বাবার ইয়াশিকা ক্যামেরা।। কল্লোল লাহিড়ী।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

সুপ্রকাশ প্রকাশিত কল্লোল লাহিড়ীর বই 'বাবার ইয়াশিকা ক্যামেরা' পড়ে লিখেছেন দেবশ্রী মাইতি বিশ্বাস। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি।
...........................................................................

#বুক_রিভিউ
বাবার ইয়াশিকা ক্যামেরা
লেখক- Kallol Lahiri 
প্রকাশক-সুপ্রকাশ 
মুদ্রিত মূল্য- ৩৩০.০০

কি বলা যাবে একটা লোককে যে বারে বারে তার নিজের জীবনটা নিয়ে লিখে যেন আমার জীবনের গল্প লিখে যায়। যে আমার এক দশকেরও পরে জন্মেছে। যার সঙ্গে আমার কোনো মিল নেই। না বয়সের, না লিঙ্গের, না বেড়ে ওঠার জায়গার, না বেড়ে ওঠার সময়ের, না বেড়ে ওঠার অভিজ্ঞতার। 
তবুও কেন তার বই পড়লে মনে হয় এতো আমারও গল্প, এতো আমাদেরও গল্প। 
আমাদের পরিবারকে দেশ ছাড়া হতে হয় নি। কিন্তু আমার মায়ের পরিবারের মূল ছিলো ওপারে। আমার দাদু দিদা চাকরির সূত্রে তখনকার অবিভক্ত বাংলার যেখানে যেখানে পোস্টেড ছিলেন, ঘটনাচক্রে সেগুলো এ দেশেই ছিলো। কিন্তু মায়ের জেঠামশাইদের উপর দেশবিভাগের আঘাত পড়েছিলো। যদিও সম্পন্ন ব্যবসায়ী পরিবার হওয়ার জন্য এদেশেও তাঁদের এসে ওঠার বাড়ি ছিলো। কিন্তু তাঁরা সঙ্গে করে কিছুই আনতে পারেন নি। তাঁদের কষ্টের গল্প শুনেছি। কিন্তু সে গল্প সাতচল্লিশের।

দেশ ছাড়ার গল্প শুনেছি আরও বিশদে তাঁদের কাছে, যাঁরা আমাদের বাড়িতে রান্না করতেন, আমরা যাঁদের হাতে মানুষ হয়েছি,পিসি বলতাম এবং ভাবতাম যাঁদের। কতো সম্পন্ন গৃহস্থ ছিলেন তাঁরা। সাতচল্লিশেও যাঁরা দেশ ছেড়ে আসেন নি, সত্তরের সুকঠিন সময়ে খানসেনাদের অত্যাচারে এক কাপড়ে তাঁদের এপারে পালিয়ে আসতে হয়েছিল। স্বামীকে হারিয়ে সন্তানদের বড়ো করার জন্য তাঁদের অন্যের বাড়িতে রান্নার কাজ করতে হয়েছিল কিন্তু নিজেদের স্বাভাবিক আত্মমর্যাদাবোধ তাঁরা বিসর্জন দেননি। কাজের বাড়িকেও নিজের বাড়ি হিসেবেই দেখতেন আর আমাদের দেখতেন সত্যিকারের ভাইপো-ভাইঝি হিসেবে। 
আমার মা-বাপীও নিজের দিদির মর্যাদাই তাঁদের দিতেন। 

তাঁদের মুখে শোনা মন খারাপ করা সব গল্প আজ কল্লোল লাহিড়ীর'বাবার ইয়াসিকা ক্যামেরা' পড়ে মনে গেলো। এঁদের এতো কাছ থেকে দেখেছি, এতো ঋণী এঁদের কাছে, অথচ লেখার সময় মনে পড়ে না তো এঁদের কথা! 

