শঙ্কর মাস্টার। বরুণদেব। পোস্ট ১

দক্ষিণে ভাগীরথীকে নিয়ে জেগে থাকা নদীয়া জেলার এক প্রান্তিক জনপদ, মাটিয়ারি, লোকমুখে মেটেরি। ইতিহাসের চলমান ধারায় অপর পাড়ের ইন্দ্রাণী নগরের সাথে তার নিত্য আলাপন। আঠারো কিলোমিটার দূরে, উত্তর-পূর্বে, পাল ও সেন বংশের স্মৃতি নিয়ে দেবলগ্রাম। অতীতের ইন্দ্রাণী নগর নাম বদলে দাঁইহাট। দেবলগ্রামও বদলে নিয়েছে তার নাম, সে আজ দেবগ্রাম। মুকুন্দ চক্রবর্তীর চণ্ডীমঙ্গল, বিপ্রদাসের মনসামঙ্গলের মেটিরির ঘাটে ঘাটে 'গল্প বলে নদীর জল'।

মাটিয়ারি জেগে থাকে লাঙলের ফলায়, বর্গীর হানায়, জমিদারের খাজাঞ্চিখানায়, পেতলের কারখানায়। বেঁচে থাকে ধর্মে ও জিরাফে। বৈষ্ণবের খোলের বোলে, ফজরের আল্লা-হু আকবর ভোরে, জেগে থাকে। জেগে থাকে পাঁচালিতে, কবিগানে, কৃষ্ণযাত্রায়, রামযাত্রায়, পালাগানে। 

কবিগানে, কৃষ্ণযাত্রায়, রামযাত্রায়, বোলানে, আলকাপে, যাত্রাপালায় গ্রামীণ সংস্কৃতি শতধারায় প্রবাহিত হয়েছে আবহমান কাল ধরে। বাংলার শিল্প সংস্কৃতির জগৎ তিল তিল করে গড়ে উঠেছে এইসব ছোটো ছোটো জনপদকে ঘিরে। মঞ্চ জেগে থাকে। জাগিয়ে রাখে মঞ্চ। ছায়া ছায়া মায়া জড়িয়ে ধরে মঞ্চকে। দিলদারের পোশাক পরে নেয় একজন মানুষ। শঙ্কর মাস্টার। ছায়া ছায়া আলো শঙ্কর মাস্টারের চোখে মুখে। হ্যারিকেনের আলোয়, গোল্ডেন ঈগল খাতার পাতায়, আর্টেক্স পেনের চলনে শঙ্করমাস্টার লিখে চলে যাত্রার সংলাপ। রাত্রি গভীর হয়। স্বপ্নে শঙ্কর মাস্টার সংলাপ আওড়ায়—

মঙ্গল কর ঠাকুর। আমার পলান্ন চাই না। ডাল-ভাতের যেন অভাব না হয় ঠাকুর।
..................
যেসব মঞ্চের কথা, যে কুশীলবদের কথা বাদ দিয়ে আমাদের সংস্কৃতির ইতিহাস লেখা সম্ভব নয়, এ বই তাঁদের কথা— এ কথাই আমাদের ইতিহাস, এই ইতিহাসই বঙ্গ সংস্কৃতির অন্তরকথা। 

শঙ্কর মাস্টার
বরুণদেব

প্রচ্ছদ ও অলংকরণ : অদ্বয় দত্ত

আসছে... এই বৈশাখেই। 
সুপ্রকাশ

Comments

Popular posts from this blog

বাংলায় স্মৃতির পেশা ও পেশাজীবীরা ১।। সম্পাদনা : সুজন বন্দ্যোপাধ্যায়।।

সময় ভ্রমণ।। দার্জিলিং : পাহাড়-সমতলের গল্পগাছা।। সৌমিত্র ঘোষ।।

সময় ভ্রমণ।। সৌমিত্র ঘোষ।।