Posts

Showing posts from January, 2025

অলৌকিক বাগান।। শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য।। সুপ্রকাশ।।

Image
আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় সুপ্রকাশ : ৪৯৯ .................................................................. অশীতিপর নিত্যময়ী একদিন তাঁর বাগানে দেখা পেলেন ঊর্ধ্বতন ষষ্ঠ পুরুষ সামন্তমশাইয়ের। তিনি একটি শেয়ালের রূপ নিয়ে বারে বারে ফিরে আসেন। নিত্যময়ী অনুভব করেন, তাঁকে পাহারা দেন ছায়ার মধ্যে ছায়া হয়ে বাস করা পিতৃপক্ষ। তবু হনুমানের উপদ্রব তাঁর বাগানে, তবু জাগতিক মৌচাকে সিক্ত তাঁর হৃদয়, নিত্যময়ী জানেন মায়া থেকে যায়। কাল আবর্তিত হয়, যা ঘটেছে ও যা ঘটবে, অন্তরীক্ষের সম্ভাবনা নিয়ে আবির্ভূত হয় তাঁর সামনে। এই উপন্যাস একটি আঞ্চলিকতার আখ্যান রচনা করে। সেই ভৌতিক লোকালয়ের অযুত রহস্যকে পেটের ভেতর লুকিয়ে স্তব্ধ অপেক্ষা করে অলৌকিক বাগান, আগমনীর প্রত্যাশায়।­­­ অলৌকিক বাগান শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য প্রচ্ছদ : সৌজন্য চক্রবর্তী মুদ্রিত মূল্য : ২০০ টাকা সুপ্রকাশ

বীরেশ্বর সামন্তর হত্যা রহস্য।। শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য।। সুপ্রকাশ।।

Image
আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় সুপ্রকাশ : ৪৯৯ ................................................................. "ঝুলতে থাকা লোকটাকে অঞ্চলের মশামাছিরাও চিনত, আর দূরান্তের যারা তাকে নামে চিনত না তারা অন্তত পঞ্চায়েত প্রধান হিসেবে সম্ভ্রমের চোখে দেখতে বাধ্য থাকবে কারণ তার মহিমা ছিল দূরগামী আর ছায়া দীর্ঘ। বীরেশ্বর সামন্ত নামটা এতদিনে ছোটো হয়ে সামন্তবাবু অথবা প্রধান স্যারে রূপান্তরিত হয়েছিল আর গ্রামের রুলিং পার্টি তাকে সম্মানসূচক বড়দা নামে অভিহিত করলেও পুরোনো দিনের মানুষদের কেউ তাকে ছোটোবাবু বলেও ডেকেছিল কারণ তার বাবা যোগেশ্বর সামন্তর গল্পগাছা ততদিনে দক্ষিণে কাকদ্বীপ আর উত্তরে কুলপি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। মানুষের সম্বোধন তত বেশি, যতদূর যায় তার মহিমা। যে মাঠে সে ঝুলছিল তাকে পেরিয়ে কিছুদূর হেঁটে গেলে নদীর রাস্তা চোখে পড়ে যেখানে জেটির দিকে গড়িয়ে যাওয়া পথের দু'ধারে বাজার যারা ফুলেফলে পল্লবিত হয়েছে ক্রমবিস্তীর্ণ বীরেশ্বর সামন্তের প্রতাপে। এই বাজারের মালিক ছিল সে। ফুলুরি, বেগুনি, মিষ্টির দোকান, গামছা, জালের সুতো, নৌকোর পালের জিন, কাপড়ের গুমটি, ডাল-মশলার আড়ত, মনিহারি অথবা একটু এগোলে টোটো স্ট্...

শেষ মৃত পাখি।। শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য।। সুপ্রকাশ।।

Image
আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় সুপ্রকাশ : ৪৯৯ ................................................................. পাহাড়ে বৃষ্টি নিষ্ঠুরতা এবং নির্জনতার উদযাপন ঘটায়। দার্জিলিং-এর বর্ষাকালকে যদি এক কথায় ব্যাখ্যা করতে হয়, তাহলে তার নাম অবিশ্রাম, বিরতিহীন বৃষ্টি। কখনও আস্তে এবং কখনও মুষলধারে। যখন বৃষ্টির বেগ কম, পাহাড়ের নীচ থেকে মেঘের দল উঠে এসে কুয়াশায় ঢেকে নিচ্ছে চরাচর, আমার ঘরের জানালার কাচ ভেপে উঠছে। রাস্তাঘাটের স্যাঁৎসেঁতে ভেজা অন্ধকার ভেদ করে মাঝে মাঝে ছিটকে আসছে এক ঝলক ছাতার রং অথবা বাহারি পোশাকের আঘ্রাণ। কম সংখ্যায় টুরিস্ট। ম্যাল, চৌরাস্তা, কেভেন্টোর্সের ছাদ— সমস্তই ফাঁকা ফাঁকা। সন্ধে হলে একদম নিঝঝুম হয়ে যায়। ঘরের দেয়াল ঘেমে ওঠে। আড্ডা জমায় অদ্ভুত দেখতে পাহাড়ি পোকার দল। বনের ধারের পাইন, ইউক্যালিপ্‌টাস, বার্ডের ডাল থেকে সারাদিন টুপটাপ করে জল পড়বার আওয়াজ। ক্ষণিকের জন্য কুয়াশা কেটে গেলে আবছা জলরঙের মতো দেখা যায় নীচের দরিদ্র বস্তি। এই অবিরাম অবসাদের মতো বৃষ্টি মনকেও কীরকম বিকল করে দেয়। কাজ করতে ভালো লাগে না। সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। মনে হয় জানালার বাইরে এই ...

