এক যে ছিল গ্রাম। মেড় গড়ন
দুগ্গা পুজোয় আমাদের দুটো মজা। একটা মজা চলে অনেক দিন ধরে। সেই ‘মেড়’ গড়ার প্রথম দিন থেকে, মানে যেদিন গোপাল ছুতার প্রথম এসে দুগ্গামেলার চাতালে এসে উপুড় হয়ে শুয়ে তিনবার মাথা ঠুকে বলবে – মা, মা, মাগো!
তখন কিন্তু
মা দুগ্গা
কোথাও নাই। মেড়ের খাঁচায়
কতকগুলা শুকনো, পচে যাওয়া খড়ের পুঁটলি। আগের বারে ভাসান দেওয়ার দশ পনের দিন পরে যখন মেড়কে পুকুর থেকে তোলা
হয়েছিল, তখন
ঠাকুরদের শরীর গলে গিয়ে কেবল খড়ের কাঠামোটাই ছিল। সারা বছর ধরে শুকোতে শুকোতে পচতে পচতে সেগুলো
কালচে রঙ ধরেছে।
আমরা
গোপাল ছুতারকে জিজ্ঞেস করতাম – তুমি মাটিতে পড়ে এমন ‘মা মা’ কর কেনে? মা তো জলে গলে গেছে।
সে বলত, - মায়ের একটা রূপ গলে গেছে,
এখন অরূপ হয়ে আছন। এবেরে মাকে আমি রূপ দিব তো। তার লেগে মায়ের কাঠামোয় আমাকে হাত পা লাগাতে
হবে। তাই অরূপ মায়ের কাছে মাথা ঠেকিয়ে
তার অনুমতি লিয়ে লিই।
গোপাল
ছুতারের সব কথা ঠিক বুঝতে না পারলেও এটুকু বুঝেছিলাম যে সে এবার ঠাকুর গড়তে শুরু করবে
আর পাঠশালায় যেতে কিছুতেই আমাদের মন করবে না। মাঝে মাঝেই আমাদের পেট ‘বাইজব্যেক’ আর পাঠশালা কামাই করে বারেবারে বাহ্যে যাবার নাম করে মাঠে একটু বসেই চলে আসব দুগ্গামেলায়। গোপাল প্রথমেই পচা খড় টেনেটুনে ফেলে দেবে আর পুরাতন খড়ের উপর নতুন খড় চাপিয়ে
সুতলি দড়ি দিয়ে টানটান করে বেঁধে ঠাকুরের গলা থেকে পা পর্যন্ত খড়ের মূর্তি তৈরি করে
ফেলবে। মা দুগ্গা, তার চার ছেলেমেয়ে, বাহন সিংহ; আর
মোষের পেট থেকে বেরিয়ে আসা মইষাসুর – এতগুলা ঠাকুরের খড়ের শরীর
একদিনেই খাড়া হয়ে যাবে। কার্তিকের ময়ূর, গণেশের ইঁদুর আর মোষের শরীরে খড় দিতে লাগে না,
দু মেটে করার সময় শুধু মাটি দিয়েই তাদের বানিয়ে ফেলবে গোপাল। ‘কেনে খড় নাই ওদের’ – জিজ্ঞেস করলে বলবে – উয়াদের শরীরে হাড় নাই, শুধুই মাংস। তাই খড় নাই, শুধু এক তাল কাদা।
আমরা
শিখে গেলাম ঠাকুরের শরীরে হাড়ের বদলে খড় থাকে।
পরের
দিন থেকে গোপালের সঙ্গে কাজে লাগবে চৈরা পাড়ার বংশী। গোপালের চাইতে প্রায় আধ হাত উঁচু বংশীর
হাত-পায়ের পেশি
বটের ঝুরির মতো শক্তপোক্ত। ঠাকুরের শরীরের মাংস তৈরি করতে গায়ের জোর আর খাটার দম লাগে অনেক। গোপালের কোনটাই নেই, তার যা কিছু কেরামতি হাতের
আঙুলে। একতাল মাংস
তৈরি করে তার হাতে দিলে সে নিমেষে তার দশ আঙুলের যাদুতে ভগবানের তৈরি অবিকল সব বস্তু
আর প্রাণী বানিয়ে দিতে পারে। কিন্তু মাংস তৈরি করার রকমসকম আলাদা ধাতের। তিন রকমের মাটি মিশিয়ে অল্প অল্প জল দিয়ে
দু-পায়ে দলতে
হবে অনেকক্ষণ ধরে। তারপরে মিহি করে খড় কুচোতে হবে বিশাল বঁটিতে করে। কুচনো খড় আর ধানের তুষ সেই মিশেল মাটিতে
ছড়িয়ে দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তার উপরে বিভিন্ন ভঙ্গিতে নেচে নেচে মাংস তৈরি করবে বংশী। তারপর সেই আঠালো কাদা থেকে একটা একটা করে
তাল পাকিয়ে গোপালের সামনে সাজিয়ে দেবে সে। তবেই না গোপাল সেই মাংসের তাল ঠাকুরের শরীরে
লাগিয়ে অবিকল মানুষের মতো হাত পা কোমর বুক আর গলার নীচ পর্যন্ত তৈরি করে তার উপরে একটা
সরু বাঁশের বাতা লাগিয়ে এক মেটের কাজ শেষ করতে পারবে!