আরবেলিয়ার কাছাকাছি একটা গ্রাম যদুরহাটির মেয়ে আমার ঠামা। যাঁর বাপের বাড়ির ভালো অবস্থা,পাশ করা ডাক্তার ভাই হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র লম্বা হবার অপরাধে মাত্র ন বছর বয়সে তাঁর বিয়ে হ'লো গ্রাম্য হোমিওপ্যাথ পাঁচ বছরের মেয়ে নিয়ে বিপত্নীক আমার ঠাকুরদাদার সঙ্গে। যিনি ছিলেন প্রচন্ড খাদ্যরসিক, অতিথিবৎসল, পড়াশোনা নিয়ে থাকা মানুষ। সংসার কিভাবে চলছে, সবাই খেতে পেলো কিনা, জমিজমা দেখেশুনে রাখার প্রয়োজন, সেসব নিয়ে মাথা ঘামাতেন না বা হয়তো মাথা ঘামানো প্রয়োজন সেটাও বুঝতেন না! 

সেই ছোট্ট ন বছরের মেয়ে কিভাবে এসে সেখানে মানিয়ে নিলো আমারও কোনোদিন ঠামাকে জিজ্ঞাসা করা হয় নি। কিন্তু যেটা দেখেছি নিজের চোখে তা হলো তাঁর সম্মান। সবার বড়ো, বাড়ির বড়ো বৌ এর প্রতিষ্ঠা তাঁর ছিলো আমাদের জ্ঞাতিগুষ্ঠিসহ বিশাল পরিবারে। দেখেছি তাঁর উদারতা,দেখেছি তখনকার প্রচন্ড রক্ষণশীল সময়েও বাড়ির তথা গ্রামের প্রথম বাঙালবৌ আমার মাকে সব বৌমাদের চেয়ে বেশি ভালোবাসতে, নির্ভর করতে।

দেখেছি আমার বৈষ্ণব ঠাকুমা সব কাজ করে সময় পেলেই যাচ্ছেন কীর্তন শুনতে।গুনগুন করে গান করছেন।সেই গানগুলো আমি আর কারোর মুখেই কখনো শুনিনি।হয়তো ঠামার ছোটো বেলার গান।বই পড়ছেন। চৈতন্য চরিতামৃত পড়তে ভালোবাসতেন। আরও কতো বই। তাঁর দুটো বই আমি বাঁধিয়ে আমার কাছে রেখেছি যত্ন করে।

বই এর যে যত্ন আমি আমার দাদুর বাড়িতে শিখেছিলাম। পুজোর সময় বাড়ি ফিরে বহরমপুরের বাড়ির কয়েক আলমারি ভর্তি বই যেদিন মামু রোদে দিতো, সেদিন কল্লোল যেমন লিখেছেন, তেমনি দিদা বাড়িতেও উৎসব হ'তো। আমি তো স্কুল ছুটি পড়লেই দাদাই-দিদা আর মাসির সঙ্গে বহরমপুর চলে যেতাম !মা- বাপী ভাই- বোনকে নিয়ে পরে যেতো। 

পুজোর সময় প্রধান পর্ব ছিল গোটা বাড়ি পরিষ্কার করা আর বই রোদে দেওয়া। আমিও মামু-মাসির পিছন পিছন সেতু-বন্ধনের কাঠবিড়ালির মতোই বই রোদে দিতাম, গুছোতাম। আর সবচেয়ে মজার ব্যাপার ছিলো মামুর ছোটো বেলার বইগুলো খুলে খুলে পড়তে বসে যাওয়া। এমনিতেও ও গুলোর উপর আমারই অধিকার ছিলো। বই এর আলমারির চাবিতে আমার অ্যাক্সেস ছিলো। আলমারি খুলে পছন্দ মতো বই নিয়ে কালো ঘরের বারান্দার কোনে গিয়ে পড়তাম। বাড়ির কেউ আমাকে ডাকতো না খাবার সময় ছাড়া। সারাদিন পড়াশোনা নেই, শুধু গল্পের বই পড়তে পাবার অবাধ স্বাধীনতা ছিলো আমার দাদুর বাড়িতে। কি বই পড়ছি সেটাও কেউ নজর রাখতো না। কারণ ছোটোদের বই, বড়োদের বই এই কৃত্রিম ভাগাভাগিতে আমার মামু বিশ্বাস করতো না। বাড়িতে যতো বই ছিলো সবই রুচিসম্মত বই বলে সে বিশ্বাস করতো। আর মামুর অনুমতিতেই আমার সব বই পড়া, মামুর বন্ধুদের আড্ডায় উপস্থিত থাকতে পারা, বাড়ির ব্রিজের আড্ডায় মামুর বগলের ফাঁক দিয়ে খেলা দেখা, সব, সঅব কিছুতেই আমি সামিল হ'তে পেরেছিলাম। এখন বুঝতে পারি কি প্রচন্ড দূরদর্শী ছিলেন আমার থেকে বয়সে মাত্র দশ বছরের বড় আমার নিজের মামা। এই সব অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যাওয়াতে যে শিক্ষা আমি পেয়েছি, প্রথাগত শিক্ষার চেয়ে তার মূল্য আজও বেশি আমার কাছে! 
এই অভিজ্ঞতা আমি কল্লোলের বইতে পাই না। কিন্তু অন্তর্নিহিত সারমর্মটা একই। একটা মূল-হারানো শিক্ষক পরিবারের গল্প, স্বামী-স্ত্রী দুজনেই শিক্ষক। আমার দিদাবাড়ির গল্প।