এক যে ছিল গ্রাম।। হাফ প্যাডেলের কাল।। গরিলার ঘরকন্না।। যেসব গল্প ছোটো থেকে বড়ো হয়।। সুপ্রকাশ।।

Image
আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় সুপ্রকাশ : ৪৯৯ ................................................................ ১. এক যে ছিল গ্রাম     অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী এই বিশাল ভুবনের এক অন্ধকার কোণে এক অখ্যাত গ্রাম। অনেক দূরের এক নিঝুম মাঠে পড়ে থাকা তার খড়ো চালের পাঠশালা, পাঠশালার পণ্ডিত আর পড়ুয়া, পণ্ডিতের রুলবাড়ি কিংবা দিয়াশলাই, পড়ুয়াদের বইদপ্তর; গাঁয়ের ছোটখাটো সব মানুষ, চিতু ওনা লুড়কা লেউল জগা ওন্তা বুড়া মথুর বদনা সত্য পদি কালীমতি উরা, তাদের সঙ্গী ঘোড়া-কুকুর-ইঁদুর-সাপ; তার গাছ আর ফল, আম-জাম-তাল-মোল; তার দুগ্‌গা আর ভাদু পূজা, যাত্রাপালা, তার বকুল গাছের ছায়ায় রামমন্দিরের শীতল চাতাল; তার শিলাই নদীর দ’ আর খালের বাঁধ— এই সবকিছু নিয়েই ‘এক যে ছিল গ্রাম’। প্রচ্ছদ : সুলিপ্ত মণ্ডল অলংকরণ : অদ্বয় দত্ত মুদ্রিত মূল্য : ৩২০ টাকা ২. হাফ প্যাডেলের কাল     অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী হাফ প্যাডেলে পা দিয়ে আকাশে ডানা মেলার সঙ্গে সঙ্গে গড়ে উঠছে চিত্তাকাশ, মননের গতি; বয়ঃসন্ধির অনুভব, হৃদয়ের আবেগ, যৌনতার স্ফুরণ। বালক থেকে কিশোর হওয়ার পথে জীবন যখন সমগ্রতায় ভরে উঠতে চায়, তখন তার সমান্তরালে উড়ে চলা এক...

অভিমানভূম।। একটি শিশির বিন্দু।। শুভদীপ চক্রবর্তী।। সুপ্রকাশ।।

Image
আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় সুপ্রকাশ : ৪৯৯ .................................................................. ১. একটি শিশির বিন্দু     (বজবজ ও বাটানগর সংলগ্ন অঞ্চলের ছুঁয়ে দেখা      গল্প-কথা-রাজনীতি-ইতিহাস)      শুভদীপ চক্রবর্ত্তী এ বই ছুঁয়েছে বাটানগর-বজবজ এলাকার ইতিহাস-ভূগোল-রাজনীতি—সবকিছুকেই। অথচ এ বই একেবারেই বাঁধাগতের ইতিহাস-বই নয়। বরং বলা ভালো একটা দীর্ঘ সময়ের যাত্রাপথ। যারা জায়গাটাকে ভালোবেসে থেকে গেছে এখানে, যারা চলে গেছে ভালো না বেসে, যাদের ফিরতে চাইলেও ফেরা হয় না, এই লেখা হয়তো তাদের জন্যই। শুধুমাত্র একটা জায়গার নামের কারণ খুঁজতে খুঁজতে, হাত রেখে ফেলা আরও গভীর কোনো গল্পে। আর সেই গল্প খুঁজতে খুঁজতে দেখা হয়ে যাওয়া, এখনকার গল্পগুলোর সঙ্গেও। এই লেখা আসলে অতীত আর বর্তমানের ভিতর দিয়ে চলতে চলতে খুঁজে ফেরা বাড়ির পাশের সেই আরশিনগরের হদিশটুকু। প্রচ্ছদ : সুলিপ্ত মণ্ডল মুদ্রিত মূল্য : ৩৪০ টাকা ২. অভিমানভূম     শুভদীপ চক্রবর্তী ঋতু বদলালে, বদলায় প্রকৃতিও। আর এক ঋতু থেকে অন্য ঋতুতে বয়ে যেতে যেতে, মরশুমি আরো কত মন ছুঁয়ে যায় আমা...

