হাফ প্যাডেলের কাল।। অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

সুপ্রকাশ প্রকাশিত অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামীর স্মৃতিকথন 'হাফ প্যাডেলের কাল' পড়ে লিখেছেন তাপস ব্যানার্জী। আমরা নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি। 
..............................................
পড়ার অভ্যেস আর তেমন নেই।খুব ভালো না লাগলে কোনো বই শেষ করতে পারি না।সেদিন হাতে এলো একটা বই ‘হাফ প্যাডেলের কাল’, লেখক অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী।বইটা পড়তে পড়তে ছোটবেলায় পৌঁছে গিয়েছিলাম।রুদ্ধশ্বাসে পড়েছি। শেষ করার পর মনে হল এই বইটার প্রসঙ্গে দু’একটি কথা বললে, আরো কিছু মানুষ হয়ত আমার তৃপ্তির ভাগীদার হতে পারবেন।
এই বয়সে পুরনো জীবনের স্মৃতি ঘুরে ঘুরে আসে।আমরা মফস্বলে মানুষ, অথচ ওই গ্রামের হাফ প্যাডেলে সাইকেল চালানো ছেলেটির সঙ্গে আমার ছোটবেলার অনেক  কিছুই একেবারে মিলে গেল।বইএর নামটি সঠিক।ওইরকম হাফ প্যাডেলে সাইকেল চালাতে চালাতেই আমরাও বড় হয়েছি।আর ওই ছেলেটির মতই জীবনের ভালোমন্দ বুঝেছি, ধাক্কা খেয়েছি, আনন্দও  পেয়েছি।বইএর ঘটনাগুলো যেন পাতায় সাজানো আমাদের সকলের ছোটবেলা থেকে বড়বেলার দিকে এগিয়ে চলা জীবনের কথা।এমনকি চরিত্রগুলো এত স্পষ্ট ফুটেছে, যে আমি সবাইকে দেখতে এবং চিনতে পারছিলাম।
দাদার পরিণতি যেমন কষ্টকর, ঠাকুমার বেশিবয়সে মৃত্যু ততটা নয়।যৌথ পরিবারে আমিও বড় হয়েছি।লেখকের বর্ণনায় প্রাণ পাওয়া পরিবারে, সবার সঙ্গে সহজেই মিশে যেতে পেরেছিলাম।খুব খেয়াল করে দেখেছি বাচ্চা ছেলেটির মনে ভালোমন্দের দ্বন্ধ, পরিবারের নীতিবোধ এর প্রতি মান্যতা এবং অমান্যতা কেমন সোজাসুজি বলা হয়েছে।আমরা তো ওরকমই ছিলাম।
সত্যি কথা বলতে কি,আমি একজন ফাঁকিবাজ পাঠক।তবে এই বইটা এতটাই ভালো লাগার কারণ, নিজেকে বইটাতে বারবার ফিরে দেখেছি।ওই শৈশববেলায় ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য লেখককে ধন্যবাদ দিই। আর আপনাদের বলি,এই বইটা পড়তে শুরু করুন।তারপর আমার কথাগুলো মিলিয়ে নেবেন।

Comments

Popular posts from this blog

বাংলায় স্মৃতির পেশা ও পেশাজীবীরা ১।। সম্পাদনা : সুজন বন্দ্যোপাধ্যায়।।

সময় ভ্রমণ।। দার্জিলিং : পাহাড়-সমতলের গল্পগাছা।। সৌমিত্র ঘোষ।।

সময় ভ্রমণ।। সৌমিত্র ঘোষ।।