নগরীতে প্রবেশের পর হতেই নগরীর প্রধান মাগগটি নজরে আসছে। তার দুইপাশে তরুশ্রেণী। গগনমার্গে তরুশীর্ষগুলি দুইপাশ হতে পরস্পর লগ্ন হয়ে ছত্তক-ব্যূহ রচনা করেছে। মহামাগগ বা প্রধান সড়কটি প্রস্তরফলক দ্বারা আবৃত। ভিক্ষুদল মহামাগগ ধরে অগ্রসর হলেন। আশ্চর্য! কোনো নগরজন দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না। প্রভাতকাল। মাগগপার্শ্বে সম্পদশালীজনেদের গৃহউদ্যান। সুপ্রশস্ত এই উদ্যানকে গৃহবনানীই বলা যায়। প্রথমে সুদৃশ্য পুষ্পবীথিকা, তার পর শ্রেণীবদ্ধ বিবিধ ফলতরু। সেই তরুশাখার মধ্যে দিয়ে প্রস্তর ও ইষ্টকনির্মিত গৃহগুলি দৃশ্যমান। অধিকাংশই প্রাসাদাকার, অলঙ্কৃত। সর্বাগ্রে নজরে আসে গৃহদ্বারের শীর্ষদেশের বিচিত্র ফুলকারী নকশার অলংকরণ এবং গেহদ্বারে দারুতক্ষণের কাজ। বহির্দ্ধারের স্তম্ভগুলিও ফুলকারি নকশায় সজ্জিত। গবাক্ষ ও বাতায়নের সারি। এই প্রভাতে সেসবই বন্ধ। এতটা প্রভাত তো নয়। বালার্ক দেখা দিয়েছে অনেকক্ষণ! প্রভাত বলেই কি কোথাও কোনো মানুষজন দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না? এই নিজন নীরবতা তো হিরন্ময় নয়! ইতোমধ্যেই ভিক্ষুরা একটিমাত্র বস্ত্রখণ্ডে গ্রন্থি দিয়ে প্রস্তুত তাঁদের 'স্কন্ধ-পসিব্বক' থেকে 'ভিক্ষাভাজন' বের করে দক্ষিণহস্তে তা ধারণ ...
লেটারপ্রেসের এই অনিবার্য পরাজয় কিংবা নতুন প্রযুক্তির এই জয়—এবং নতুন ক্ষেত্রিয়-পুঁজির এই আস্ফালন কোনো অদূর ভবিষ্যতে মানব-অধ্যুষিত সভ্যতার পরাজয় বলে গণ্য হবে কিনা, এই দ্রুত পরিবর্তন ভালো কি মন্দ, উচিত কি অনুচিত—ভারত তথা প্রাচ্যের ঘাতসহ ঐতিহ্যের সঙ্গে একঝোঁকা, বেতালা এই পরিবর্তন আদৌ মানানসই কিনা—তা ভাববার জন্য বিশেষজ্ঞের মতামত দেওয়ার লোকের অভাব তো নেই। কিন্তু নতুন প্রযুক্তি, অনাবশ্যক দ্রুতির সঙ্গে শুধুমাত্র 'পুঞ্জি আর প্রবঞ্চনা'র জন্য বাহ্যত অকারণে প্রযুক্তির নিত্যি হাল-হকিকৎ বদলে ফেলায় যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন, তাঁদের নিয়ে বলবার লোক কমে যাওয়াটাই সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের। আন্দোলনের অভিজ্ঞতা থেকে এটা বুঝতে পেরেই দুঃখ ঝেড়ে ফেলতে পেরেছিল ছোড়দি। স্ক্রিন-প্রিন্টিংয়ের মতো ডেস্কটপও শিখে নিয়েছিল ছোড়দি। শুধু একটাই আক্ষেপ ছিল তার—সুবলবাবু, অমর প্রধান, বিমলবাবু, পঞ্চাদা, ভূপালবাবুরা বোধহয় চিরতরে হারিয়ে গেলেন। হারিয়ে গেল প্রেস থেকে প্রেসে সকাল-সন্ধ্যায় কত কবি-শিল্পী-সাহিত্যিকদের সমাবেশ, পত্র-পত্রিকা-বই-ঘোষণাপত্র প্রকাশ করার চেষ্টায় সংশ্লিষ্টজনেদের অন্তহীন শ্রমের, আকুতির উষ্ণ-কম্পনের দিনলিপি। হারিয়ে গ...
সুপ্রকাশ প্রকাশিত জয়া মিত্রের উপন্যাস 'রাস্তার শুরু' পড়ে লিখেছেন সই সঙ্গীতা দাশগুপ্ত রায়। আমরা তাঁর অনুমতি নিয়ে নিজেদের টাইমলাইন থেকে শেয়ার করছি। ....................... পড়ছিলাম ছেড়ে আসার গল্প। এ বই আমি আগেও বেশ কয়েকবার পড়েছি। মৃত্যুর কারণে যেতে দেওয়া যাওয়া অথবা স্থানপরিবর্তনের কারণে ঠাঁইনাড়া হওয়া দুইয়েরই অভিজ্ঞতা আমাদের বয়সে এসে সকলেরই থাকে। তবে তার মধ্যে বোধহয় সবচেয়ে বেশি ভাবায় শিশু-কিশোরবেলায় মুখোমুখি হওয়া বিচ্ছেদের স্মৃতি। "খুব বর্ষার দিনে ঐ দেওয়ালের গা খুব স্যাঁতসেতে, কখনো কখনো একটু জল গড়িয়ে পড়ে। পাহাড়ের নিজের জল, তাদের বাড়ির মধ্যে। সে জন্যেই বাথরুমটা বেশ রহস্যের। মানে, দেখা যায় কিন্তু সবটা বোঝা যায় না— তাকেই তো রহস্য বলে" —এইখানে এসে ভাবি সত্যিই তো, এত বছর ধরে কত রহস্যই দেখলাম, চিনলাম কত রহস্যময় মানুষকেও। দেখা এবং সবটা না বোঝার এই অঙ্কটা কী সহজ করে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। "ওপরে একটা বড় গাছ আছে - মালবেরি গাছ। ওপরের ঠাকুমারা বলে তুঁত। একদিন রাঙাপিসি একটা কাচের প্লেটে বসিয়ে কয়েকটা কলা তার হাতে দিয়ে বলেছিল ওপরে দিয়ে আসতে। সে যাচ্ছিল ঠিকই, কিন্তু হঠাৎ দে...
Comments
Post a Comment