বাংলার দ্বাদশ ভৌমিক ও সমকালীন ভূমি ব‍্যবস্থা।। উৎপল চক্রবর্তী।। সুপ্রকাশ।।

Image
ভূমি ও ভূমি রাজস্ব প্রশাসনের সূত্রে দ্বাদশ ভৌমিকদের সময়কালটি বাংলার আর্থ-সামাজিক ইতিহাসে নানা কারণে উল্লেখযোগ্য হয়ে আছে। কৃষক বঞ্চনা এবং তার ফলশ্রুতিতে দীর্ঘ কৃষক বিদ্রোহও এই সময়কালের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। এই সময়কালের ভূমি ব্যবস্থা ভারতের অন্যান্য অংশের মতো বাংলাতেও বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের জন্ম দিয়েছিল, যা সামাজিক সম্পর্কগুলিরও নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছিল। অনেক পরে ইংরেজ শাসকরা এই প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যেই এক অবিচ্ছেদ্য ক্ষুদ্র প্রজাতন্ত্র (লিটল্ রিপাবলিক) কে অনুসন্ধানের প্রয়াস নিয়েছিলেন। একদিকে দেশীয় পরম্পরা, অন্যদিকে ভিনদেশীয় শাসকের প্রশাসনিক দৃষ্টিভঙ্গি, এই দুইয়ের মাঝখানে বাংলার ষোড়শ শতকের শেষ থেকে আঠারো শতকের সূচনা পর্যন্ত সময়কালটি বেশ বিচিত্র এবং জটিল হয়ে উঠেছে। ভূমিসম্পর্কের ভিতর দিয়ে এই সময়কালের একটি নিবিড় পাঠ নেওয়াই এই বইয়ের উদ্দেশ্য। বাংলার দ্বাদশ ভৌমিক ও সমকালীন ভূমি ব্যবস্থা উৎপল চক্রবর্তী প্রচ্ছদ : সৌজন্য চক্রবর্তী মুদ্রিত মূল্য : ২৫০ টাকা সুপ্রকাশ প্রকাশিতব্য। কলকাতা বইমেলায় সুপ্রকাশ : ৪৯৯।

প্রতিযাত্রা।। দুর্লভ সূত্রধর।। সুপ্রকাশ।।

Image
ভিক্ষুদল আহতদের চিকিৎসার কাজে নিজেদের নিয়োজিত করলেন। সারবানবিহারের বৈদ্যকাচার্য মহাভিক্ষু প্রবোধাশিস এবং তাঁর শিষ্য মহাঅনিন্দ্যর চিকিৎসাবিদ্যার প্রয়োগ দেখে তাঁরা যতটুকু শিখেছিলেন সেটুকু আজ কাজে লাগলো। ইতোমধ্যেই আহতদের পূর্বপল্লীর অন্তরাপনে নিয়ে আসা হয়েছে। অধিকাংশেরই অগ্নিক্ষত। পলায়ন করতে গিয়েও অনেকে আহত হয়েছে, অনেকেই হস্ত-পদে আঘাতপ্রাপ্ত, বহুজনের দেহে যষ্ট্যাঘাতের চিহ্ন! অর্থাৎ আক্রমণকারীরা যষ্টিদ্বারাও আঘাত করেছে। প্রিয়ঙ্কর সৌভাগ্যক্রমে অন্তরাপনের নিকটেই ঘৃতকুমারীর একটা বিস্তৃত গুম্ব পেয়ে গেলেন। ঘৃতকুমারীর রস দগ্ধক্ষতের মহৌষধ। পিপল তরুর খোঁজে গেলেন ভিক্ষু বুদ্ধশাসন। পিপলের বক্কলে ঘৃত মাখিয়ে দগ্ধ ত্বকে লাগালে আরাম পাওয়া যায়। দীপ্তঙ্কর ও অভয়ঙ্কর ধর্মাঙ্কুরকে নিয়ে অন্তরাপনের দোকানিদের কাছ থেকে চেয়েচিন্তে ঘৃত, নালিকের তৈল এবং তিল তৈল সংগ্রহ করে আনলেন। এই তিন তৈলাক্ত পদার্থই দন্ধিল ক্ষতের জ্বালা উপশমে খুবই কার্যকর। দেখা গেল পূর্বেই আহতদের সেবায় ভিক্ষুণীসঙ্ঘের সেবিকারা আত্মনিয়োগ করেছেন। বধূ নম্রতাও আছেন। প্রিয়ঙ্কর তাঁদের গৃহস্থ বাড়ি থেকে চন্দন ও হরিদ্রাচূর্ণ সংগ্রহ করে আনার জন্য অনুরোধ করলে...

লুপ্তপ্রায় মাটির বাড়ি।। সুশান্ত বিশ্বাস।। সুপ্রকাশ।।

Image
বাংলায় মাটির বাড়ির বৈচিত্র্য ও কৃৎকৌশল নিয়ে সুপ্রকাশ অঞ্চলচর্চা গ্রন্থমালার এই বই 'লুপ্তপ্রায় মাটির বাড়ি'। সুপ্রকাশ অঞ্চলচর্চা গ্রন্থমালা ১১ ___________________________ লুপ্তপ্রায় মাটির বাড়ি সুশান্ত বিশ্বাস মুদ্রিত মূল্য : ২৫০ টাকা সুপ্রকাশ কলকাতা বইমেলায় প্রকাশিতব্য।

