Posts

Showing posts from October, 2022

কল্লোল লাহিড়ীর উপন্যাস 'নাইনটিন নাইনটি আ লাভ স্টোরি' পড়ে লিখছেন অভিষেক দত্ত

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত কল্লোল লাহিড়ীর উপন্যাস ' নাইনটিন নাইনটি আ লাভ স্টোরি ' পড়ে লিখছেন অভিষেক দত্ত। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি।  ...................... 🍁 বই - নাইনটিন নাইনটি আ লাভ স্টোরি 🍁 লেখক - কল্লোল লাহিড়ী 🍁 প্রকাশনী - সুপ্রকাশ 🍁 দাম - ২৮০ টাকা "আমাদের দেশে কালপুরুষ হয়ে থাকল সেই বীর.... যাকে একবার দেখলে ঘরছাড়া হতে হয়..... যাকে ভালোবাসলে খোলা আকাশের নীচে মরতে হয়।" সদ্য পড়ে শেষ করলাম সুলেখক কল্লোল লাহিড়ীর লেখা উপন্যাস ‘নাইনটিন নাইনটি আ লাভ স্টোরি’। লেখক এই উপন্যাসে ভালোবাসা দেখিয়েছেন এবং তা সম্পূর্ণ অন্য আঙ্গিকে। একটা রেশ থেকে যাওয়ার মতন উপন্যাস পড়লাম। এ উপন্যাস কিংশুকের। এ উপন্যাস মন্টুর। স্কুলে পাঠরত কিংশুকের পছন্দ দীপালিকে। দীপালি তার সেই কবেকার বন্ধু। কিন্তু দীপালি কি তাকে পছন্দ করে ? ভাদুড়ী স্কুলে তার জায়গা দখল করে থাকে। সে কি পারবে নিজের জায়গা ছিনিয়ে নিতে ? পচা কিংশুকের বন্ধু। কিন্তু সে কথায় কথায় গালাগাল দেয়। অন্যরকম কথা বলে। কিন্তু সে কাকলিকে ভালোবাসে। সে কি পাবে কাকলিকে ? এই উপন্যাসে আছে একটা সিনেমা হল। স্কুল পালিয়ে কিংশুক পচ

নাইনটিন নাইনটি আ লাভ স্টোরি। কল্লোল লাহিড়ী

Image
ভালোবাসার সংজ্ঞা কী কখনও মাধ্যমিকের পরীক্ষায় লিখতে হয়নি। পৃথিবীর কোনো স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাতেও নয়। অথচ এমন একটা শব্দ পাল্টিয়ে দিয়ে যায় জীবনের পথ। বেঁচে থাকার মানে। সেই ভালোবাসার ডানায় ভর করেছিল কয়েকজন। আর একটা সময়। ঝিরঝিরে নীল সাদা বরফ বৃষ্টিতে ধর্মতলার মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন একা নিঃসঙ্গ লেনিন। সাক্ষী থাকছিলেন সব কিছুর। স্কুলের লাস্ট বেঞ্চ হাতছানি দিচ্ছিল ফিরে যাওয়ার। একটা ধূসর সিনেমা হলে বাজছিল থার্ড বেল। দুটো হলুদ রঙের টিকিট জানলা দিয়ে উঁকি দিচ্ছিল। একটা ভাঙাচোরা নদীঘাট ফিসফিস করে বলছিল কবেকার হারিয়ে যাওয়া দুই কিশোরের গল্প। লাশকাটা ঘরে ময়নাতদন্তে পাওয়া গিয়েছিল একটা বহু পুরনো লাল রঙের ডায়েরি। না তাতে কোনো প্রেমপত্র ছিল না। ছিল একটা কবিতা। যাকে কেউ কবিতা বলতে চায়নি। তবু এখনও প্রজেক্টার অন হলে। ফিল্মের স্ট্রিপের মধ্যে দিয়ে আলো সেকেন্ডে চব্বিশ বার সাদা পর্দা অন্ধকার করলে, একটাই মাত্র লেখা ফুটে ওঠে। নাইনটিন নাইনটি আ লাভ স্টোরি। কেউ কেউ সেটা দেখতে পায়। আবার কেউ পায় না।  রাতের আকাশে তখন হয়তো উড়ে বেড়ায় ভুতুম পেঁচার দল। পাঁচ তারা হোটেলের সুইমিং পুলে ভাসে মন্টুর লাশ। হুলো মধ্যরাতে ট্র

