Posts

Showing posts from May, 2023

কীর্তনীয়া।। সমরেন্দ্র মণ্ডল।।

Image
সেই যে চলে আসা। তারপর দেখা হয়েছিল একবার। হেসে হেসে কথা বলেছিল। কিন্তু কোনও অভিযোগ নেই, অনুযোগ নেই, যেন সবই বিধির বিধান। এমন হবার কথাই ছিল। মনে আছে ঘটনাটা। রাফায়েল দল নিয়ে যাচ্ছিল তাহেরপুরে। বড়োদিনের পরে। পালা গাইবে সে। ট্রেন থেকে নেমে সকলে একটু হাত-পা ছড়িয়ে ওভারব্রিজে উঠতে যাবে, এমন সময় ব্রিজের নীচ থেকে কে যেন ডাকল, নতুন গোঁসাই, কেমন আছো ? চমকে তাকাল রাফায়েল। একটু থমকে গেল। সে দলের লোকদের বলল, তোমরা এগোও, আমি আসছি। দেখল, তুলসি আগের মতোই আছে। মুখে বয়সের ছাপ পড়েছে। শরীর একটু ভারি হয়েছে। সে মৃদু কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করল, তুমি! হাসল তুলসি। বলল, এই তাহেরপুরে এসেছিলাম। আসর ছিল দু-দিন। ফিরে যাচ্ছি। তোমার খবর কী? —আছে। চলছে। —সংসারী হয়েছ? —না। অবাক চোখে চাইল তুলসি। বলল, কেন? রাফায়েলের মুখ দিয়ে বেরিয়ে পড়ল, শরীরটা তো একজনের কাছে বন্ধক দিয়েছিলাম, ছাড়াতে পারিনি। আর একজনকে দেওয়া শরীর কি অন্যকে দেওয়া যায়? কথাটা বলেই সে অবাক হয়ে গেল, এমন কথা সে বলতে পারল কীভাবে? ও তো দর্শনের কথা। তুলসি কিন্তু ভাবল না কিছু। সে হাসল। বলল, স্নান করলেই শরীর শুদ্ধ হয়ে যায়। কথাটা শুনে থমকে যায় রাফায়েল।

আহাম্মকের খুদকুড়ো।। দুর্লভ সূত্রধর।।

Image
'মায়ের হাঁড়িতে কখনও ভাতের অভাব হতো না। যদি-বা কখনও হতো তা আমরা টের পেতাম না—তার চোটটা হয়তো মায়ের পাতের ওপর দিয়েই যেত! মায়ের হাতে টাকা জমলেই মা চাল কিনে রাখতেন। রীতিমতো মুটে নিয়ে আসত বিরাট চালের বস্তা—আড়াই মণ—একশো কেজি বা এক কুইন্টাল চাল ৷ একটা বড়ো কালো ড্রামে (তদানীন্তনকালের কেরোসিন তেলের ড্রাম) তা ভর্তি করা হতো। তাতে না ধরলে বড়ো বড়ো হাঁড়িতে চাল রাখা হতো। এইভাবে যথেষ্ট পরিমাণে গমও মজুত থাকত। চাল ফুরোবার আগেই আবার নতুন চাল কেনা হতো। সস্তার সময়ে কয়েক বস্তা আলু কিনে রাখতেন মা। চৌকির তলায় সাদা বালির আস্তরণের ওপর আলু বিছিয়ে ছিল মায়ের নিজস্ব হিমঘর ! মজুতের প্রক্রিয়াটা শুনতে যতটা সহজ, কাজে ততটাই কঠিন ছিল। চাল বা গমে পোকা লেগে যেত বলে নিম পাতা বা পরতে পরতে চুন ছড়িয়ে রাখা হতো এবং নিয়মিত তদারকি করতে হতো। আর প্রত্যেকদিন চৌকির তলায় ঢুকে আলুগুলোকে উল্টে পাল্টে দিতে হতো, বেছে বেছে অপেক্ষাকৃত দুর্বল আলুগুলোকে সেদিনের রান্নার জন্য বের করতে হতো। মায়ের এসব উদ্যোগে দিদিদের কঠোর শ্রম করতে হতো। মায়ের কাছ থেকেই স্থৈর্য পেয়েছিল আমাদের দয়াবতী দিদিরা— আমার মতো আকাটরা তাই তরে যেতে