এই এক
মেটের কাজ শেষ করতে বংশী আর গোপালের তিন দিন লেগে যায়। মেড় তৈরি করার জন্যে গোপাল কিছু টাকাপয়সা
আর অনেক পুণ্যি পায়। সেই পুণ্যির জোরেই গোপালের পুত্রসন্তান লাভ হয়েছে। এই গল্পটা অনেক পুরনো, আমার জন্মের আগের। বিয়ের অনেক বছর পরেও গোপালের বউয়ের বাচ্চা
হচ্ছিল না। তারপরে যখন
ভালুকখুন্যার ডাঙ্গায় বসানো রিফিউজিরা আমাদের গাঁয়ের লোককে বুঝিয়ে দিল যে সবাকার মঙ্গলের
জন্যে মা দুগ্গার পূজা বছর বছর করা খুব দরকার, তখন হুমগড়ের মূর্তি-গড়িয়ে গোপাল ছুতারকে মা দুগ্গার মেড় গড়ার বরাত দিল গাঁয়ের
লোক। গোপাল মেড়
গড়ার আগে ভুঁইয়ে গড়াগড়ি দিয়ে মায়ের কাছে মানত করেছিল, আমাকে পুত্রসন্তান দাও
মা, আমি যদ্দিন বাঁচব তোমার মেড় গড়ে যাব তায় এই গাঁয়ের লোক আমাকে
পয়সা দেক বা না দেক। বছর না ঘুরতেই গোপালের বউয়ের পুত্র হল। তারপরে গোপালের গড়া দুগ্গা মূর্তির সুনাম দিকে দিকে
ছড়াল। দূর দূর জায়গা
থেকে তার ডাক আসতে লাগল। কিন্তু এই গাঁয়ের মেড়ে আগে হাত না লাগিয়ে অন্য কোথাও যায় না গোপাল।
না চাইতেও
কিছু পয়সা গোপালকে দেয় এই গাঁ কিন্তু বংশীর কেবল পুণ্যিটাই পাওনা। এই পুণ্যির জোরে, অনেক দিন পরে, আমি তখন বড় ইস্কুলের মাথার দিকে উঠে গেছি, বংশী পুলিশের
চাকরি পেয়েছিল। শোনা যায়, এই চাকরি পাওয়ার পিছনে গ্রামের যাত্রাদলে রাম ভীম ইত্যাদি ভালো ভালো লোকের
পার্ট করা চন্দ্রশেখরের হাতও ছিল। যাত্রার কথা পরে। আগে মেড়ের কথা শেষ করি।
এক মেটে
করে দিয়ে গোপাল যে সেই চলে গেল আর তার দেখা নাই। পাঁচ দিন যায়, দশ দিন যায়, ঠাকুরদের মাটির গা শুকিয়ে তাতে ফাট ধরেছে। বিচ্ছিরি লাগছে দেখতে। আমাদের ধৈর্য থাকছে না। কবে আসবে গোপাল? আসবে তো? পনেরো দিনের দিন গোপাল দেখা দিল, তার সঙ্গে আমাদের চেয়ে
খানিক বড় একটা ছেলে। আমাদের চোখে দুগ্গামেলা আবার ঝলমল করে উঠল। গোপালের পিঠে একটা চটের বস্তা, ছেলেটার পিঠে আর একটা। বস্তায় আছে পলি মাটি আর বালি মাটি। ছেলেটা গোপালের চ্যালা, ঠাকুর গড়তে শিখছে তার কাছে। সারাদিন ধরে সে একটা বড় চালুনি নিয়ে পলি
আর বালি মাটি চালতে লেগেছে। চালা হয়ে গেলে গোপাল সেই দুরকমের মাটি মিশিয়ে তাতে অল্প অল্প জল
ঢেলে নরম করছে। নরম হয়ে গেলে