পূর্ববঙ্গের এক মৈথিল-গৃহবধূর আত্মকথা। অনুপমা ঝা

Image
অনুপমা ঝা (১৯৩৫-২০১৬) জন্মেছিলেন ওপার বাংলায়। বিয়ে হয়েছিল পূর্ববঙ্গেরই এক মৈথিল পরিবারে। জীবনসায়াহ্নে এসে খানিকটা নিঃসঙ্গতা কাটানোর জন্যই পুরোনো দিনের কথা লিখেছিলেন। সেই এলোমেলা স্মৃতিকথনে দেশভাগের ভাগ্য-বিপর্যয়ের শিকার এক গৃহবধূর আশা-আকাঙক্ষা-বেদনার মধ্যে ধরা রয়েছে সেই সময়, মৈথিল সমাজের নানা লোকাচার এবং সেইসঙ্গে লিপিবদ্ধ হয়েছে ইতিহাসের এক অশ্রুতপর্ব। পূর্ববঙ্গের এক মৈথিল-গৃহবধূর আত্মকথা অনুপমা ঝা সম্পাদনা ও সংকলনঃ উৎপল ঝা প্রচ্ছদ ও অলংকরণঃ সুব্রত মাজী মুদ্রিত মূল্যঃ ১৭০ টাকা #সুপ্রকাশ

জাফির অ্যাডভেঞ্চার। আহমেদ খান হীরক

Image
সমুদ্রের তলায় রয়েছে ঝিনুকদের বাড়ি। মুক্তোর লোভে প্রায়শই সেখানে হানা দেয় একদল মানুষ। এরকমই এক অতর্কিত আক্রমণ থেকে ঝিনুকদলকে কীভাবে বাঁচালো এক সাহসী অল্পবয়স্ক ঝিনুক জাফি — 'জাফির অ্যাডভেঞ্চার' তারই রূপকথা। জাফির অ্যাডভেঞ্চার আহমেদ খান হীরক প্রচ্ছদ ও অলংকরণঃ মেখলা ভট্টাচার্য মুদ্রিত মূল্যঃ ১৮০ টাকা #সুপ্রকাশ

মিশু মিলনের উপন্যাস 'নাগরী' পড়ে লিখছেন ঝিলিক মুখার্জি গোস্বামী

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত মিশু মিলনের উপন্যাস ' নাগরী ' পড়ে লিখছেন ঝিলিক মুখার্জি গোস্বামী। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি।  ................. পাঠপ্রতিক্রিয়া  বই: 'নাগরী' লেখক: মিশু মিলন  প্রকাশক: সুপ্রকাশ  বাইন্ডিং: হার্ড বাইন্ড উইথ জ্যাকেট  পৃষ্ঠা সংখ্যা: ২২৫ মূল্য : ৩৫০ পৃষ্ঠার মান এবং বাইন্ড : প্রসংশনীয়  আগেই বলছি পাঠপ্রতিক্রিয়া দেওয়ার মত ক্ষমতা আমার মত নগন্য মানুষের নেই, তাও চেষ্টা করছি। ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন 🙏 যদি অন্যরকম বই পড়তে ভালোবাসেন তাহলে পড়ে দেখতেই পারেন বইটি।  এত সুন্দর বর্ণনা, সুন্দর শব্দচয়ণ আপনাকে আকৃষ্ট করবেই। শুধু একটি বানান চোখে লেগেছে, পাড়ে শব্দটা বেশির ভাগ জায়গায় পারে হয়ে গেছে। এটুকু বাদ দিয়েও বলব, অসাধারণ শব্দচয়ণ আপনাকে দিয়ে যাবে একরাশ মুগ্ধতা। এবার একটু বলি বইটির বিষয় বস্তুর ব্যাপারে। চম্পকনগরীতে বহুকাল যাবৎ বর্ষণ হচ্ছে না। প্রজাদের পেটে অন্ন নেই, জল নেই। জীবন তাদের দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। মহারাজ লোমপাদ কার্যতই মুষড়ে পড়েছেন। রাজপুরোহিতের কথা মত যাগযজ্ঞ করেও বরুন দেবকে কিছুতেই তুষ্ট করতে পারছেন না। ঠিক এমন সময় বলদেব নামক একজন মু