বাঘাচাঁদের কথাকাব্য।। অনিল ঘোষ।। সুপ্রকাশ।।

Image
'রণসাজে সজ্জিত হয়ে চলল বাঘাচাঁদ শিবতলি অভিমুখে। পিছুপিছু তার সঙ্গীসাথী, গাঁ-গঞ্জ ভেঙে আসা অসংখ্য মানুষজন। রণধ্বনি সকলের মুখে। হাতে অস্ত্রের ঝনঝনা।— শিবতলি গাঁয়ে বাঘা আসিয়া পৌঁছিল হাত তুলিয়া যুদ্ধের নিয়ম শিখাইল। রক্ত না ঝরাইবে না কাটিবে মাথা বশ করিবে ভয় দিয়া তারপরে কথা। বলব কী ভাই, শিবতলির ভিন ধরমের, ভিন জেতের মানুষজন, যাদের চেহারা নাকি দানবের মতন, নিষ্ঠুর বলে নাম কিনেছে ইতিমধ্যে, যারা কথা নেই বার্তা নেই গরিবগুর্বো মানুষের জমিন কেড়েছে, ঘর থেকে বেঘর করেছে— হ্যাঁ বাবা, তারাই বাঘাচাঁদের হাঁক শুনে আর সঙ্গীসাথীর যুদ্ধ উন্মাদনা দেখে হয়ে গেল একেবারে ইঁদুরের পারা। মুখ-বুক শুকিয়ে আমসি। আরে বাবা, এটা তো মানতেই হবে, ওরাও হাত পা-ওয়ালা গরিবগুর্বো মানুষ। ওরাও এই বাদায় এসেছে বাঁচতে। আর বাঁচার টানেই লড়াই। বাঁচার টানেই শিকড় গেড়ে বসার চেষ্টা। তবে এও সত্যি, ওরা বাদার নিয়ম জানে না। তাই ভাইচারায় দাগ বসিয়েছে। এজন্য শাস্তি ওদের প্রাপ্য। সঙ্গীসাথীর এমন হুংকারে ওরা হাতে অস্ত্র নয়, সোজা হাত তুলে আত্মসমর্পণ।— বাঘাচাঁদের পায়ে ওরা লুটিয়া পড়িল একে একে আসিয়া দোষ মানিল। হাত ধরিয়া বাঘা বলে, শোনো ভাই বাদার দেশে দুর্...

চেতনার পথ জুড়ে শুয়ে আছে (পরিবেশ সম্পর্কিত আক্রমণ-হত্যা: ইতিহাস-বর্তমান)।। অনির্বাণ সিসিফাস ভট্টাচার্য।। সুপ্রকাশ।।

Image
জেরি-গ্লোরিয়া-আর্জাগা-টোটো'দের গল্পের শুরু ম্যাকলিং ডুলাগের হাতে। ১৯৭৪ থেকেই চিকো নদীর ওপর চারটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য জমি তদারকি করছিল ন্যাশনাল পাওয়ার কর্পোরেশন। আগের বছরেই স্থানীয়দের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই সরকারকে চিকো বাঁধের প্রযুক্তিগত সম্ভাব্যতার বিতর্কিত 'রিপোর্ট' দেয় জার্মান কোম্পানি লেমেয়ার ইন্টারন্যাশনাল। এই চারটি বাঁধের মধ্যে ১,৪০০ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চলের আদিবাসী ধানজমি, বাগান এবং পবিত্র কবরখানাকে কেড়ে নেওয়া শুধু চিকো-ফোর বাঁধ দেওয়ার পেছনেই ছিল লাখখানেক আদিবাসী উচ্ছেদের ঠান্ডা মাথার পরিকল্পনা। '৭৪ থেকেই ম্যাকলিং-এর নেতৃত্বে প্রতিরোধ। ১৫০ জন স্থানীয় বোনটোক ও কলিঙ্গ আদিবাসী মিলে একত্রে তৈরি করল বোডং বা পিস ফেডারেশন। সরকার সাময়িক সরলেও '৭৫-এর ডিসেম্বরে নখ দাঁত বের করল আবার। চারটি বাঁধের মধ্যে সাদাঙ্গা অঞ্চলের চিকো-টু ও কলিঙ্গর টিংলায়ানের চিকো-ফোর দখল করতে রাষ্ট্রকর্তৃক তৈরি হল কলিঙ্গ স্পেশাল ডেভেলপমেন্ট রিজিয়ন। ১৯৭২ থেকে ১৯৮১-র সেই কুখ্যাত মার্কোস জমানা এবং মার্শাল ল। বাঁধ এলাকায় 'ফ্রি-ফায়ার জোন' তৈরি করে সেনার হাতে একচ্ছত্র গুলিবর্ষণের নির্দেশন...

বাঘাচাঁদের কথাকাব্য।। অনিল ঘোষ।। সুপ্রকাশ।।

Image
'বিদ্যা নদী বিশাল নদী। তার বুকভরা জল, পাড়ভরা জঙ্গল। আকাশে চাঁদ বাঁকা, সাত তারার শরীর বাঁকা, পিঠে বাতাসের চলন বাঁকা। সবাই মিলে যেন বলে, কই যাও হে! বিদ্যা নদীর পাড়ে বসে এইসব সাত-পাঁচ ভাবে বাঘাচাঁদ। ভাবে আর চোখ মেলতে চোখে পড়ে নদীর বুক বেয়ে ভেসে চলেছে ছোট্ট একখানি নাও। ছোট্ট হলেও সুন্দর করে সাজানো। পাতাপুতা আর ফুলে ফুলে ঘেরা। আর তার পাটাতন আলো করে বসে আছে পরমা সুন্দরী এক রমণী। তার মেঘবরণ চুলের রাশি উড়ছে মিষ্টি মধুর বাতাসে। বিশাল বিদ্যার সবুজ বুক ওই রমণীর রূপের ছটায় যেন ঝলমল করছে। আর রূপসীর রূপ পূর্ণতা পেয়েছে ওর হাতে ধরা ধবধবে সাদা বক পাখি। বাঘাচাঁদের চোখ স্থির। বুকের ওঠানামা স্তব্ধ। শরীরের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পাথরের মতো অনড়। কে ওই নারী, যার অমন রূপ বাদার দেশকে আলোকিত করে দিচ্ছে! অবশেষে চোখে চোখ পড়ে দুই মানুষের। পুরুষ আর নারীর। দুজনের দৃষ্টি স্থির। বিস্ময়ে শিহরিত। বাঘাচাঁদের চোখের পলক পড়ে না। মুখের ভাষাও যেন হারিয়ে ফেলেছে। বাদাও যেন গভীর বিস্ময়ে দেখছে দুজনকে। ধীরে ধীরে বাঘাচাঁদ নিজের মধ্যে ফিরতে পারে। মুখের ভাষাও ফিরে পায়। হাসি হয়ে তা ফুটে ওঠে। তখন তাদের মধ্যে কথা হয়। সেকথা এরকম— বাঘাচ...