সেই মাটি ঠাকুরদের গায়ে লেপে ফাটল ভরাট করে পলেস্তরা করছে গোপাল। আরম্ভ হয়েছে দো-মেটের কাজ। এই কাজটাই সব কাজের সেরা। চলবে সাত-আট দিন ধরে। গোপালের আঙুল এবার ভেলকি দেখাবে। সে যে যেমন তেমন মিস্ত্রি নয়, উঁচুদরের শিল্পী
– এই কাজই তার প্রমাণ। এই কথাটা ঝর্নাডাঙ্গার বড় রায়ের। অনেক লেখাপড়া করে বড় রায়ের মাথা খারাপ হয়েছে। তাই আমরা তার এই ‘শিল্পী’ কথাটার মানে বুঝিনি কিন্তু এটা যে গোপালকে বাহবা দেওয়ার কথা সেটা বুঝেছি।
দো মেটের
দ্বিতীয় দিনে গোপালের ঝোলা থেকে অনেক কিছু বেরোবে। পলিমাটি চেঁছে মসৃণ করার কাঠের তক্তি, সরু ধারালো বাঁশের ছিলা,
ছোট ছোট ন্যাকড়া আর ছোট বড় কাঠের ছাঁচ, সবই অনেকগুলো
করে। ঠাকুরের গায়ে এখন মাংসের উপর চামড়া
বসবে। হাত-পায়ের আঙুল হবে,
আর হবে মুখ। সকলের মুখ ছাঁচে হবে না, যেমন গণেশ, সিংহ, মইষাসুর, মোষ আর ময়ুরের মুখ গোপাল ছাঁচ ছাড়াই করে ফেলবে
তার আঙুলের কেরামতিতে। আমরা সব বুঁদ হয়ে দেখতে থাকব ঠাকুরের গায়ের চামড়া গোপাল কেমন করে
তক্তি আর ভিজে ন্যাকড়া দিয়ে ঘষে ঘষে চকচকে করে তুলছে, তাদের হাত-পায়ের আঙুল, আঙুলের মাথায় নখ অবিকল সুন্দর দেখতে মেয়েদের
মতো হয়ে উঠছে। খুব বেশিক্ষণ বুঁদ হয়ে আমাদের দেখতে দেবে না গোপাল। হঠাৎ-ই নিজের হাতের সরঞ্জাম ফেলে রেখে মেড়ের দিকে
পিছন ফিরে চার হাত পায়ে ভর দিয়ে সিংহের মতো মাথা নাড়তে নাড়তে মুখ দিয়ে বিকট আওয়াজ করে
আমাদের ভড়কে দেবে। আমরা প্রথমে ভয় পাব তারপরেই মজা পেয়ে হিহি করে হাসতে হাসতে বলব – সিংহের মামা ভোম্বলদাস
বাঘ মেরেছে গোটা পঞ্চাশ।
গোপাল
ঠাকুরও গড়ে, গোপাল মজাও করে। বড়রা তাকে ভোম্বল বলে ডাকেন। একবার গ্রামের যাত্রায় সে নাকি ভোম্বলের
পার্ট করে সবাইকে হাসিয়ে কুটিপাটি করে দিয়েছিল। গোপাল এখন আর যাত্রা করে না, শুধু তার মেড় গড়ার খুদে
দর্শকদের মাঝে মাঝে চমকে দিয়ে হাসিয়ে দেয়।
দো-মেটে হলেই ঠাকুরদের শরীর
আস্ত হয়ে ওঠে। তিনদিন বাদেই তিন মেটে। সোজা কাজ। বংশী এক বস্তা কাঁচা বেল পেড়ে নিয়ে আসবে। তারপর খড়িমাটি গোলা জলের সঙ্গে বেলের আঠা