হিমশীতল রহস্য।। সর্বাণী বন্দ্যোপাধ্যায়।।

Image
'আজ তাদের প্রোগ্রাম সম্পূর্ণ অন্য জায়গায়। যেতে যেতেই জন গন্তব্যের বর্ণনা করছে। শুনে মনে হল যাওয়া হবে ভাটনাওকূল ন্যাশানাল পার্কে। হিমবাহ বলতে ভূগোল বইতে যা পড়া আছে তা হল কঠিন বরফের চলন্ত বিশাল চাঙড়। খুব একটা বেশি কিছু জানা ছিল না কারোরই। ভাটনাওকূল ইউরোপের বৃহত্তম হিমবাহ। যার থেকে ছোট্ট হিমবাহ ব্রিয়ামারকুরকূল বেরিয়ে এসেছিল। সেই হিমবাহ ভেঙে গলতে শুরু করলে তা পিছিয়ে যেতে থাকে আর তৈরি হয় এক জলাশয়। যাকে বলা হয় গ্লেসিয়ার লেগুন। লেগুন কথার অর্থ তিনদিকে জমি দিয়ে ঘেরা হ্রদ যার বাকি দিক জুড়ে আছে সাগরের সঙ্গে। ওই জলাশয়কে জন্ম দিয়েই তার স্রষ্টা হিমবাহ পেছনে সরতে শুরু করেছে আর লেগুন আয়তনে বাড়তে আরম্ভ করেছে। আজ এর মাপ আঠারো বর্গ কিলোমিটার। কেন্দ্রস্থলের গভীরতা দুশো ষাট মিটার। ওই লেগুনকে আবার আটলান্টিক মহাসাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে এক জলধারা। জিপে একটাও কথা হয়নি। ওখানে পৌঁছে সুযোগ খুঁজছিলেন তিনি। ক্যারোলিনার সঙ্গে সারাক্ষণের যাত্রাপথে কিছুই জানা যায়নি। ভাটনাওকূলে তাদের একরাত্রি থাকার কথা। হোটেল ঠিক হয়ে গিয়েছে। তবে ক্যারোলিনার ঘটনা জানার জন্য মন উদগ্রীব হয়ে আছে। অপেক্ষা করার মত

হিমশীতল রহস্য।। সর্বাণী বন্দ্যোপাধ্যায়।।

Image
'ভারি অদ্ভুত লাগছে আমার। কাল রাতে অন্য হোটেলে আসার পর থেকেই কেমন একটা আনচান ভাব হচ্ছিল। একবার ভাবলাম এটা বোধহয় বাড়ির জন্য মন খারাপ। তারপর ভিডিওকল করে সবার সঙ্গে কথা বলার পরও স্বস্তি না পেয়ে বসে গেলাম ছবি আঁকতে। একটা অদ্ভুত ছবি বেরোল আমার হাত দিয়ে। ফাঁকা একটা বরফ ঢাকা মাঠে আমি একা দাঁড়িয়ে আছি। একদম একা। একটু দূরে মাটি থেকে ধোঁয়া উঠছে। ছবিতে আমার পেছনদিকটা দেখা গেলেও ওটা যে আমি সেকথা কাউকেই বলে দিতে হবে না। ছবি আগেও আমি আঁকতাম। কিন্তু এইধরনের ছবি আঁকার ব্যাপারটা গতবারের কেরালা ভ্রমণ থেকেই শুরু হয়েছে। কেরলের বেলাও আমি অচেতনভাবেই ছবি আঁকতাম। আর বিষয়গুলো ছিল একদম অচেনা। এখানেও বিষয় নির্বাচনে আমার কোনো স্বাধীনতা নেই। হঠাৎ করেই মন আনচান করে উঠছে। ছবি আঁকার ইচ্ছে হচ্ছে। এই অনুভূতি আমার চেনা। গতবারের মতোই না আঁকা অবধি একটা অস্বস্তিভাব কাজ করছে তাই আঁকছি। আঁকার পর সাময়িক স্বস্তি হচ্ছে, সব ঠিক। শুধু কেন আঁকছি সেটাই আমি জানি না। এ পর্যন্ত দুটো ছবি এভাবে আঁকলাম। তবে কি এগুলো আগামী দিনের ইঙ্গিতবাহী! হয়ত তাই। এ ব্যাপারে কাকুর সঙ্গে কথা বলে লাভ নেই। কাকুর এখানের কাজ যে ওই মানুষ পাচারচক