প্রতিযাত্রা।। দুর্লভ সূত্রধর।। সুপ্রকাশ।।

Image
তবু সুপণ্যকের মনে হলো—তিনি বা অভিদীপ্ত কেউই কোথাও প্রতিশ্রুত নন, আকাঙ্ক্ষিত নন—তবে তাঁরা উৎকণ্ঠিত কেন? নাকি ভিক্ষুণী সুবিনীতার মতো নিজেদের অজ্ঞাতে তাঁরা এই বনভূমির মায়াময় ও ইন্দ্রিয়জ প্রকৃতির ‘শয়তানি জাদু’তে আবিষ্ট হয়ে আছেন! এত অমীমাংসিত, প্রশ্নসঙ্কুল ইদানিংয়ের নিশাচর্যা! উত্তর শরতের রাতের আকাশে কি এতক্ষণ মেঘ ছিল? নাকি চন্দ্রোদয় হলো এত দেরিতে! শুক্লপক্ষের অপ্রতিহত আলো ছড়িয়ে পড়ল বনভূমিতে। সুপুণ্যক ও অভিদীপ্ত পব্ববল্লির ওপর উপবেশন করে তরুচ্ছায়া-প্রলিপ্ত অদূরবর্তী পণ্ণকুটির ছত্তকের দিকে চেয়েছিলেন—সেটিকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার জন্য শালবৃন্তদ্বারা ছত্তকটি আবৃত করার আর প্রয়োজন আছে বলে মনে হলো না। নিস্তব্ধ চরাচরে বনভূমিকে চমকে দিয়ে কোথা থেকে একটি পাখি তীক্ষ্মস্বরে ডেকে উঠল—'বো-কো-টা-কা'... 'বো-কো-টা-কা'। পরিবদন্তিকা নাকি? কী বলছে পাখিটা এমন অসময়ে? 'বো-কো-টা-কা'... 'বো-কো-টাকা'। কী বলছে পাখিটা?... 'বো-কো-টা-কা'। 'বউ কথা কও' বলছে নাকি! ফিঙে বা বেণে বউদের বাসায় ডিম পাড়ার দিনও তো অতিক্রান্ত হয়েছে—তবে কি তাঁদেরই জন্য এমন রাত্রিকালে পরিবদন্তিকা ফিরে এসেছে ...

প্রতিযাত্রা।। দুর্লভ সূত্রধর।। সুপ্রকাশ।।

Image
অমিতাভ বুদ্ধের শিক্ষার উত্তরাধিকার, আচার্য মহাকনককাঞ্চনের দেশনাকে ধারণ করে মহাঅনিন্দ্য, স্থিতধীমান, পরিপালক, সুপুণ্যক, অভিদীপ্ত, এবং দীপ্তঙ্করসহ অপরাপর সক্রিয় উপদিষ্ট ও উপদেশক ভিক্ষুরা সাহসী ও সক্রিয় উপদেশনার মধ্য দিয়ে বিরামনগর ও উদয়নগরীর ক্ষতকে কীভাবে উপশম করলেন—সেই ইতিহাসসম্ভব রোমহর্ষকতা ঘিরে রাখে এই উপন্যাসকে। এই শুভার্জনে বিরামনগরের মহাশ্রেষ্ঠী লোহিতভদ্রক, উদয়নগরীর মহামাত্য বিনীতদেব ক্ষেমেন্দ্রসিদ্ধ ধর্মগুপ্তিক—এমন-কী অতি অকিঞ্চন, জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রহারিত আদিত চন্দবীর, নগরনটী শ্রেয়াপর্ণা, তাঁর সহচরীর দল এবং রক্ষীদলের সর্দার দৈশিন কারোর ভূমিকাই ন্যূন নয়। আর আছেন শ্রেষ্ঠীকন্যাদ্বয় সুধীরা-আবীরা, নীলনয়না উত্তরা-সুপণ্যক-অভিদীপ্ত-আদিতদের তন্ত্রীসৃত সুরবিস্তার। এঁদের হিসাববিহীন আত্মনিবেদনে উপন্যাসের সদর-অন্দর আলোকিত হয়ে ওঠে। .......................................................... প্রতিযাত্রা  দুর্লভ সূত্রধর  প্রচ্ছদ : সৌজন্য চক্রবর্তী  অলংকরণ : অদ্বয় দত্ত  মুদ্রিত মূল্য : ৪৮০ টাকা সুপ্রকাশ  আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় প্রকাশিতব্য স্টল : ৪৯৯

