অলৌকিক বাগান।। শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য।।

সুপ্রকাশ প্রকাশিত শাক্যজিৎ ভট্টাচার্যের উপন্যাস ' অলৌকিক বাগান ' পড়ে লিখেছেন শ্রীপর্ণা মিত্র। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি। 
...............................................
📕অলৌকিক বাগান
🖋️শাক্যজিৎ ভট্টাচাৰ্য
💰 মূল্য - ২০০ টাকা 

এই উপন্যাসের পটভূমি  যাদের নিয়ে রচিত তিনি নিত্যময়ী এবং তাঁর পিতৃপুরুষ প্রদত্ত বাগান।এই বাগানের সঙ্গে নিত্যময়ীর আত্মার সম্পর্ক, তাঁর রক্তে রক্তে, রন্ধ্রে রন্ধ্রে বইছে বাগানের প্রতি ভালোবাসা শুধু বাগানের গাছ গাছালির সঙ্গে নয়, বাগানে বসবাসরত শেয়াল, হনুমান, সাপ, ব্যাঙ সকলের সঙ্গেই নিত্যময়ী মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ। নিত্যময়ী অনুভব  করতে থাকেন এই সব জীবের মধ্যেই ছায়া হয়ে বসে থাকেন তাঁর পিতৃপক্ষ এবং এই এক নস্টালজিয়ার আবর্তে সর্বদা ঘুরতে থাকেন তিনি,এবং তিনি এও মনে করেন যে এই পূর্বপুরুষেরাই নিয়ত পাহারা দেন অনূঢ়া নিত্যময়ীকে।

নিত্যময়ীর জীবনে, জীবনের অনেক স্বাদ অপূর্ণ রয়ে গেছে, সেই অপূর্ণতা সে কখনো ভাড়াটে নব দম্পতি 'শিখা - ইন্দ্র' এর জীবনের রসস্বাদন দেখে তাদের দাম্পত্য জীবনকে অনুভব করে নিজের তেষ্টা মেটানোর চেষ্টা করেন আবার কখনো বা তাদের দেখে ঈর্ষান্বিত হন। পাশেই শ্মশানকালী মন্দিরের পুরোহিত গণেশের সঙ্গে রয়েছে নিত্যময়ীর হৃদ্যতা। তাকে নিত্যময়ী সন্তানসম স্থান দিলেও গণেশর মনে পাপ চিন্তা অনবরত কড়া নাড়তে থাকে এই ভেবে যে নিত্যময়ীর অবর্তমানে এই বাগান বা জায়গার কিছু অংশ তার বাকি জীবন অতিবাহিত করতে সহযোগিতা করবে। কিন্তু মনে মনে এই পাপ চিন্তার লালন করলেও এমনকি পটকার উস্কানিতেও সে এই কাজ করতে দ্বিধাগ্রস্ত হয়।
নিত্যময়ী  গণেশর কাছে  পিতৃপুরুষ কে তর্পন এর সাধ প্রকাশ করেন। গণেশ ও মনে মনে ভাবে নিত্যময়ী কে ইহলোক ত্যাগ করানোর এই এক সুবর্ণ সুযোগ। কিন্তু নিত্যময়ী পিতৃপুরুষের সঙ্গে যখন নিজেরও তর্পন অগ্রিম করে রাখেন গণেশ যেন শত চেষ্টাতেও মন থেকে নিত্যময়ীর ক্ষতি করতে পারেনা।একদা আগমনীর সুরকে এবং পূর্বপুরুষ দের সঙ্গে করে এই  বাগানের অন্ধকারেই নিত্যময়ী মিলিয়ে যান।আর তার সাধের বাগান "অলৌকিক বাগান " হয়ে থেকে যায় এই পৃথিবীর কোনো ফেলে আসা প্রান্তরে।

Comments

Popular posts from this blog

বাংলায় স্মৃতির পেশা ও পেশাজীবীরা ১।। সম্পাদনা : সুজন বন্দ্যোপাধ্যায়।।

সময় ভ্রমণ।। দার্জিলিং : পাহাড়-সমতলের গল্পগাছা।। সৌমিত্র ঘোষ।।

সময় ভ্রমণ।। সৌমিত্র ঘোষ।।