যেসব গল্প ছোটো থেকে বড়ো হয়।। অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী।।

Image
'সেদিন যখন দিদি আমার সঙ্গে না পেরে আমাকে ছাড়াই ইস্কুলে চলে গেল তখন মা রান্নাঘরের বারান্দায় পিঁড়ি পেতে বসে পান্তা ভাত ঘোল দিয়ে মেখে নুন ও শুকনো লঙ্কা ভাজা দিয়ে খাচ্ছিলেন। পান্তা ভাত আর ঘোল কাকে বলে সেটা এই গল্পের শেষে তোমাকে বুঝিয়ে বলছি দাদুভাই— তো মায়ের মাখা খাবারে অমৃতের স্বাদ থাকে। আমি বললাম— এক খাবল দাও।  মা একটার পর একটা গ্রাস আমার মুখে তুলে দিতে দিতে লেখাপড়া শেখার উপকার বোঝাতে শুরু করলেন। সেই পান্তার স্বাদেই বোধ হয়, আমার মনটা গলে গেল। অকুতোভয়ে মাকে বলল,—তাইলে ইস্কুলে চলে যাই? মা বললেন,—সবিতা যে চলে গেল! আমি বললাম,—আমি একাই যেতে পারি। মা বোধ হয় ছেলের বীরত্বে, বিশেষত পড়াশুনার প্রতি তার এমন জাগ্ৰত আগ্রহে আপ্লুত হয়ে আমাকে একাই ইস্কুলে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে দিলেন। রোজকার চেনা জায়গায় একা একা বিচরণ এক কথা, আর আধ চেনা রাস্তায় একা একা যাওয়া অন্য কথা। তার আগে মাত্রই কয়েকদিন দিদির সঙ্গে ইস্কুলে গিয়েছি। সামনে পিছনে ইস্কুলগামী আরও অনেক বালকবালিকা ছিল। কিন্তু সেদিন রাস্তা শুনশান। সময়টা দুপুর হয় হয়। যারা ইস্কুলে যাওয়ার তারা অনেক আগেই চলে গেছে। হাঁটাটা শুরু করেছিলাম বেশ

যেসব গল্প ছোটো থেকে বড়ো হয়।। অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী।।