সময় ভ্রমণ (দার্জিলিংঃ পাহাড়-সমতলের গল্পগাছা)। সৌমিত্র ঘোষ

Image
পাহাড়ের কাঁধে, মাথায়, নদীর পাড় দিয়ে, কখনও পাহাড় কেটে বা দুই পাহাড়ের মধ্যের খাঁজে ছোটো-বড়ো রাস্তা চলে গেছে নানা দিকে। কিছু রাস্তা পুরোনো। পুরোনো মানে সত্যিকারের পুরোনো, সায়েবরা এ অঞ্চলে ঢোকার আগেও সে-সব পথে স্থানীয়দের যাতায়াত ছিল। সমতল থেকে সিকিম ঢোকার পথ, নেপাল আর দার্জিলিং এলাকা হয়ে তিস্তা অবধি যাওয়ার পথ। জোসেফ ডালটন হুকারের হিমালয়ান জার্নালে সে সব পথের বর্ণনা আছে। কুচবিহার আর বক্সাদুয়ার হয়ে ভুটান, সেখান থেকে তিব্বত গিয়েছিলেন জর্জ বোগালে, হেস্টিংস সাহেবের দূত হয়ে। ওই পথে গিয়েছিলেন স্যামুয়েল টার্নার এবং চার্লস ল্যাম্বের বন্ধু ম্যানিংও। কিছু পরে উদ্ভিদতত্ত্ববিদ গ্রিফিথ। কোম্পানি শাসনের গোড়ার দিকের কথা, তখনও দার্জিলিং স্বাধীন সিকিম দেশের অংশ, কালিম্পঙ ভুটানের। দার্জিলিং-এর নিচের সমতল এলাকা, যেটা এখন দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি মহকুমা, আর লাগোয়া বাংলাদেশের রংপুর, তার অনেকটাই দখলে ছিল নেপাল থেকে আসা গোর্খা সেনাদের। পাহাড় কেন, সমতলেও পথ বলতে সে অর্থে কিছু ছিল না। কলকাতা থেকে রংপুর হয়ে পাহাড়ে উঠতে ছ-সাত দিন থেকে পনেরো-কুড়ি দিন (১৮৩৮-১৮৩৯-এর এক হিসেব অনুযায়ী কলকাতা থেক

