Posts

Showing posts from April, 2023

শেষ মৃত পাখি।। শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য।।

Image
গুডরিডস এবং নিজের বুকস্টাগ্রামে সুপ্রকাশ প্রকাশিত শাক্যজিৎ ভট্টাচার্যের রহস্য উপন্যাস 'শেষ মৃত পাখি' পড়ে পাঠ প্রতিক্রিয়া লিখেছেন সালমান জিশান। এখানে রইলো সেই পাঠ প্রতিক্রিয়াটি।  ................................................. "ওল্ড সিনস হ্যাভ লং শ্যাডোজ। পাপ পুরোনো হলে তার ছায়া দীর্ঘ হয়।" অমিমাংসিত কেস' বিষয়টা খুবই নিষ্ঠুর। শার্লক হোমস, ফেলুদা, ব্যোমকেশ একটা রহস্যের কিনারা কোনোভাবেই করতে পারছেন না। দিনের পর দিন মীমাংসা না হওয়া কেসটা জমা হচ্ছে কানাইচরণের পুলিশ স্টেশনে, মিসির আলীর অমিমাংসিত ডাইরিতে। বাঘা বাঘা গোয়েন্দারা পারছেন না সমাধান করতে। রহস্যের পোকা হিসেবে, চিন্তার খোড়াক হিসেবে ভেবে দেখলে হয়তো এভাবে ব্যাপারটার সর্বোচ্চ রস আস্বাদন করা যায়। কিন্তু ভুক্তভোগীর পক্ষে ও সাক্ষাৎ মৃত্যুযন্ত্রণা। যেমন এখানে গল্পটা এরকম যে, চুয়াল্লিশ বছর আগেকার প্রতিশ্রুতিবান তরুণ কবির হত্যাকাণ্ড নিয়ে কোনো সুরাহা হয়নি। শিল্পকর্মের চাইতে সুন্দর দার্জিলিং এ তারচেয়ে বড় শিল্পকর্ম সৃষ্টি করে হাওয়া হয়ে গেছে খুনী। সকল দিকে আঙুল উঠেছে, মৃতের সবচেয়ে কাছের বন্ধু, লেখক অরুণ চৌ

সেকালের সমাজচিত্র।। দীনেন্দ্রকুমার রায়।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত শতঞ্জীব রাহা সম্পাদিত দীনেন্দ্রকুমার রায়ের 'সেকালের সমাজচিত্র' পড়ে লিখেছেন শ্রীতমা ভট্টাচার্য। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি।  ............................................... 📖বইয়ের নাম- সেকালের সমাজচিত্র ✒️লেখক- দীনেন্দ্রকুমার রায় 🔸সম্পাদক- শতঞ্জীব রাহা 🔹প্রকাশক- Suprokash সুপ্রকাশ প্রকাশনা 📜পৃষ্ঠা- ১২৭ 🔹মূল্যায়ন- ⭐⭐⭐⭐/৫  ♦️লেখক দীনেন্দ্রকুমার রায় (১৮৬৯- ১৯৪৩) নিজের বাল্যকাল থেকে পল্লীসমাজ এবং তার মানুষজনকে খুব নিপুণভাবে লক্ষ্য করেছিলেন। তিনি জন্মেছিলেন অবিভক্ত নদীয়া জেলার মেহেরপুর গ্রামে এবং সেখানকার জনজীবন, বিভিন্ন আচার এবং রীতিনীতি তাঁকে গভীরভাবে আকৃষ্ট করেছিল, আবার সমাজের নানা রকম কুপ্রথা তাঁর মনকে ব্যথিত করেছিল। তিনি তাঁর বেড়ে ওঠার সময় সমাজকে যেভাবে দেখেছিলেন, বার্ধক্যে এসে তার স্মৃতিচারণ করেছেন। এই বই সেই সব স্মৃতিচারণার একটি সংকলন।  💥বইটিতে আটটি স্মৃতিচারণা রয়েছে। লেখকের নিদারুন উপস্থাপনার কারণে পড়তে পড়তে মনে হয়েছে যেন গল্প পড়ছি। গ্রামের বাজারের বিবরণ, মাছ ধরতে যাওয়ার কাহিনী, গ্রাম্য মেলার বর্ণনা পড়তে এবং আজ থেকে প্রায়

শেষ মৃত পাখি।। শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত শাক্যজিৎ ভট্টাচার্যের উপন্যাস 'শেষ মৃত পাখি' পড়ে লিখেছেন সায়ন কুমার দে। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি। ................................................................. শাক্যজিৎ ভট্টাচার্যের 'শেষ মৃত পাখি' উপন্যাসটি বই আকারে প্রকাশ পেয়েছে সুপ্রকাশ থেকে। এটি শাক্যজিৎ-এর পঞ্চম প্রকাশিত বই, তাঁর প্রথম রহস্য কাহিনী , আর আমার পড়া লেখকের প্রথম বই। প্রচ্ছদ থেকেই প্রকাশ লেখাটি রহস্যকাহিনী। আলো-আঁধারি দার্জিলিঙের আবহে অসামান্য প্রচ্ছদ নির্মাণ করেছেন শিল্পী সৌজন্য চক্রবর্তী। চারশো পৃষ্ঠাধিক এই উপন্যাসটি টানটান এক রহস্যকাহিনীকে বিধৃত করে। ১৯৭৫ সালের জুন মাসে দার্জিলিঙে অকস্মাৎ খুন হন তৎকালীন বাংলা কবিতার জগতের উদীয়মান তরুণ কবি অমিতাভ মিত্র। তাঁর খুনে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার হন অভিতাভর একদা ঘনিষ্ঠ বন্ধু অরুণ চৌধুরী, পরবর্তীকালে প্রমাণাভাবে ও আলিবাইয়ের জন্য ছাড়া পেয়ে যান তিনি। কিন্তু সন্দেহ ও অপযশ পিছু ছাড়ে না তাঁর। অরুণ চৌধুরী বাংলা সাহিত্যের জগতে পরিচিত নাম, সাহিত্যানুসারী রহস্য কাহিনী লেখক হিসেবে তাঁর খ্যাতি। এর পর অতিক্রান্ত হয়েছে

