চক্ষুষ্মতী গান্ধারী।। মিহির সেনগুপ্ত।। সুপ্রকাশ।।

সাধারণের জিজ্ঞাসা কুরুক্ষেত্রের মহাযুদ্ধ বিষয়ে, বিদুর বিষয়ে এবং মহাভারতকারের (দের) পাণ্ডব তথা কৃষ্ণের পক্ষানুবর্তিতা বিষয়ে। যুগ যুগ ধরে নিন্দিত হয়ে আসা দুর্যোধনাদি কৌরবদের বিষয়ে সাধারণ বুদ্ধিতে তারা প্রশ্ন তোলে যে, তারা এমন কী অতিরিক্ত অন্যায়ের আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন, যা পাণ্ডবেরা করেননি? এমনকি বিদুর ভূমিষ্ঠ হওয়ার পূর্বেই, তাঁর উরস-পিতা মহর্ষি ব্যাস, তাঁর গর্ভধারিণীকে বলেছিলেন :

অয়ষ্ণ তে শুভে গর্ভঃ শ্রেয়ানুদরমাগতঃ।
ধর্মত্মা ভবিতা লোকে সর্ব্ববুদ্ধিমতাং বরঃ।।(আদি ১০৯।।২৭)

সেই তিনিও কৌরবদের, বিশেষ করে দুর্যোধনের প্রতি তাঁদের শিশুকাল থেকেই বিরূপ ছিলেন।

গঙ্গার জলক্রীড়ার সময়কার দুর্যোধন কর্তৃক ভীমের নিগ্রহ নিঃসন্দেহে হিংস্রতার পরিচায়ক এবং নিন্দার যোগ্য। অনুরূপভাবে ভীম তাঁর কিশোরকাল থেকেই এই শত ভ্রাতাদের যে নিগ্রহ করে এসেছিলেন, সেই হিংস্রতারও যথোচিত নিন্দাবাদ কি হওয়া উচিত ছিল না? 

পরিণামে বুঝি কোনো যুদ্ধই ধর্মযুদ্ধ নয়, কোনো যুদ্ধই কখনও ধর্ম হতে পারে না। যুদ্ধ বা যুদ্ধেচ্ছা ক্ষমতাকামী মানুষের স্বভাবধর্ম। তার সঙ্গে পুণ্যকর্মের কোনো যোগ নেই, বরং পাপকর্মেরই আছে। 

মিহির সেনগুপ্ত এই আখ্যানে দেখিয়েছেন, স্বেচ্ছান্ধা হলেও গান্ধারী দেখতে পেয়েছেন সত্যকে, বুঝতে চেয়েছেন ধর্মযুদ্ধের নামে কুুরুকুলের দু-পক্ষকে লড়িয়ে দেওয়ার অন্তরে থেকে যাওয়া আসল কারণ। 

চক্ষুষ্মতী গান্ধারী
মিহির সেনগুপ্ত

প্রচ্ছদ : সৌজন্য চক্রবর্তী 

মুদ্রিত মূল্য : ৩৪০ টাকা

সুপ্রকাশ

Comments

Popular posts from this blog

বাংলায় স্মৃতির পেশা ও পেশাজীবীরা ১।। সম্পাদনা : সুজন বন্দ্যোপাধ্যায়।।

সময় ভ্রমণ।। দার্জিলিং : পাহাড়-সমতলের গল্পগাছা।। সৌমিত্র ঘোষ।।

সময় ভ্রমণ।। সৌমিত্র ঘোষ।।