Image
'প্রতিদিন ইস্কুলে পৌঁছেই অম্বুদ রাস্তায় দাঁড়িয়ে দূরের দিকে তাকিয়ে থাকে একটিই প্রার্থনা নিয়ে, সেদিন যেন প্রত্যেকটি এগিয়ে আসা সাইকেলের উপর কালো মাথা দেখা যায়। এইভাবে তাকিয়ে থাকতে থাকতে অনেক দূরে সাইকেলের উপর সাদা মাথাটি নজরে আসা মাত্র চোখে অন্ধকার দ্যাখে সে। একবুক বিষাদ নিয়ে তাড়াতাড়ি ইস্কুল ঘরে ঢুকে নিজের চাটাই-এর ওপর বসে পড়ে। চাটাই-এ বসে অম্বুদ ভাবতে থাকে দুর্গাপুজোর যাত্রাপালার ছবি। মাথায় লম্বা কালো চুল, পরনে শাড়ি এবং গয়না— দ্রৌপদী কিংবা সীতার করুণ বিলাপে আশ্চর্যজনকভাবে অবিকল বাজতে থাকে বড় পনশয়ের ভয়াল কণ্ঠস্বর। বর্ণপরিচয় দ্বিতীয় ভাগের বানানসমূহ অম্বুদের মাথা থেকে উধাও হয়ে যেতে থাকে। হাসিমুখের ছোট পনশয় তখন তাঁর ভরাট সুরেলা স্বরে নামতা পাঠ করছেন; সকলের সঙ্গে অম্বুদও গলা মেলাচ্ছে আর ভাবছে টিফিনটা কখন হবে। বড় পনশয় চিৎকার করে বলবেন, টি-ফি-ন। তাঁর ভয়াল আওয়াজটিও তখন মিষ্টি শোনাবে। মুড়ির পুঁটলি নিয়ে সকলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছুটতে ছুটতে পুকুরপাড়ে চলে যাবে অম্বুদ । বর্ষাকাল না হলে পুকুরের জলটি পরিষ্কার, টলটলে। ঘাটের কাছে বেশ কিছুটা জায়গা বাদে সমস্ত পুকুরটাই শালু

যেসব গল্প ছোটো থেকে বড়ো হয়।। অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী।।

Image
'পুজোর ছুটির পর স্কুল সব খুলেছে। হস্টেলের ছেলেরাও বাড়ি থেকে ফিরে এসেছে। অ্যানুয়াল পরীক্ষা সামনেই। দশটায় বাতি নেভানোর ফরমান পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত আছে। এগারটার পর একে একে সব ঘরের আলো নিভে গেল। ব্যতিক্রম একমাত্র ৫নং রুম। সেখানে তখনও টেবিল ল্যাম্প জ্বেলে নবেন্দু পাঠ্যপুস্তকের সমুদয় অক্ষর নিজের মাথায় মুদ্রিত করার প্রাণপণ চেষ্টায় রত। গভীর রাতে তার মৃদু গুনগুনানিও ছাত্রাবাসের চৌহদ্দি পেরিয়ে চলে যাচ্ছে। হঠাৎ-ই ঝুপ করে আলোটি নিভে গেল। কিন্তু নবেন্দু এত সহজে দমে যাওয়ার পাত্র নয়। সে অতি বিচক্ষণ ও পরিপাটি স্বভাবের ছেলে। টেবিলের ড্রয়ার থেকে একটি টর্চ বের করে সে ঘর থেকে বেরিয়ে ১১নং রুমে চলে এল। এটি মিটার রুম। এর একটি চাবি ফেলারামবাবুর কাছে থাকে। যেহেতু সে গভীর রাত্রি পর্যন্ত পড়াশোনা করে এবং ফিউজের তার কেটে যাওয়ার ঘটনা এখানে প্রায়ই ঘটে, সে স্যারের কাছ থেকে চাবিটি চেয়ে নিজের কাছে রেখেছিল। ঘর খুলে সব কিছু পর্যবেক্ষণ করে সে আবিষ্কার করল মেইন-এর ফিউজ উড়ে গেছে। ফিউজের তার সঙ্গে নিয়েই সে বেরিয়েছিল। সেটি মেরামত করে বেশ আত্মতৃপ্তির সঙ্গে নিজের দূরদর্শিতার কথা ভাবতে ভাবতে ন

যেসব গল্প ছোটো থেকে বড়ো হয়।। অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী।।