মরুনির্ঝর।। সূর্যনাথ ভট্টাচার্য।।

Image
'মরুনির্ঝরের পরমায়ু বোধহয় এত শীঘ্র শেষ হবার নয়। তাই নির্ঝরিণীর মৃত্যু হয়নি। জলমগ্ন হতেই দুটি পুরুষ হস্ত নির্ঝরিণীর অচেতন দেহ সরযূর তট থেকে তুলে নিয়ে এসেছিল। সংজ্ঞা ফিরে এলে নির্ঝরিণী দেখল তার দেবতাকে। তার মুখপানে চেয়ে তিনি প্রচ্ছন্ন তিরস্কারে বলছেন, মরতে গিয়েছিলি নির্ঝর? আমাকে সর্বস্বান্ত করে? মরুধর! নির্ঝরিণী বুঝতে পারেনি সুরসাগর নিজেকে উজাড় করে তাকে সব দিয়েছেন। তারই মাঝে আছে এই মানুষটির অলৌকিক সৃষ্টির সুররঞ্জিত উত্তরাধিকার। তার তো এখনই মরা চলবে না। কিন্তু সে সুর— নির্ঝরিণীর একান্ত প্রিয় হৃদয়ের ধন, সে ধনে যে তার আর অধিকার নেই। উচ্ছ্বসিত কান্নায় ভেঙে পড়ে নির্ঝরিণী। অবরুদ্ধ স্বরে বলে, কিন্তু বেঁচে থেকেই বা কী লাভ? আমি যে ধৃতিকে কথা দিয়েছি। মরুনির্ঝর আর আমি গাইতে পারব না। মরুধর কিছুক্ষণ নীরব থেকে বলল, সে প্রতিজ্ঞা সন্তানকে পিতার থেকে আলাদা করতে পারে না নির্ঝরিণী। মরুনির্ঝর আমার সন্তান। যখন চরাচর ঘুমোবে, আমাকে তুই শোনাবি। শুধু আমাকে। নির্ঝরিণী বাঁচল। কিন্তু মরুনির্ঝর? সে আর কেউ শুনতে পেল না। গভীর রাতেই সবার অলক্ষ্যে স্রষ্টা ও সৃষ্টিধরী নগর ত্যাগ করে কোথায় চলে গেল। লোকাল

বাঙালির পথঘাটের খাওয়া-দাওয়া।। সম্পাদনা : অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী।।

Image
'মসজিদ রোডের মসজিদটা ছাড়িয়ে একটু এগোলেই বাতাসা-নকুলদানার দোকানগুলোর গা-ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট্ট দোকানটাতে বাকরখানি মিলতো। রুটির বাকরখানি তৈরি হতো ময়দা, সোডা আর ডালডা মিলে। সকালের টিফিনের জন্য অনেকেই প্রচুর বাকরখানি কিনে নিয়ে যেতেন বাড়িতে। এগুলো সহজে নষ্ট হয় না বলে। শহুরে হিন্দুরা বাকরখানিকে 'মুসলমানি খাবার' বলে এড়িয়ে চলতেন। শহর করিমগঞ্জের কোল ঘেঁষে বয়ে চলেছে এক নদী। নাম কুশিয়ারা। ঘাটের খুব কাছেই স্বস্তি মিষ্টান্ন ভাণ্ডার। দু'চারটে ছেলে বসে রয়েছে। ততদিনে এদের কেউ কেউ চাকরিতে ঢুকে পড়েছে, বাকিরা কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং, কেউ পলিটেকনিক পড়ছে। টেবিলে ছড়ানো দু-একটা ম্যাগাজিন, কিছু কাগজ, কলম, সিগারেটের প্যাকেট আর একটা টুপি। 'স্বস্তি'র গরম গরম কচুরি খেতে খেতেই ওরা ম্যাগাজিনের পাতা ওল্টায়, কবিতা লেখে, হেঁড়ে গলায় আবৃত্তি করে ‘মারী ফারারের ভ্রূণ হত্যা'। ছেলেগুলো দোকানে বসে যে রাতে এসব হ্যানোতেনো করে, তার পরদিন ভোরবেলা বেরিয়ে শহরবাসীর চোখে পড়বে পার্কের রবীন্দ্রমূর্তিটার মাথায় কে যেন সুদৃশ্য একটা টুপি চাপিয়ে গেছে। হাসপাতালের আশেপাশে এখনকার মতো ছড়িয়ে ছিটি