অবিকল্প মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়। শতঞ্জীব রাহা
প্রবেশিকা পরীক্ষা দেওয়ার আগেই মানিকের মাতৃবিয়োগ হয়, তখন মানিকের বয়স ষোলো বছর।
১৯৩৫ এর মধ্যেই অর্থাৎ লেখকজীবনের পূর্ণ প্রতিষ্ঠার কাল সূচিত হবার আগেই মৃগীরোগে আক্রান্ত হন। ক্রমিক আর্থিক অসম্পন্নতার আঘাত, অর্থের জন্য অতিরিক্ত পরিশ্রম, বাধ্যতামূলক বহুপ্রসূতা—সব মিলিয়ে আমৃত্যু এক অলাতচক্রে পাক খেয়েছেন মানিক। রোগের সূত্রেই তিনি অতি প্রত্যক্ষভাবে মধ্যবিত্তের ক্রমবর্ধমান সমাজবিজ্ঞানগত অন্তর্বিরোধকে দেখতে পান। ফলত কোনোরকম চেষ্টাকৃত আরোপণ ছাড়াই মানিকের রচনায় সময়ের, সমাজ-সংসারের বস্তুপরিচয়ের প্রামাণ্যতা থেকে যায়। —তাঁর রচনার রসায়নে দ্রবীভূত হয়ে থাকে আবহকালের পরম্পরা থেকে জাত বিশ শতকের কয়েক দশকেের ভারতীয় তথা বাঙালি জীবনের সত্য পরিচয়। সমকালের সঙ্গে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পৃক্ততার অপর একটি প্রান্ত স্পর্শ করে থাকে তাঁর মতাদর্শগত বিশ্বাস, সময়কে বোঝার প্রচেষ্টা-তাড়িত তাঁর তাত্ত্বিক ও সক্রিয় কর্মকাণ্ড—দিগন্তের মতোই তার মাটি-ছোঁয়ার আকাঙ্ক্ষা।
আড়ালে বসে মানুষকে নাচাবার মতো পুতুলওয়ালা যদি কেউ থাকেন, তবে সেই নিয়ামককে শশী ডাক্তার ‘হাতে পেলে দেখে’ নিতে চেয়েছিল। আসলে মানিক নিজেই সারা জীবন সেই পুতুলওয়ালার সন্ধান করেছেন, তাঁকে হাতে পেয়ে দেখে নিতে চেয়েছেন। বুঝতে চেয়েছেন—এই বিষমবাহু সমাজের আসল নিয়ন্ত্রক কারা, কারা আড়ালে বসে খেলাচ্ছে, কারা মানুষকে প্রতি মুহূর্তে লোভ আর লালসার পথে ঠেলে দিচ্ছে? কারা মানুষকে প্রতি মুহূর্তে এই ধারণা দিচ্ছে যে, প্রাত্যহিক ও জৈবিক চাহিদার বাইরে বা ঊর্ধ্বে আর যা কিছু আছে তার কোনো মূল্য নেই, মানুষের স্বপ্নকথা আসলে ইতরের ব্যঙ্গের সামগ্রী?
মানিকের সারা জীবন এই অনুসন্ধান জারি ছিল। জারি ছিল বলেই তিনি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অবিকল্প মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
শতঞ্জীব রাহা
#সুপ্রকাশ
অনলাইন অর্ডার লিঙ্কঃ https://thinkerslane.com/?product=abikalpa-manik-bandyopadhyay
বাংলাদেশে বইটি পেতে সুপ্রকাশের নাম করে নোকতা(বুবুক), তক্ষশিলা বা বাতিঘরে অর্ডার দিতে পারেন।
Comments
Post a Comment