বাবার ইয়াশিকা ক্যামেরা। কল্লোল লাহিড়ী

এই যে রাঙা সিঁড়ির ওপর দিব্যি বসে আছে চুপটি করে হাতদুটো সামনের দিকে জড়ো করা। আসন পাতা হয়েছে রাঙা বসবে বলে। এই ছবিটাই কি আমি প্রথম তুলেছিলাম বাবার ইয়াশিকায়? মনে পড়ছে না। তবে এটা বেশ মনে আছে পুজোর সময় ছবি তুলবো বলে যেই না গিয়েছি খুশি হয়েছে রাঙা। একটা নতুন শাড়ি পরবে না? রাঙা বলেছিল “ধুর! শেষকালে ছবির রাঙাকে যদি চিনতে না পারিস তোরা?” সত্যিই তো এই রাঙাকেই দেখে আসছি সেই কবে থেকে। এইরকম আটপৌরে একটা থান। মাথার ওপর দিয়ে ঘোমটা টানা। দাদা ইচ্ছে করে নিজের চশমাটা পরিয়ে দিয়েছিল রাঙাকে। ক্যামেরার পেছনে আমরা যারা ছিলাম সবাই হেসেই কুটিপাটি। এবার একটু গম্ভীর গম্ভীর লাগছে তোমাকে। “আর পা টা? দেখা যাচ্ছে তো? না দেখা গেলে বল ঠিক করে নিই। চন্দন তুলসী দিবি না তোরা?” রাঙার মুখে মিটি মিটি হাসি। কি যে বলো না রাঙা! তাকাও দেখি ক্যামেরার দিকে। শরতের রোদ এসে পড়েছে রাঙার গায়ে। আমি মনে মনে প্রার্থনা করছি এমন রোদ যেন এই লেখাটা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। গঙ্গার ধারে এই মুহূর্তে সেই না থাকা বাড়িটা যেন আবার হঠাৎ করে ফিরে আসে। মন কেমনের অলি গলি বেয়ে বহুদিন পরে যেন জেগে ওঠে সবাই এক মুহূর্তের জন্য হলেও।

বাবার ইয়াশিকা ক্যামেরা
কল্লোল লাহিড়ী

প্রচ্ছদ-পরিকল্পনা ও অলংকরণঃ মেখলা ভট্টাচার্য
প্রচ্ছদ-রূপায়ণঃ শোভন সরকার

মুদ্রিত মূল্যঃ ৩৩০ টাকা

#সুপ্রকাশ


Comments

Popular posts from this blog

বাংলায় স্মৃতির পেশা ও পেশাজীবীরা ১।। সম্পাদনা : সুজন বন্দ্যোপাধ্যায়।।

সময় ভ্রমণ।। দার্জিলিং : পাহাড়-সমতলের গল্পগাছা।। সৌমিত্র ঘোষ।।

সময় ভ্রমণ।। সৌমিত্র ঘোষ।।