মিহির সেনগুপ্তর ‘সিদ্ধিগঞ্জের মোকাম’ পড়ে লিখেছেন শুভদীপ চক্রবর্তী

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত মিহির সেনগুপ্তর ‘সিদ্ধিগঞ্জের মোকাম’-এর পাঠ-প্রতিক্রিয়া লিখেছেন শুভদীপ চক্রবর্তী। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি।  ————————————————— সুর যেখানে ঘরে ফেরে... --------------------------------- ভিনরাজ্যে ভাড়া বাড়ির পাশেই কোভিড হসপিটাল। ভাইরাস বায়ুবাহিত। আচমকা নিদান তাই, ছাদে ওঠাও যাবে না! খোলা জানালায় রাত-বিরেতে টর্চ। “জি বন্ধ রাখিও!” কিন্তু এভাবে বন্ধ হয়ে কতদিন? পালাতে ইচ্ছা করে যখন খুব, তখনই হাতে এল ‘সিদ্ধিগঞ্জের মোকাম’। কলকাতা থেকে উপহার। আর শুরু হল অমলিন একটা ভেসে চলা। আমার তো ঠাকুরদার দেশ ছিল নোয়াখালি। ঠাকুমার ছিল কুমিল্লা। গান্ধিজীর মিছিলে হাঁটা ঠাকুরদা বদলে ফেলল দেশ তারপর। নবদ্বীপের কাছে ভান্ডারটিকুরি। চাকরি নিয়ে বাটা সাহেবের কোম্পানিতে তারপর। অথচ দেশ বদল হয় কি সত্যিই? নতুন করে চিনে নিতে ইচ্ছা হয় না ফেলে আসা খাল, বিল, সবুজ? অসম্ভব এক জার্নির কথা বলে যায় আমাদের ‘সিদ্ধিগঞ্জের মোকাম’। খুঁজে চলা শিকড়ের টানে ফিরে যেতে যেতে কথক ভুলিয়ে দেন ভাষার দ্বন্দ্ব। বরিশালি ভাষায় আটকে গিয়ে তাই বাবার কাছে ফিরে যাই। অনেকদিন পর। সেই কোন ছোটবেলা পেরিয়ে আসবার পর আ

শাক্যজিৎ ভট্টাচার্যের উপন্যাস 'শেষ মৃত পাখি' পড়ে লিখেছেন সায়ন সরকার

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত শাক্যজিৎ ভট্টাচার্যের উপন্যাস ' শেষ মৃত পাখি ' পড়ে লিখেছেন সায়ন সরকার। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি।  ................... শেষ মৃত পাখি সুপ্রকাশ মুদ্রিত মূল্য ₹৫২০ শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য পঁয়তাল্লিশ বছর আগে দার্জিলিঙের এক সম্ভাবনাময় কবি, অমিতাভ মিত্র খুন হয়েছিলেন। অভিযোগের তীর ছিল তাঁরই ঘনিষ্ঠ বন্ধু রহস্য-ঔপন্যাসিক অরুণ চৌধুরীর দিকে। কিন্তু নানা পরস্পর বিরোধী প্রমাণে সে অভিযোগ দাঁড়ায়নি। তনয়া একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক। অমীমাংসিত খুনের কাহিনী নিয়ে ধারাবাহিক লিখছেন পত্রিকায়। অমিতাভ মিত্রের হত্যা-রহস্য নিয়ে লেখার জন্য দার্জিলিঙে এলেন তনয়া। তারপর? তনয়া কি খুঁজে পেলেন এই হত্যারহস্যের সমাধান? জাপানের হনকাকু ঘরানার থ্রিলার নিয়ে আলোচনা করতে করতে এই উপন্যাসের একটি চরিত্র আরেক চরিত্রকে কথাচ্ছলে বলেন ".... সাহিত্য না থাকলে শুধু শুকনো মগজের খেলা কতক্ষণ ভালো লাগে মানুষের??" আর ঠিক এই জায়গাতেই"শেষ পাখি মৃত" অন্য সমস্ত থ্রিলার থেকে সম্পূর্ণরূপে আলাদা। ব্যোমকেশের পর বাংলায় সাহিত্যমুখী থ্রিলারের বড্ড অভাব,