বাঘাচাঁদের কথাকাব্য।। অনিল ঘোষ।। সুপ্রকাশ।।

Image
সুন্দরবনের আকাশে-বাতাসে-ধূলিকণায় ভেসে বেড়ায় অজস্র গল্পকণা। সেসব গল্পে থাকে সেখানকার মানুষের জীবন-সংগ্রামের কথা, জল-জঙ্গল ও নির্মম প্রকৃতির সঙ্গে লড়াইয়ের কথা, রোগভোগ বা শোকতাপের সঙ্গে বাস করার কথা। তাঁদের গল্পে দুঃখ আছে, কান্না আছে, হাসি-উল্লাসও কম নেই। বাঘাচাঁদ একটি কাল্পনিক চরিত্র। 'বাঘাচাঁদের কথাকাব্য' কোনও ঐতিহাসিক কাহিনি নয়, আবার অনৈতিহাসিকও নয়। সুন্দরবনের জল-জঙ্গল-জমি-ভূমিকে কেন্দ্র করে যে মিথ ও ইতিহাস, সে-কথাই লোক-আখ্যানের আঙ্গিকে দু-মলাটে গ্রন্থিত হয়েছে। ................................. বাঘাচাঁদের কথাকাব্য অনিল ঘোষ ................................. প্রচ্ছদ : সৌজন্য চক্রবর্তী অলংকরণ : অদ্বয় দত্ত মুদ্রিত মূল্য : ২৮০ টাকা সুপ্রকাশ প্রকাশিতব্য। আসছে কলকাতা বইমেলায়। স্টল : ৪৯৯

অভিমানভূম।। শুভদীপ চক্রবর্ত্তী।। সুপ্রকাশ।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত শুভদীপ চক্রবর্ত্তীর বই 'অভিমানভূম' পড়ে মতামত জানিয়েছেন সুলেখা অধিকারী। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি।। ....................................................................... অভিমানভূম—নামে টেনেছিল এই বই। অভিমানের তবে ভূমি লাগে! তা কেমন করে নামিয়ে রাখে অভিমান জানতে ইচ্ছে হয়েছিল খুব। না, সে বড় কঠিন কাজ।নামিয়ে রাখা হয়নি বটে তবে জমাট অভিমানের ভূমির খোঁজে বারে বারে মানভূমে ফিরে যাওয়া এক তরুণ সাংবাদিকের লেখার পরতে পরতে সাংবাদিকতা থেকে মনকেমনে হারিয়ে যাওয়া, হারিয়ে যাওয়ার অভিমান বেশি, যার অমোঘ টানে লেখক বার বার ফিরে গেছে মানভূমে। অভিমান বুঝি এমনই 'ঝিরিহিরি বাঁকা লদীর পারা,' মনের কুন কুনে যে সামায় বুঝা ভার। কবুলতে না পারা এক ব্যাথা রাগে দুখে ভাঙতে ভাঙতেও সেই দিকেই টানে। এইখানেই বোধ করি অভিমানের সার্থকতাও একদিক ভেঙে আর একদিক গড়ে দিয়ে যায়। লেখকের এই মনকেমনের সহজ, কাব্যিক ভাষার জন্যেই এই বই পড়া যায়। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে একদিন যে ভূমিতে নিছক ভাগ্যের সন্ধ্যানে সাংবাদিকতা করতে যাওয়া, তারই টানে ভূমিকে নতুন চোখে আবি...

প্রতিযাত্রা।। দুর্লভ সূত্রধর।। সুপ্রকাশ।।

Image
'অজস্র মহাবৃক্ষবেষ্টিত এই মধ্যম-পরিসর বনস্থলীর ঈষৎ রুক্ষ ভুমিতে তাঁদের শকটটির অগ্রভাগ একটি প্রকৃতিসৃষ্ট মৃত্তিকানির্মিত বেদীর আশ্রয় পাওয়ায় এখনকার মতো অর্ধ-প্রণত। এই দীর্ঘ যাত্রায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সাধারণ উদক বা 'সদুজল'। সেই উদকের পিপাবাহী অন্য শকটটিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তিনসারি বৃক্ষ পেরিয়ে পাশ্ববর্তী বনস্থলীতে। সেটি এই বনস্থলীটির তুলনায় অপেক্ষাকৃত সুপরিসর; সেখানেই আজকের মতো অধিকাংশ 'দুসকুটি' বা মণ্ডপাদি স্থাপনা করা হবে। এবং এই ক্ষুদ্রাকার বনস্থলীতে নিশাচর্যাকারীদের পালাক্রমিক আশ্রয়ের জন্য একটিমাত্র মণ্ডপ রচনা করলেই চলবে। জতুরসে রঞ্জিত স্থূল বস্ত্রসহ দুসসকুটি রচনার সামগ্রীগুলি উদকবাহী শকটের পশ্চাদ্ভাগে বিন্যস্ত থাকে। মহোদাচার্য মহাকনককাঞ্চন সম্প্রতি অশীতিবর্ষ বয়স অতিক্রম করেছেন, তিনি শরীরচর্চালব্ধ অটুট স্বাস্থ্যের অধিকারী হলেও বয়ঃক্রমিক প্রাচীনতার কারণে ইদানিং তাঁর নানাবিধ কায়িক সমস্যা দেখা দিয়েছে। বনজ ইন্ধনের ধূম্ররাশি তাঁকে পীড়িত করে বলে তাঁর মূল অবস্থানের বনস্থলীটির কিয়ৎ দূরত্বে এই ক্ষুদ্রাকার বনস্থলীতে রন্ধনের আয়োজন করতে হয়েছে। শকটদুটি সাধারণ গো-শকট ...