তাঁদের বাড়িতে এসে থাকছেন মাঝে মাঝেই তাঁদের উদ্বাস্তু আত্মীয়স্বজন। যাঁরা এপারে আছেন, তাঁরা যদি পরিবার সম্পর্কে শুধু নন, গ্রাম সম্পর্কেও আত্মীয় হন তো যোগাযোগ রাখার আন্তরিক চেষ্টা, ন্যুনতম চাহিদায় সবাইকে নিয়ে ভাগ করে, আনন্দ করে থাকার মানসিকতা, পড়াশোনার প্রতি আন্তরিক আগ্রহ, আবৃত্তি প্রতিযোগিতা,আঁকা প্রতিযোগিতায় অবশ্যম্ভাবী অংশগ্রহণ,এই সব আমার ছোটো বেলাকে মিলিয়ে দেয় কল্লোলের ছোটো বেলার সঙ্গে। 

আর মিলিয়ে দেয় একটি ক্যামেরা। জানিনা সে ক্যামেরার নাম গোত্র। কোনোদিন মনে হয়নি জেনে নেবার কথা। কিন্তু বাড়িতে রয়েছে অ্যালবামের পর অ্যালবাম।

আমার দাদাইবাড়ির কালেকশন।যাতে রয়েছে আমার মায়েদের ছোটো বেলার ছবি, দিদা-দাদাইএর ছবি, আত্মীয়স্বজনদের ছবি, সবকটা বাড়ি, যেখানে যেখানে মায়েরা থেকেছে সব আছে।ছোটো বেলা মানেই ছিলো কোনো অনুষ্ঠানে সবার জমায়েত আর ছবির পরে ছবি। সেগুলো প্রিন্ট করা আর অ্যালবামে লাগানো। তাই ধীরে ধীরে আমার মামুর কালেকশনও তাতে যোগ হয়েছে। 

তার জীবনের নেশাই ছিলো ভালো ক্যামেরা, দামী লেন্স কেনা আর বেড়াতে যাওয়া। সারা ভারত ঘুরে বেড়াতো আমার বাবা আর মামা। তারপর তারা ফিরে এলে আমরা অন্ধকার ঘরে প্রজেক্টারে ছবি দেখতাম সেইসব জায়গার। 

এই ভাবে মামা,মাসি,বাবা-মায়ের ছবি তোলার নেশা আমার মধ্যেও সংক্রামিত হয়। 
বিয়ের পর আমাদের অনুরোধে মামুই কিনে এনে দেয় একটা অলিম্পাস ক্যামেরা। বহুবছর তা আমাদের সঙ্গী ছিলো। এখনো আলমারিতে আছে সে। রিল আর পাওয়া যায় না। 

তারপর এলো ডিজিটাল নিকন্ ক্যামেরা। সেও মামুরই পছন্দ করে কিনে দেওয়া। 
এখনও মনে আছে বহরমপুর থেকে আমি ভোর রাতে বেরিয়ে সক্কাল সক্কাল ধুবুলিয়ায় এসেছিলাম ক্যামেরা নিতে। আগের রাতে আনন্দে ঘুম হয় নি!অত দামি ডিজিটাল ক্যামেরা আসছে ঘরে! পি এফ থেকে লোন নিয়ে কেনা হয়েছিল মনে আছে! 