শাক্যজিৎ ভট্টাচার্যের উপন্যাস 'শেষ মৃত পাখি' পড়ে লিখেছেন লেখক সুকান্তি দত্ত

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত শাক্যজিৎ ভট্টাচার্যের উপন্যাস ' শেষ মৃত পাখি ' পড়ে লিখেছেন লেখক সুকান্তি দত্ত। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি।  .............................................. পড়েছি তিন সপ্তাহ আগে। কী লিখব ভেবে পাচ্ছিলাম না। শরদিন্দু ও সত্যজিৎ, এই দুজনকে মাথায় রেখেও জানাচ্ছি, বাংলা সাহিত্যের এখনও পর্যন্ত আমার পড়া শ্রেষ্ঠ ক্রাইম থ্রিলার। উপন্যাস বা আখ্যান হিসেবেও প্রথম সারির। শাক্যজিৎ আমার পরে লিখতে আসা ভ্রাতৃপ্রতিম লেখক। ওর নানা লেখা আমার প্রিয়। এ লেখায় আমি খুবই গর্বিত। যা লিখেছি, ভেবেচিন্তে লিখেছি। কোনো তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া নয়। গভীর আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলছি, আজ এই আখ্যান নিয়ে যা বললাম বা লিখলাম, সারা বাংলার সাহিত্যপ্রেমী মানুষ আজ বা কাল তা বলবেই।

চক্ষুষ্মতী গান্ধারী। মিহির সেনগুপ্ত

Image
আমার এখন পঞ্চদশ বৎসর বয়স। এতদিনে আমার বিবাহ হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু বিয়ে দিলে তো আমায় পতিগৃহে অচিরে পাঠাতে হবে। সেই কন্যাবিচ্ছেদ তিনি এবং মাতা কীভাবে সহ্য করবেন? সে কারণেই, পিতা আমার বিয়ের ব্যাপারে বিলম্ব করছিলেন। ক্ষুদ্র গান্ধার রাজ্যের রাজা হলেও তিনি রাজা। সুতরাং তেজে, বীর্যে যতই অকিঞ্চিৎকর হোন না কেন, তাঁর বিদুষী, বুদ্ধিমতী কন্যার বিবাহ কোনো প্রখ্যাত কুলসম্পন্ন রাজকুলে হোক, এমন আকাঙ্ক্ষা গান্ধারাধিপতির ছিল। উপযুক্ত শিক্ষার ব্যবস্থা করে বাল্য থেকে আমাকে তিনি সমস্ত বিষয়ে পারদর্শী করে তোলার প্রযত্ন করেছিলেন। ঠিক এরকম একটা সময়ে হস্তিনাপুরের অন্ধ রাজপুত্রের পাত্রীরূপে ভীষ্ম ভাটদের মাধ্যমে আমাকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব পিতাকে জানালেন। পিতা ক্ষুব্ধ চিত্তে যথোপযুক্ত সম্মান সহকারে বলেছিলেন, “কিন্তু আর্য, পাত্র যে অন্ধ !” ভীষ্ম বলেছিলেন, “রাজাদের দেখার জন্য কর্ণের প্রয়োজন হয় না। রাজা কর্ণেন পশ্যতি। মহারাজ সুবল জানবেন আমি হস্তিনাপুর থেকে গান্ধারীকে নিয়ে যেতেই এসেছি। অতএব পাত্রের অন্ধত্বের কারণে তাকে প্রত্যাখ্যান করার স্পর্ধা না দেখালেই ভালো করবেন। কুলের বিষয়টা অবশ্য ভাববেন, এটা কুরুকুল।

