মেস-হোস্টেল ঘটিত এ বাঙালি জীবন। সম্পাদনাঃ সুজন বন্দ্যোপাধ্যায়
গড়বেতায় সবাই বলত 'গৌউর উকিলের মেস'। আমাদের গ্রাম থেকে চার-পাঁচ মাইল পশ্চিমে শিলাবতী নদীর পাড় ঘেঁষে একটি ছোট্ট গ্রাম, রাঁগড়। এখান থেকে গৌরচন্দ্রের জীবন এবং পৃথিবীতে বিশ শতক একই সঙ্গে যাত্রা শুরু করেছিল। উষর লালমাটির দেশ গড়বেতা। নামেই গঞ্জ শহর, আসলে পুরা-ঐতিহ্যবাহী এক সমৃদ্ধ গ্রাম। ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেকগুলি পাড়া। পাড়াগুলির মাঝে মাঝে বিস্তীর্ণ ফাঁকা জায়গা ভূতভৈরবীর ঝোপে আকীর্ণ। আর আছে শিলাবতী নদীর সংলগ্ন গনগনির খুল্যা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ ধূ ধূ ডাঙা, যেখানে ভূতভৈরবী পর্যন্ত শেকড় গাড়তে পারে না। গড়বেতার মুন্সেফ কোর্টে বছর দুয়েক ওকালতি করার পর উকিলবাবু কোর্ট থেকে মিনিট পাঁচেকের হাঁটা দূরত্বে এবং পাকা রাস্তার ২৫০ মিটারের মধ্যেই একশো টাকায় দশ কাঠা জায়গা কিনলেন। সেখানে ধীরে ধীরে ইংরেজি 'এল' অক্ষরের একটি কাঁচা-পাকা বাড়ি তৈরী করলেন। 'এল'-এর ছোটো বাহুতে পাকা মেঝে, মাটির দেওয়ালের দুটি ঘর।দুই ঘরের মাঝখানে একটি একদিক খোলা বর্গাকার বারান্দা। বড় বাহু দ্বিতল, কাঁচা মেঝে, পুরো বাড়ির মাথায় টিনের চাল। এই বাড়িতেই তিনি ছাত্রদের জন্য একটি মেস চালু করলেন। ১৯৬২ সাল। মেজদার কর্মস্থল দুর্গাপুরের একটি স্কুলে পড়ছিলাম। তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় সেখানে একটা অনিশ্চিত পরিস্থিতি তৈরী হলো। কিছুদিন দ্বিধায় কাটিয়ে গড়বেতায় আমাকে স্কুলে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নিলেন অভিভাবকরা। ভর্তি তো হলাম। কিন্তু থাকি কোথায়? উকিলবাবুর মেস থাকতে স্কুল-বোর্ডিঙে থাকার কথা অচিন্তনীয়। কেননা, উকিলবাবু ছিলেন আমার বাবার বন্ধু। তো আমি গিয়ে পড়লাম 'উকিলবাবুর মেস'-এ।
কেমন ছিল সে মেস-বাস? লিখছেন অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী 'উকিলবাবুর মেস' -এ।
উকিলবাবুর মেস
অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী
মেস-হোস্টেল ঘটিত এ বাঙালি জীবন
সম্পাদনাঃ সুজন বন্দ্যোপাধ্যায়
দ্বিতীয় সংস্করণ
প্রচ্ছদ ও অলংকরণঃ মেখলা ভট্টাচার্য
মুদ্রিত মূল্য: ৫৯০ টাকা
#সুপ্রকাশ
Comments
Post a Comment