দেয়ালের লেখা : এক অন্তহীন প্রকীর্ণ শিল্পকথা।। অনন্ত জানা।। সুপ্রকাশ
"ছোটোবেলা থেকে কাগজ হাতে পেলেই পেন, পেন্সিল হাতের কাছে যা পাওয়া যেতো তাই নিয়েই অক্ষর ডিজাইনের খেলা করা ছিল সুমনের স্বভাব। বিশেষভাবে স্কুলে স্যারেদের অসার সময়নিধনের কালে অঙ্ক খাতার পাতায়, দিদিদের দেওয়া বইয়ের মলাটে অবাধে চলত অক্ষরচর্চা! সব ছেলেই পেন বা ছুরি দিয়ে ক্লাশের বেঞ্চে নিজের নাম ফাঁকাতো, বেড়াতে গেলে গাছের গায়ে নিজের ও পাত্তা না-পাওয়া মেয়েটির নাম লিখত কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বী ছেলেটির সঙ্গে যোগচিহ্ন দিয়ে কুরূপা কোনো কাল্পনিক মেয়ের নাম। সেটা ছিল সেকালের মধ্যবিত্তের ভীরু কুৎসা-কালচারের একটা সস্তা ছুঁচোমি। কিন্তু নিজের নাম সুমন খুব বেশিবার আর্ট করে লিখতে, কোনো সৌধের গায়ে কিছু লিখে দেয়াল নোংরা করতে চিরকালই তাঁর রুচিতে বাধত। এখন প্রায় পেশাদারি লিখনচর্চার প্রয়োজনের সময় তাঁর সেইসব আঁকিবুকি-কাটা কাগজগুলোর কথা মনে পড়ল। সেখানে অনেক অভিনব অক্ষরলিপির মক়়শো-করার নিদর্শন ছিল!
গোপাল বাড়ুজ্যের দোকানে বসে, রাতে ঘরে বসে সুমন আবার কাগজ নিয়ে ইচ্ছামতো অক্ষর ডিজাইন করতে শুরু করলেন। এমন-কী সাম্প্রতিককালে ছাপা পুরোনো মাপের বর্ণপরিচয় কিনে টাইপের ধাঁচ বোঝার চেষ্টা করলেন। বিভিন্ন খবরের কাগজের, পত্র-পত্রিকায় ব্যবহৃত হরফের চেহারা লক্ষ্য করলেন। তাঁর করা ডিজাইনে কলকাতার সাইনবোর্ডে দেখা বিচিত্র হরফরাজির প্রভাব অনুভব করে সুমন নিজের প্রতিই বিরক্তি বোধ করলেন।
ভিন্নতর শিল্প অক্ষর ব্যবহারে বৈচিত্র্যের জোয়ার দেখা গেল ক্রমবর্ধমান কাজের চাপ সামলানোর জন্য সুমনের দুটি সহকারী জুটে যাবার পর।
শিবেশ আর যতীশ।
এরা ভালো অক্ষরশিল্পী, ভোটের সময় বা জনগণকে সভা-সমাবেশ, আন্দোলনের খবর দিতে মাটির হাঁড়িতে গুঁড়ো শিরীষের আঠা দিয়ে ব্লু, এলা মাটি, কিংবা ইদানিংকালে ফ্লুরোসেন্ট রঙ গুলে দেয়াল লিখে এসেছে। ভোটের সময় দেয়াল লেখায় এই দু-জনকে সদর কিংবা বড়ো বা মেজো মহকুমায় পর্যন্ত হায়ার করে নিয়ে যায়।"
......................................................
আসছে...
কলকাতা বইমেলা অথবা বইমেলার আগেই...
দেয়ালের লেখা : এক অন্তহীন প্রকীর্ণ শিল্পকথা
অনন্ত জানা
প্রচ্ছদ : সৌজন্য চক্রবর্তী
সুপ্রকাশ
Comments
Post a Comment