হাফ প্যাডেলের কাল।। অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী।। সুপ্রকাশ।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামীর বই 'হাফ প্যাডেলের কাল' পড়ে ইন্সটাগ্রামে মতামত জানিয়েছেন রাহুল। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি। .............................................................. পাঠপ্রতিক্রিয়া  বই : হাফ প্যাডেলের কাল লেখক : অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী সুপ্রকাশ  মুদ্রিত মূল্য : ৩৮০ টাকা .............................................................. বইটি আজ শেষ করলাম, কিছুদিন আগে থেকেই পড়া শুরু করে ছিলাম কিন্তু, সময়ের অভাবের তাড়নায় একদিনে পড়ে শেষ করার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। বইটির সিংহভাগ জুড়ে লেখকের শৈশব, তার প্রথম সাইকেলের প্যাডেলে পা দেওয়া, গ্রামের গণ্ডি পেরিয়ে আস্তে আস্তে শহরে পড়ার সূত্রে আসা, লেখককে আমি বইটিতে অর্দ্ধ নামে পাই। কিছু জানা জায়গাকে জানতে পারি এই বইয়ের মধ্যে দিয়ে (দুর্গাপুর, গড়বেতা, জামশেদপুর, বাঁকুড়া, ইত্যাদি জায়গা)। লেখকের লেখার মধ্য দিয়ে আমরাও যেন শৈশবের ঘটে যাওয়া সব নস্টালজিক মুহূর্তকে কোথাও না কোথাও গিয়ে ফিরে পাই। মেস জীবনের নানান ছবিও এই বইয়ের মধ্যে দেখা যায়। অর্দ্ধ মানে বইয়ের বালকটির সিলেবাসের বাইরে গিয়ে বেশি ব...

লুপ্তপ্রায় মাটির বাড়ি।। সুশান্ত বিশ্বাস।। সুপ্রকাশ।।

Image
প্রকাশিতব্য..... সুপ্রকাশ অঞ্চলচর্চা গ্রন্থমালা ১১ লুপ্তপ্রায় মাটির বাড়ি সুশান্ত বিশ্বাস সুপ্রকাশ।  কলকাতা বইমেলায় স্টল : ৪৯৯

হাফ প্যাডেলের কাল।। অর্ধেন্দুশেখর গোস্বামী।। পাঠপ্রতিক্রিয়া।।

Image
সুপ্রকাশ প্রকাশিত অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামীর বই 'হাফ প্যাডেলের কাল' পড়ে 'পরবাস' জুলাই সংখ্যায় আলোচনা করেছেন রঞ্জন ভট্টাচার্য।  সম্পূর্ণ আলোচনাটির লিঙ্ক রইলো... https://www.parabaas.com/article.php?id=8266

স্মৃতিভারে পড়ে আছি।। সন্ধ্যা রায় সেনগুপ্ত।। সুপ্রকাশ।।

Image
"তোমার মনে আছে কবে তোমার সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয়েছিল? ১৯৫৯ সাল। তেসরা জানুয়ারি। ২রা জানুয়ারি আমাদের নতুন বছরের অর্থাৎ ক্লাশ নাইনের ক্লাশ শুরু হয়েছিল। কিন্তু আমি সেদিন অনুপস্থিত ছিলাম। আমার ছোড়দি, অঞ্জলি, যে আমারই সহপাঠী, স্কুলে গিয়েছিল। স্কুল ছুটির পর বাড়িতে এসেই আমাকে স্কুলের খবর জানিয়েছিল—আমাগো ক্লাশে একটা ছ্যামড়া নতুন ভর্তি হইছে—খুউব ফড্র ফড্র করে। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, আর? আর কী করে? ঠিক আছে। কাইল তো ইস্কুলে যামু, তহন দেখমু। এরকমই মনে মনে ভেবে নিলাম। পরদিন স্কুলে গিয়ে দেখলাম আরও তিন চারজন ছাত্র আমাদের স্কুলে নতুন ভর্তি হয়েছে। আমরা মাস্টার মশাইদের সঙ্গেই ক্লাশে ঢুকতাম। আবার ক্লাশ শেষ হলে মাস্টার মশাইদের সঙ্গেই ক্লাশ থেকে বেরিয়ে আসতাম। টিচার্স রুমের একটা সাইডে আমাদের বসার জন্য বেঞ্চ থাকত। আমাদের ক্লাশ নিতেন অশ্বিনী বাবু। উনি ক্লাশে ঢুকতেন কথা বলতে বলতে। উনি যা বলবেন সঙ্গে সঙ্গে ইংরেজিতে ট্রান্সলেশন করে খাতা নিয়ে দিতে গেছি। অমনি তুমি আমাকে প্রায় টপকে স্যারের কাছে খাতা দিতে গেছ। স্যার কিন্তু হাত বাড়িয়ে আমার খাতাটাই আগে নিয়েছিলেন। তোমার কী রাগ সেদিন! রেগে মেগে বলেই ফেলেছিলে— '...