যেখানে যেখানে বেড়াতে গেছি, সে গেছে সঙ্গে। তারপর বড় মেয়ে হোস্টেলে গেলো কেরালায়, তারপর বিদেশেও। সব জায়গায় সঙ্গে গেলো নিকন্। সব সে ডকুমেন্টেড্ করে রাখলো। 
মেয়ে ঘরে ফিরে এলো যতোদিনে, ততোদিনে হাতে এসে গেছে ক্যামেরা ওলা ফোন। বড়ো ক্যামেরা এখন ঘরেই পড়ে থাকে বটে কিন্তু ছবি তোলার তো বিরাম নেই। 

আর আমার বিরাম নেই সেই ছবিগুলো প্রিন্ট করার। যে যুগে লোকে আর অ্যালবামে ছবি সাজায় না, ছবি থাকে ফোনের পিকচার গ্যালারিতে। আমি সেই যুগে বসেও আমার পূর্বপুরুষদের অভ্যাস বজায় রেখে অ্যালবাম সাজিয়ে যাচ্ছি। 

আমার বিশ্বাস আমাদের পরিবারের চার প্রজন্মের অ্যালবাম থেকে ওই সময়ের একটা দলিল তৈরি করা সম্ভব। যে কাজ কল্লোল করেছেন। তাই আমি ওঁর বাবার এই সময়কে ধরে রাখার অভ্যাসের সঙ্গে আমার দাদুর,বাবা, মা,মামা মাসির, আমার, আমাদের পরিবারের সবার অভ্যাসকে মিলাতে পারছি। 
পারছি আমাদের সেই হারিয়ে যাওয়া সময়কে ধরতে, যা এক দশক পেরিয়েও খুব বদলায়নি। ষাটের দশকের মাঝামাঝি জন্মানো,কৃষ্ণনগরে সত্তরের দশকে ছেলেবেলা কাটানো মেয়েটার স্মৃতিতে যদিও খাদ্য আন্দোলন,নকশাল আন্দোলন, বাংলাদেশের যুদ্ধ, বাড়ির সামনের মাঠের মিলিটারির ট্রেঞ্চ খোঁড়া,শচীন সেনের বিশাল আমবাগানে তাদের ক্যাম্প, রিফিউজি ছাউনিতে ভরা কারবালা মাঠ, বীভৎস এক কনজাংটিভাইটিস, যার নাম ছিলো জয়বাংলা,অশান্ত এক সীমান্তবর্তী জেলা শহর, যার গা থেকে ইংরেজ প্রভাব তখনও পুরোপুরি মুছে যায়নি। আবার নবদ্বীপের নৈকট্য থাকে দিয়েছিলো শিক্ষায় অগ্রবর্তী হবার গৌরব, এই সবেরই প্রভাব বেশি তবু সত্তরের দশকে জন্মানো, আশির দশকে শিল্প-প্রধান জেলা হাওড়ার বালীতে বড় হওয়া একটি ছেলের সঙ্গে সরাসরি অভিজ্ঞতার মিল না থাকলেও মূল্যবোধ আর সংবেদনশীলতার মিলটুকু কাঁদিয়ে দেয়! 

হ্যাঁ কাঁদলামই আমি আজ। অসুস্থতার কারণে অফিস না গিয়ে আজ শুয়ে শুয়ে এবারের বইমেলা থেকে কেনা এই বইটা একটানা পড়তে পড়তে কাঁদলাম । 

সুখে কাঁদলাম। কল্লোলের অনবদ্য ভাষায় ওই সময়টাকে ছুঁতে পারার সুখে। 

দুঃখে কাঁদলাম। ওই যে মানুষগুলো, যাঁরা আজ ছায়া ছায়া আমার মনের মধ্যে রয়েছেন। আমার মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে যাঁরা একেবারে হারিয়ে যাবেন। 

যাঁদের কথা কোনোদিন লেখা হ'লো না, তাঁদের কথা ভেবেই আজ আমার চোখে জল এলো! 

