অভিমানভূম।। (পুরুলিয়ার ধুলো মাটি নদী আর মানুষদের গল্প-কথা-মিথ)।। শুভদীপ চক্রবর্ত্তী।। সুপ্রকাশ।।
গাছেদের কাছে যাওয়া হয় না কতদিন? কতদিন শোনা হয় না বাকলের ভাষা? এই যে শুকতারা দেখার লোভে প্রতিদিন হারিয়ে ফেলছি রোহিনী, স্বাতী, বিশাখা, অনুরাধা; পথ হারিয়ে ফেললেও উত্তর-ফাল্গুনীর থেকে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না কোনও। রাত বাড়ে যত, ঝকঝকে আকাশে তত বেশি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে নীলচে সবুজ আলোর দল। আমাদের এই গ্রহের অন্ধকার এক কোণায় প্রাচীন ঘনীভূত লাভা স্তরের উপর পিঠ পেতে দিলে, আরও বেশি মায়াময় হয়ে ওঠে এই তাপহীনতা, আলোহীনতা। এই কার্তিক-নবান্নের দেশে ঝরে পড়তে থাকে হেমন্ত ফসল। ধানের ছড়ায় মিশে চালের গুঁড়ির ছিটা পড়ে গোবর নিকানো দুয়ারে। দমে টান দিয়ে বাঁধা হয় জোরসে ধামসা। পরখ করে নেওয়া হয় মাদলের বোল। তারায় তারায় রটে যায় সেই সমাগত সুখের দিন— আজ কালী বোঙ্গার পুজো! কাল থেকে সহরায়! ….............................. সহরায়ের দ্বিতীয় দিন, অর্থাৎ সারডি মাহাতে পিতৃপুরুষদের অর্চনার সঙ্গে সঙ্গে পুজো করা হয় গৃহ দেবতা বা কুল দেবতারও। দূর-দূরান্ত থেকে আত্মীয়স্বজন, অতিথিরা আসতে থাকেন ঘরে। নাচে, গানে, মহুয়া-হাড়িয়ার নেশায় জমে ওঠে মহল্লা। এরপর পুজোর চাল এবং বলি দেওয়া মুরগীর মাথা দিয়ে তৈরি করা হয় একটা বিশেষ পদ, যার নাম ‘সোরে’। দেবতা ছাড়া...