Image
সরু খাল। দশ-বারো হাতের বেশি চওড়া নয় কোথাও। জলও কদাচিৎ হাঁটুর উপর ওঠে। পুটুর পরনে একটা গামছা। শাড়িটা বুক ও গলায় জড়িয়ে রেখেছে। একটি মাত্র শাড়ি, ভেজানো চলে না। তাছাড়া রাতের বেলায় লজ্জা কিসের, কে আর দেখছে। গামছা পরে হাঁটতেও সুবিধে, জেলেদের তাড়া খেলে ছুটতেও। খালের পাড়ে ছোট বড় গাছের সারি। মাঝে মাঝে হাওয়া লেগে শুকনো পাতা ঝরে পড়ছে জলের উপর। এই ঠাণ্ডা হাওয়াতেও পুটুর কপালে ঘাম। সে হাত দিয়ে কপালের ঘাম মুছল। তারপর বুকের উপর জড়িয়ে রাখা শাড়ির কোঁচড়ে হাত দিল। আজ অনেক মাছ পাওয়া গেছে। কাল হয়ত বা আর আসতেও হবে না। ছোট ভাইটার পায়ে ঘা। ক্রমশ যেন পচে যাচ্ছে পাটা। কাল ভাইকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যেতেই হবে। তাতে আবার যদি তাকে কাল মাছ চুরি করতে আসতে হয় তা-ও না হয় আসবে। এভাবেই পুটু বেঁচে থাকে। জ্ঞান হয়ে ইস্তক সে জানে তাকে বেঁচে থাকতে হবে, আর বাঁচিয়ে রাখতে হবে ভাইটাকে। বেঁচে থাকার কৃৎকৌশল খুঁজতে খুঁজতে এটাই পেয়ে গেছে পুটু। এই খালে জেলেরা আড় জাল পাতে। আর সেই জাল থেকে মাছ চুরি করে সে গভীর রাতে। জেলেগুলো বড়ো হিংস্র। কেননা মাছ-ই ওদের বাঁচিয়ে রাখে। সেই মাছে কেউ হাত দিলে ওদের মাথায় খুন চ

সেকালের সমাজচিত্র।। দীনেন্দ্রকুমার রায়।।

Image
‘পিউনিটিভ’ পুলিশ একালের পাঠক সমাজে 'পিটুনি পুলিশ' নামে অভিহিত হইলেও আমি সেকালের গ্রাম্য ইংরেজি স্কুলের যে মাস্টারটিকে ‘পিটুনি মাস্টার' নামে পরিচিত করিতেছি—তিনি অকারণে বা সামান্য কারণে স্কুলের ছেলেদের এরূপ ভীষণ প্রহার করিতেন যে, আমরা তাঁহাকে পুলিশের মতোই ভয় করিতাম। একালের মাস্টারদের সাধ্য কি সব্যসাচী হইয়া তাঁহারা সেভাবে বেত্র চালনা করেন। ছেলেদের পিঠে 'কচার ডাল' নামক আয়ুধের শক্তি পরীক্ষা করিতে করিতে যখন তাঁহার দক্ষিণ হস্ত অবসন্ন হইত, তখন তিনি বাম হস্তে কেঁচে গণ্ডূষ করিতেন—যেহেতু তাঁহার উভয় হস্তেরই সঞ্চালন ও উত্থান-পতনের দক্ষতা সমান ছিল। সেকালের পাঠশালার খঞ্জ গুরুমশায় সীতানাথ অধিকারীর বেতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাইয়া আমরা ইংরেজি স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর বেতের আস্বাদন ভুলিয়াই গিয়াছিলাম, কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্যক্রমে স্কুলে সহসা যে নূতন হেডমাস্টারটির আবির্ভাব হইল— দেখা গেল, বেত্র-প্রয়োগে তিনি পাঠশালায় গুরুমশায় ‘সীতে খোঁড়ার'ও গুরু হইবার যোগ্য। আমার প্রতিবেশী ও সহপাঠী মুনুর (মনমোহন অধিকারী) অনেক মনোহর গুণের কথাই পূর্বে লিখিয়াছি। তাহাদের বাসগ্রামে একঘর জমিদার ছিলেন,