তাঁদের লড়াইএর ফলে, আত্মত্যাগের ফলেই তো আজ আমরা এই জায়গায় এসেছি। কিন্তু এমনই তাঁরা ছিলেন যে তাঁরা যে কিছু লড়াই করেছেন, যুগান্তকারী কিছু করেছেন, আত্মত্যাগ করেছেন, তা তাঁরা বুঝতেন না। তাঁরা তাঁদের স্বাভাবিক জীবন কাটিয়েছেন, হেসে খেলে।

এই কথাটা ভারি গুরুত্বপূর্ণ। কল্লোলের ছবিতে যেমন ওর মায়ের মুখে সবসময় গালভরা হাসি, সবার মুখেই প্রসন্নতার ছাপ, তেমনই তাঁরা কিন্তু সবাইকে নিয়ে প্রবল দারিদ্রের মধ্যেও খুব আনন্দে থাকতেন। জাগতিক কষ্ট থাকলেও মানসিক দুঃখ ছিলো না। ঝগড়াঝাঁটি হতো তো বটেই কিন্তু মিলমিশের, প্রসন্নতার কোনো অভাব ছিলো। ভাগ করে নেবার আপন করে নেবার মানসিকতার অভাব ছিলো না। 
আমরা ওঁদের মতো হ'তে পারলাম না, এই দুঃখে কাঁদলাম। 

আনন্দে কাঁদলাম। কারণ এই যে সাধারণ সুখ-দুঃখে মাখা সাধারণের কথা, এটা পড়ার একটা আন্তরিক আনন্দ আছে। আমার ঠামাবাড়ির মাটির দাওয়ায় বসে আমার ঠামার গায়ের গন্ধ নিতে নিতে ঠামার হাতের ঝুলে যাওয়া চামড়াতে হাত দিয়ে দিয়ে পিলপিল করার আনন্দের মতো এক নিজস্ব আনন্দ।

বইটা পড়তে গিয়ে হঠাৎ,হঠাৎ এক একটা এমন শব্দ পাই যে বুকের ভিতরটা কেমন ছ্যাঁৎ ছ্যাঁৎ করে ওঠে। মনে হয়,'আরে এই যে লেখা রয়েছে 'একেবারের মতো' এই বাক্যবন্ধগুলো তো আমরা সেই ছোটো বেলায় বলতাম! তারপর আর বলিনি, শুনিওনি!'

সেইসব ভুলে যাওয়া শব্দগুলো যেন মাঝে মাঝেই বইটার ভিতর থেকে উঁকি মারে। বলে,'কি রে খুকু, চিনতে পারছিস!' আর এই বুড়ি সংসারী দেবশ্রী মাইতির বুকের মধ্যে থেকে সেই অগোছালো,অসংসারী ,বই আর তাস ছাড়া কিছুই না জানা খুকুটা জেগে ওঠে! এই পুরোনো আমিকে পুরোপুরি হারিয়ে না ফেলার আনন্দ কারোর সঙ্গে ভাগ করার নয়। যাঁরা যাঁরা বইটা পড়বেন, এই আনন্দ তাঁরা নিজেদের মতো করেই অনুভব করবেন। 

পরিশেষে লেখককে বলি আপনার 'নাইনটিন নাইনটি আ লাভ স্টোরি' পড়লাম। কিন্তু ওই বই শুধু আত্মস্থ করতে হয়, অনুভব করতে হয়। ওটা নিয়ে কিছু লেখার মতো কলমের জোর আমার নেই। শুধু চিরদিন বইটা আমার কাছে থাকবে এইটুকু জানি!আপনি ভালো থাকবেন। তাহলে আমরাও অনেকে ভালো থাকতে পারবো। ধন্যবাদ🙏

Comments

Popular posts from this blog

বাংলায় স্মৃতির পেশা ও পেশাজীবীরা ১।। সম্পাদনা : সুজন বন্দ্যোপাধ্যায়।।

সময় ভ্রমণ।। দার্জিলিং : পাহাড়-সমতলের গল্পগাছা।। সৌমিত্র ঘোষ।।

সময় ভ্রমণ।। সৌমিত্র ঘোষ।।