অনন্যবর্তী। দুর্লভ সূত্রধর

Image
সে-রাত্রে আর ঘুম আসছিল না আমার। আমার পনেরো-ষোলো বছরের জীবনে বাবা কোনোদিন আমাকে একসঙ্গে এতকথা বলেননি। আমি তো কখনোই বলিনি। সেদিন রাত্রে এক পরিপূর্ণ স্বপ্নের ঘোরের মধ্যে আমি মগ্ন-বিস্ময়ে ভ্রমণ করছিলাম। উড়োজাহাজের স্বপ্ন নয়। কিন্তু এই স্বপ্নেও টুকু ছিল। টুকু! একটা পাহাড়ী জায়গায় প্রায় নির্জন বনভূমির কোল ঘেঁসে শালের খুঁটির ওপরে বাংলো প্যাটার্নের লাল টালি ছাওয়া বাড়ি। কাঠের সিঁড়ি লনে নেমে গেছে, শেষ ধাপটি আধো ঢাকা লম্বা লম্বা ঘাসে। লনের বাঁদিকে একটি ঝর্ণার স্রোত উত্তর দিকের কাঠের বেড়ার তল ঢুকে দক্ষিণদিকের বেড়ার তলা দিয়ে চলে গেছে হালকা কুয়াশার হিমে ঢাকা বনভূমির ভেতরে। সদ্য ভোরের হিমসিক্ত বাতাস বনভূমির বৃক্ষমূল ছুঁয়ে, ঝর্নার স্রোত ছুঁয়ে, বাংলোর বেড়া ছুঁয়ে দুটি ছোটো মাপের নিটোল পায়ের কাছে ঘাসে লুটোপুটি খাচ্ছে। লম্বা ঘাসের মধ্যস্থতায় এক-একবার বাতাস ছুঁয়ে দিচ্ছে সেই পায়ের মধ্যমায় রক্ষিত রূপালি চুট্‌কিদুটিকে। পা দুটিকে ঘিরে রেখেছে হাল্‌কা ঘাস রঙের একটি সরু পাড়, পাড়ের উপর থেকে শাড়ির সোনালি স্ট্রাইপগুলো দ্রুতগতিতে ঊর্ধ্বে ছুটে গেছে। সামনের যে স্ট্রাইপগুলি দৃশ্যমান তার অধিকাংশই

' নাইনটিন নাইনটি আ লাভ স্টোরি ' পড়ে লিখেছেন জয়িতা দে সরকার

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত কল্লোল লাহিড়ীর ' নাইনটিন নাইনটি আ লাভ স্টোরি ' পড়ে লিখেছেন জয়িতা দে সরকার। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি।  ..................................... নাইনটিন নাইনটি আ লাভ স্টোরি।  কল্লোল লাহিড়ী।  সুপ্রকাশ প্রকাশনা  প্রথম প্রকাশ জুন,২০২২. গত সপ্তাহেই শেষ করেছি কল্লোল লাহিড়ীর  উপন্যাস নাইনটিন নাইনটি আ লাভ স্টোরি।  গল্প বলার শুরুতেই একটা ধাক্কা। উৎসর্গ-এর পাতায় উজ্জ্বল অক্ষরে লেখা "পৃথিবীর সব স্কুলের লাস্ট বেঞ্চকে..." লাস্ট বেঞ্চ মানেই তো একদল খারাপ ছেলেমেয়ে। প্রশ্ন জাগে তাহলে কি পুরো গল্পটাই খারাপ হয়ে যাওয়া ছেলেমেয়েদের নিয়ে? দেখাই যাক কি লেখা আছে এই ভেবে তাড়াতাড়ি পাতা উল্টে পড়তে শুরু করি।  গল্পের শুরু কবি মন্টু সরকারের কবিতা এবং তার মৃত্যুকে ঘিরে। কে এই মন্টু? ওই যে যারা একটা গোটা পৃথিবীর বুকে একেবারে একা। যারা ভাবে "জ্বলে পুড়ে মরার চেয়ে ভালোবাসায় মরা অনেক ভালো। এই পৃথিবী মরে যাক ভালোবাসায়।" মন্টু আসলে ক্লাস টেনের লাস্ট বেঞ্চে বসে থাকা সেই ছেলেটা।  গল্পের মূল চরিত্র মন্টু হলেও গল্প ঘুরে বেড়ায় কিংশুকের চা

