জাফির অ্যাডভেঞ্চার। আহমেদ খান হীরক।
"মাস খানেক পর জ্ঞান ফিরল জাফির।
তার আগে তাকে নিয়ে যে কত চিকিৎসা কত সেবা কত প্রার্থনা ঘটে গেছে তার বিন্দুমাত্র খবর সে রাখে না। চেতন-অবচেতনের মাঝে পৃপার স্পর্শটুকু সে আলাদা করতে পারত। তখন তার খুব শান্তি শান্তি লাগতো । দারুণ ঘুম পেত। পৃপার শরীরের ঘ্রাণ নিতে নিতে সে আবার ঘুমিয়ে পড়ত।
চোখ মেলে বুঝতে পারল সে আসলে খোলসের মধ্যে রয়েছে। পেটের কাছটা ব্যথা করছে। কেন করছে কে জানে!
ধীরে ধীরে খোলস থেকে বেরোনোর চেষ্টা করল জাফি। খোলসটা একটু ফাঁকা করতেই বাইরে উদ্বিগ্ন মুখ দেখল জুনোর। সাথে সাথে খোলস বন্ধ করে দিল জাফি। এক মাস পর চোখ খুলে আর যাই হোক জুনোকে দেখতে চায় না সে।
ভেতর থেকে ব্রের কণ্ঠ শুনল জাফি, ‘বন্ধু কেমন আছে, জুনো ?”
জুনো বলল, ‘ভালো কিংবা ভালো না... বুঝতে পারছি না। একবার মনে হলো নড়াচড়া দেখলাম।'
‘বলো কী...' ব্রের কণ্ঠ উৎসাহী ‘কখন?’
এরপরেই আরেকটি কণ্ঠ শুনতে পেল জাফি। যে কণ্ঠ শোনার জন্যই জন্মেছিল সে, এমন মনে হয় তার।
.................
বাইরে শত শত শামুক ও ঝিনুক নিজেদের কাজে ব্যস্ত। ব্রে তাদের ঘুরে ঘুরে জানাল, জাফির জ্ঞান ফিরেছে... আর জাফির ভেতর তৈরী হচ্ছে দারুণ এক মুক্তো...
সবাই হো করে আওয়াজ তুলল। সবাই খুশি।
ব্রে বলতেই থাকল, তোমরা জানোই না... কী অসম্ভব একটা মুক্তো জন্মাচ্ছে... একই সাথে নানান রঙ আছে তার মধ্যে...
নানান রঙচঙ মিশিয়ে নানান বাড়াবাড়ি কথা বলতে থাকল ব্রে। কী যে আনন্দ হচ্ছে তার। তার পা টলছে মাথা ঘুরাচ্ছে সবছুিই আজ তার ভীষণ ভালো লাগছে! ভীষণ ভীষণ ভীষণ ভালো লাগছে! অন্যের জন্য যে নিজের এত খুশি লাগতে পারে, ব্রে র তা জানা ছিল না। ভালো লাগছে জাফিরও, ভালো লাগছে পৃপারও। এই প্রথম তারা পরস্পরকে ধরে নতুন এক অ্যাডভেঞ্চারের কথা ভাবতে শুরু করল। যে অ্যাডভেঞ্চারে তারা থাকবে পাশাপাশি... বাঁচবে অন্যদের জন্য, দেখবে নতুন এক পৃথিবীকে।"
জাফির অ্যাডভেঞ্চার
আহমেদ খান হীরক
প্রচ্ছদ ও অলংকরণঃ মেখলা ভট্টাচার্য
মুদ্রিত মূল্যঃ ১৮০ টাকা
#সুপ্রকাশ
Comments
Post a Comment