ভালো করে মিশিয়ে দেবে। গোপাল তখন শণের মোটা ব্রাশ দিয়ে আঠালো খড়িমাটির জল ঠাকুরদের সারা গায়ে লেপে দেবে। একবার দুবার তিনবার। ব্যাস! তিন মেটের কাজ শেষ। আমরা বেলের আঠার গন্ধ নাকে নিয়ে বাড়ি ফিরব। খেয়েদেয়ে ঘুমোতে যাওয়ার সময়ও সেই গন্ধ আমাদের
সঙ্গে থাকবে।
দেখতে
দেখতে পুজোর দিন এসে গেল। যখন আর দুদিন মাত্র বাকি ষষ্ঠী পুজোর, তখন হরেক রকম রঙের কৌটো আর গাদাখানেক সরুমোটা তুলি
নিয়ে গোপাল এসে হাজির চার মেটের কাজ সারতে। দেখতে দেখতে রঙের গন্ধে ঘোর লাগে আমাদের। এই দুদিন আর রাতে ঘুমোবে না গোপাল। আমাদেরও কেউ কেউ বাড়ি না গিয়ে দুগ্গামেলার চাতালে শুয়েই ঘুমিয়ে
পড়বে। পঞ্চমীর রাতে
গর্জন তেলের তীব্র গন্ধে ঘুম ভেঙ্গে উঠে দেখব ঝলমলে রঙে সেজে উঠেছে মেড়। কেবল মা দুগ্গার চোখটি আঁকা বাকি। ভোরের বাতাস বইতে শুরু করেছে। গোপালের এক ধমকে আমরা চোখ বুজে ফেলব। অনেকক্ষণ পরে গোপাল বলবে - চোখ খোল। আমরা চোখ মেলে দেখব সারা মেড়টিকে একটি সাদা
কাপড়ে ঢেকে ফেলেছে গোপাল। মায়ের ‘চক্ষুদান’ হয়ে গেছে। ষষ্ঠী পূজার আগে আর কেউ দেখতে পাবে না তার
মুখ।
মেড় গড়া
আর যাত্রা দর্শনের মাঝে আর একটা ছোট মজা ছিল আমাদের। বাড়ির বড়োরা আমাদের ‘ঠাকুর দেখার পয়সা’
দিতেন। ভালো কথায় সেটাকে পার্বণী বলে কিন্তু তখনও আমরা এই ভালো কথাটা শিখিনি। ঠাকুর দেখার পয়সা মানে তামার পয়সা। তখনও নয়া পয়সার মুখ দেখতে দেরি আছে কয়েক
বছর। তামার এক পয়সা, ফুটো পয়সা – গোল, মাঝখানে ফুটো, এক আনি,
দু আনি – এইসব পয়সা বড়দের কাছে পাওয়া যেত। দুগ্গামেলা ঘিরে চার পাঁচটা দোকান বসে যেত। মনোহারি আর মিষ্টির। পয়সা পেলেই মিষ্টির দোকানে গিয়ে ঘুরঘুর
করি। রসগোল্লা, পান্তুয়া, গুড়ের লাড়ু, বুটের লাড়ু আর জিলিপি। গরম গরম জিলিপির দিকে আমার বেশি টান। আর ঝালবড়া। বেসনের সঙ্গে শুকনো লংকার গুড়ো মিশিয়ে ডুমো
ডুমো করে ভাজা। পূজা যতদিন, সবদিনই সকালে গরম গরম ঝালবড়া
দিয়ে মুড়ি খাওয়া। ঠাকুর দেখার পয়সা বড়ো তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যায়। একবার দিলে কেউ দুবার তো দেবে না। এইসময় বাড়িতে কুটুমবাটুম এলে তাদের কাছে
ঘুরঘুর করি। ঠাকুর দেখতে
কে ক’পয়সা দিয়েছে
বলতে থাকি। শুনে কেউ বলতেও
পারে, - এই
নে আমার এক আনা।
একবার তো ভারী আশ্চর্যের ব্যাপার হলো। আমার তিন