' শেষ মৃত পাখি ' পড়ে লিখেছেন সৌরভ বকসী

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত শাক্যজিৎ ভট্টাচার্যর উপন্যাস ' শেষ মৃত পাখি ' পড়ে লিখেছেন সৌরভ বকসী। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি।   .................... Yesterday upon the stair I met a man who wasn't there He wasn't there again today I wish, I wish he'd go away.  কবিতাময় রহস্য আর রহস্যময় কবিতা। পঁয়তাল্লিশ বছর আগে দার্জিলিঙের এক সম্ভাবনাময় কবি অমিতাভ মিত্র খুন হয়েছিলেন। সন্দেহের তীর ছিল তার বাল্যবন্ধু রহস্য- ঔপন্যাসিক অরুণ চৌধুরীর দিকে। কিন্তু নানা পরস্পর বিরোধী প্রমাণে সেই অভিযোগ দাঁড়ায়নি।  এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক তনয়া অমীমাংসিত খুনের কাহিনী নিয়ে ধারাবাহিক লিখছেন একটি পত্রিকায়। সেই সূত্রেই অমিতাভ খুব সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য দার্জিলিং এলেন তিনি। তারপর থেকেই ঘটতে থাকলো একের পর এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা। তনয়া কি পারবে অতীতের মেঘে ঢাকা পড়ে যাওয়া এই হত্যা রহস্যের সমাধান খুঁজে পেতে? এই নিয়েই ৪০০ পাতা জুড়ে রহস্যের জাল বুনেছেন লেখক শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য তার নতুন 'শেষ মৃত পাখি' উপন্যাসে।  এই উপন্যাসটিকে শুধু রহস্য কাহিনী বললে

দুর্লভ সূত্রধরের ‘আহাম্মকের খুদকুড়ো’-এর পাঠ-প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সুমনা চৌধুরী

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত দুর্লভ সূত্রধরের ‘আহাম্মকের খুদকুড়ো’-এর পাঠ-প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সুমনা চৌধুরী। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি।  ................................. পাঠ প্রতিক্রিয়া *************  'আহাম্মকের খুদকুড়ো' দুর্লভ সূত্রধর প্রকাশক : সুপ্রকাশ প্রচ্ছদ: সৌজন্য চক্রবর্তী মূল্য : ২৮০/-  "ডুমাটোলার দাদু বলেছিলেন, 'বুঝলে দাদুভাই, এই জীবনটা ছাড়া জীবনে অপ্রয়োজনীয় বলে কিছু নেই। হমারা জীবন সির্ফ হমারা অকেলা নহি হ্যায়, সবারটা মিলিয়ে তবে আমাদের এক-একটা জীবন। তোমার জমানো খুদকুড়োর মধ্যে দেখবে আছে কত লোকের জীবনের দিনরাত, কিতনে লোগো কো জীবিত রহনা। কতজনের কত কথার কত শব্দ, দিল কী বাত, কতজনের কত গান, বুদ্ধি কী কিতনা সুগন্ধ, বিচারো কা হীরা-জহরৎ। সোচো দাদুভাই, ইয়ে কেবল আপকি চিজেঁ নহি হ্যায়---বলতে গেলে তোমারই নয়। তাই আলো-ভালোগুলোকে আগলে রেখো। যেদিন দেখা যাবে খুদকুড়োও নেই, ফুটন্ত ভাতের গন্ধ নেই কোথাও, সেদিন হয়তো এগুলোরই খোঁজ পড়বে। কোনোকিছু অপচয় করো না। ইয়াদ রাখনা, অপনে দিলমে কোই তরহা কোই অপেক্ষায়েঁ রাখা চলবে না। অর ফির ইসকে লিয়ে অপনে আপ মে কোই অভিমান নহি রাখনা