বাঘাচাঁদের কথাকাব্য।। অনিল ঘোষ।। সুপ্রকাশ।।

Image
"এ সেই কালের কথা, যখন বাদাবন হাসিল করতে এসেছিল মানুষ। কাঁহা কাঁহা মুলুক থেকে এসেছিল তারা। হুই রাজমহল পাহাড় থেকে, মেদিনীমল্ল, ধলভূম, রাঢ়দেশ থেকে। আর নদী-নালা-খাল-বিলের মানুষ আসছে তো আসছেই। কেন আসছে? দেশে তখন ঘোর আকাল। হা-অন্ন কোথা অন্ন রব চারিদিকে। একমুঠো অন্নের খোঁজে মানুষ ছুটছে দিকবিদিক। কেউ যায় দক্ষিণে তো কেউ পুবে, কেউ উত্তরে তো কেউ পশ্চিমে। এইভাবে ছুটতে ছুটতে তাদের একটা দল পৌঁছল এই বাদার দেশে। তাদের কী দশা গো! হাড় জিরজিরে চেহারা। না খেয়ে খেয়ে পেট-পিঠ সমান হয়ে গেছে। হাঁটতে গেলে টাল খায়। হাঁস-ফাঁস শ্বাস ছাড়ে ঘনঘন। তবু স্বপ্ন তাদের চোখে। বুকে আশা আর কানে ভরসার মন্ত্র— জঙ্গল হাসিল করো। জঙ্গল হাসিল হলে জমিন পাবে, জমিন পেলে চাষ হবে, চাষ হলে ফসল ফলবে, ফসল ফললে ভাত পাবে। পেট ভরা ভাত। আর ভাত পেলে সুখ পাবে। বাঁচার সুখ। বাঁচে কীসে? খেয়ে-পরে, হেসে-খেলে, বে- শাদি করে, ছানাপোনার মুখ দেখে, সংসার ধরমের মধ্যে। এসব সুখের কথা। সুখ বাবা এমন, ওতে নেশা ধরে। হাড়িয়া-পচুই-এর নেশা তখন কোথায় লাগে! এ বাবা তার থেকেও চটকদার নেশা। আর সেই নেশার হাত-হাতিয়ার সব তৈরি। বাদায় চলো, জঙ্গল হাসিল করো, কুড়াল মারো, কোদা...

চেতনার পথ জুড়ে শুয়ে আছে ।। (পরিবেশ সম্পর্কিত আক্রমণ-হত্যা: ইতিহাস-বর্তমান)।। অনির্বাণ সিসিফাস ভট্টাচার্য।। সুপ্রকাশ।।

Image
পরিবেশ-আন্দোলন, সমস্যার ইতিহাস লেখা আছে। পরিবেশকর্মীদের ওপর নৃশংসতার ইতিহাস লেখা নেই। অন্তত বাংলা ভাষায়, ছাপার অক্ষরে নেই। আক্রমণ ও হত্যার মাঝে কিছু অনিশ্চয়তার মেঘ। টিকে থাকা আর না-থাকার মাঝে কেটে রাখা মেহগনি-রেডউড, অবিশ্বাসী আকাশে কয়লার ধোঁয়া, বালি-উত্তোলনে হা হা নদীর স্বর, লোপাট দিস্তে দিস্তে গাছ, মানুষ, চারপেয়ে বেবাক জীবন। তখন চেনা 'দেশ' পাল্টে হয়ে যায় 'ক্ষমতা', ক্ষমতা হয়ে যায় বহুজাতিক। ............................................ চেতনার পথ জুড়ে শুয়ে আছে (পরিবেশ সম্পর্কিত আক্রমণ-হত্যা: ইতিহাস-বর্তমান) অনির্বাণ সিসিফাস ভট্টাচার্য প্রচ্ছদের ছবি : অনির্বাণ সিসিফাস ভট্টাচার্য প্রচ্ছদ রূপায়ণ : সৌজন্য চক্রবর্তী সুপ্রকাশ প্রকাশিতব্য আসছে কলকাতা বইমেলায়।

স্মৃতিভারে পড়ে আছি।। সন্ধ্যা রায় সেনগুপ্ত।। সুপ্রকাশ।।

Image
পূর্ব পাকিস্তানের এক তরুণী আর সেখান থেকে  এপারে চলে আসা তার সহপাঠী বন্ধুর পরস্পরকে লেখা চিঠি এক সময় সারি বেঁধে সীমানার এপার ওপার করছিল। তারপর শুঁয়োপোকা প্রজাপতি হলো, পূর্ব পাকিস্তান বাংলাদেশ হলো আর সেই চিঠিদের ভাষা থেকে বন্ধুতার খুনসুটি উবে গিয়ে তা অনুরাগের গাঢ় ছোপে রঞ্জিত হলো। ওপার থেকে এপারে এসে তরুণী ঘর বাঁধল সেই তরুণের সঙ্গে। অর্ধ শতক পের হয়ে ফের যখন একলা হলেন সেই একদা-তরুণী, তখন সেই তরুণ বেলার চিঠির ঝাঁক হারিয়ে গেছে ব্যস্ত সংসারের গলিঘুঁজিতে। তিনি শেষবারের মতো চিঠি লিখতে বসলেন অন্য ভুবনে চলে যাওয়া তাঁর জীবনসঙ্গীকে। তাঁর কলমের কালিতে এখন বিগত সময়ের নির্যাস। তিনি জানেন পাশের শয্যা থেকে উঠে গেলেও তাঁর সঙ্গীর পরিত্রাণ নেই অগণিত পাঠকের বিষাদবৃক্ষ থেকে; তাদের সিদ্ধিগঞ্জের মোকামেই যে তিনি লিখে গেছেন তাঁর শেষ ঠিকানা।  এই গ্রন্থ প্রয়াত মিহির সেনগুপ্তকে লেখা, সন্ধ্যা রায় সেনগুপ্তের শেষ চিঠি যা তিনি তুলে দিতে চান মিহিরের মোকামের সব পাঠকের হাতে।   এই গ্রন্থে কেবলই দুটি হৃদয়ের কথা নেই, আছে সীমান্তপারের এক উপপ্লবের কথা, আছে এক অস্থির ও নিষ্ঠুর সময়ের বৃত্তান্ত; আর আছে এক দেশান...