নম্বর বড়ো দাদা গৌরীশঙ্কর নন্দীগ্রাম কলেজের মাস্টার। সব বারেই
উনি সবার থেকে বেশি পয়সা দেন। একটু বড়,
যেমন আমরা যারা পাঠশালা যাচ্ছি, তাদের দু আনা আর
তার থেকে ছোট যারা তাদের এক আনা। সেবার পকেট থেকে বের করে যেটা দিলেন, দেখে বিশ্বাস যাচ্ছি না – একটা চকচকে সিকি! সিকি মানে চার আনা। আমাদের চারদিনের
জিলিপি ঝালবড়া খাওয়া হয়ে যাবে।
দশমীর দিন সন্ধেবেলায় ভাসান। খুব হইহই কাণ্ড হয় বটে, কিন্তু মজা নেই কিছু। বিকেলবেলায়
মা, খুড়িমা, অনাদির মা, আরও অনেক মা খুড়িমা ঠাকুরের পায়ে আলতা,
মাথায় সিঁদুর আর মুখে মিষ্টি গুঁজে দেবেন। ভালো করে
তাকিয়ে দেখি খুড়িমার চোখে জল। তখন আমারও কেমন কান্না কান্না পায়।
তারপর সন্ধে নামলেই বিশ পঁচিশ জন জোয়ান মানুষ জড়ো হয়। তারা চারখানা
মোটা লম্বা বাঁশ মেড়ের তলায় ঢুকিয়ে শক্ত দড়ি দিয়ে বাঁধে। তারপর হইহই
করতে করতে চার পাঁচ জন করে লোক প্রতিটি বাঁশের সামনে পিছনে ধরে মেলা থেকে মেড়কে বের
করে। বাইরে
বেরোলেই বাঁশে কাঁধ দিয়ে মেড় উপরে তুলে তারা চিৎকার করে – জয় মা দুগ্গা!
আসছে বছর আবার হবে।
সবাই একসঙ্গে সেই কথাটাই বার বার বলতে বলতে সারা গ্রামে মেড় নিয়ে ঘুরতে থাকে। শেষ কালে
ফিরে এসে দুগ্গামেলার কাছেই
চৈরা পুকুরে মেড় নিয়ে নেমে যায় তারা। বাঁশসুদ্ধু মেড়কে উলটো করে ডুবিয়ে দিয়ে তারা নিজেরাও
পুকুরে ডুবে যায়। যারা কাঁধে বাঁশ নেওয়ার সুযোগ পায়নি, পিছনে পিছনে ঘুরছিল, তারাও পুকুরের পাড় থেকে জলে ঝাঁপ মারে। আমার ভয়
হয় সবাই জল থেকে উঠে আসতে পারবে তো! কেউ মেড়ের নীচে চাপা পড়ে যায় যদি!
মিছিমিছি ভয়। জল তোলপাড় করে খানিক সাঁতার কেটে সবাই উঠে আসে পাড়ে। ঝুড়িতে করে
গরম জিলিপি এনে তাদের যখন খাওয়ানো হচ্ছে তখন দুগ্গামেলা অন্ধকার। সেদিকে তাকিয়ে
বুকটা ফাঁকা হয়ে যায় আমার। চোখ বুজলে দেখতে পাই মা দুগ্গা তার ছেলেমেয়েসহ চৈরা পুকুরে মুখ উপুড় করে
শুয়ে আছেন।
.......................................
এক যে ছিল গ্রাম
অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী
.......................................
প্রচ্ছদ : সুলিপ্ত মণ্ডল
অলংকরণ : অদ্বয় দত্ত
মুদ্রিত মূল্য : ৩২০ টাকা
সুপ্রকাশ
Comments
Post a Comment