দুর্লভ খুদকুড়ো ৭। লিখছেন অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত দুর্লভ সূত্রধরের ‘আহাম্মকের খুদকুড়ো’র ধারাবাহিক পাঠ-আলোচনা লিখছেন অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী। আজ সপ্তম ও শেষ পর্ব। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি। এমন পাঠ-আলোচনাও দুর্লভ।  ................................. একটি ধারাবাহিক পাঠালোচনা ৭ রূপেশ্বরী ও না-লেখক হওয়ার বৃত্তান্ত নদীর নাম রূপেশ্বরী। সে যেন এক রূপকথার নদী। দুর্লভ স্মৃতি-পরিক্রমা ‘পোড়ের ভাত’ থেকে উজিয়ে এসে যেমন এই নদীটির ঘাটে এসে থামে; ঠিক তেমনি করেই লেখকের সাহিত্য পাঠ-পরিক্রমাও ‘দাদুর দস্তানা’ থেকে দীর্ঘ বিবর্তনের পথে ‘ইস্পাত’-এসে স্থির হয়, সেই বইটি লেখকের ব্যক্তি-‘জীবনের চারপাশে ছড়িয়ে থাকা অসম্পন্নতার মালিন্যভরা অর্থহীন সংকীর্ণ পরিসরটিকে ভেঙে দিতে’ চায়, জাগিয়ে দেয় ‘বেদনার অচিহ্নিত রেখাগুলিকে’। সেই রেখাগুলি আবিষ্কার করে মা মণিবাবু স্যারের কথারই যেন প্রতিধ্বনি করেন, - বেদনার কথা ‘যদি বলতেই হয় নদীর কাছেই বলা যায়। নদী সব শোনে তারপর সব দুঃখ নিয়ে বয়ে চলে যায়,…’। ফলত নিকোলাই অস্ত্রভ্স্কির ‘যৌবন, ভালোবাসা আর সংগ্রাম’-কে বুকে নিয়ে আহাম্মক এই নদীটির কাছে এসেই দাঁড়ায়। রূপেশ্বরীর খেয়াঘাটে বসে এপার ওপার

দুর্লভ খুদকুড়ো ৬। লিখছেন অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত দুর্লভ সূত্রধরের ‘আহাম্মকের খুদকুড়ো’র ধারাবাহিক পাঠ-আলোচনা লিখছেন অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী। আজ ষষ্ঠ পর্ব। তাঁর অনুমতি নিয়ে আমরা নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি। এমন পাঠ-আলোচনাও দুর্লভ।  .......................................... একটি ধারাবাহিক পাঠালোচনা   ৬  বড়ো হয়ে যাওয়ার বেদনা  ১৯৭১। এই উপমহাদেশের চিরস্মরণীয় সেই বছর। ওপারে বাংলা ভাষা মুক্তির জন্যে লড়ছে। এপার বাংলাও আবেগে উত্তাল। ওপার থেকে শরণার্থীরা দলে দলে এপারে আসছেন। খেলার মাঠ, ইস্কুল-কলেজে তাঁদের ঠাঁই দিতে গিয়ে খেলাধুলা, পঠনপাঠন বন্ধ। তবু মানুষ বিরক্ত নয়।  বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রাশি রাশি লেখা হয়েছে, এখনও হয়ে চলেছে। দুর্লভ সুত্রধরের কলম মুক্তিযুদ্ধের বহুচর্চিত রাজনীতি এবং বীরত্ব-ত্যাগ, বা কদর্যতা-বীভৎসতা থেকে সরে এসে যুদ্ধ-সময়ের বিশেষ ‘পরিস্থিতি’র উপর স্থির হয়েছে; যে পরিস্থিতিতে ‘ছেলেরা দ্রুত বড়ো হয়ে যায়’। বয়ঃসন্ধিকাল পেরিয়ে যাওয়ার পথে ছেলেদের হৃদয়ের গোপন রক্তক্ষরণকে লেখকের কলম ছোটো ছোটো বিধুর অক্ষরমালায় সাজিয়ে দিতে থাকেন।  মুক্তিযুদ্ধের সাহায্যার্থে কৌটো নাচিয়ে চাঁদা সংগ্রহ করার জন্য রিপাবলিকের পাবলিকদের