ব ছন্দে শ্লথ হয়ে আসে, আয়না হাতে বেণী বাঁধতে তার হয়ে যায় দেরি। কেজো স্বর্গে সমস্ত কাজে, ব্যস্ততার

বীরেশ্বর সামন্তর হত্যা রহস্য।। শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য।। সুপ্রকাশ।।

Image
দুটো আলাদা কারণে বীরেশ্বর সামন্ত খুন হতে পারে। হয় ভীষ্ম বাগাল সম্পর্কিত প্রবাদ সত্যি হয়েছিল, আর নয়ত রোহিণী বাগাল সম্পর্কিত লোককথা সত্যি হয়েছিল। কিন্তু দুটো একসঙ্গে ঘটতে পারে না কিছুতেই, কারণ একজন সত্যি হলে অপরজন মিথ্যে হতে বাধ্য। তা সত্ত্বেও সবাই বিশ্বাস করেছিল দুটোই ঘটেছে, কারণ সবাই জানত, যেনতেন প্রকারেণ বীরেশ্বরকে মরতেই হবে। সামন্ত না থামলে বাগালি থামবে না।   রহস্য নয়, নয় সমাধানও, অপরাধ কেন ঘটেছিল আর সেটা অপরাধীর সত্তাকে কীভাবে আচ্ছন্ন করল, সেই প্রশ্নের তদন্ত করাই আমাদের সময়কার ডিটেকটিভের একমাত্র কাজ। বীরেশ্বর সামন্তর হত্যা তাই গুরূত্বপূর্ণ নয়। গুরূত্বপূর্ণ হলাম আমরা, আমাদের অস্বস্তিকর বিবেক। বীরেশ্বর সামন্তর হত্যা রহস্য শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য প্রচ্ছদ : সৌজন্য চক্রবর্তী সুপ্রকাশ আসছে.. এই বৈশাখেই।